অ্যামেরিকাভারত

আমেরিকার যুদ্ধবিমান হাতে থাকা সত্ত্বেও পাকিস্তানের বিরুদ্ধে ব্যবহার করতে দেওয়া হয়নি ভারতকে। কেন করেছিল আমেরিকা?

নিউজ ডেস্কঃ দেশ স্বাধিনের পর রাশিয়া এবং আমেরিকার যৌথ চক্রান্তের স্বীকার হয়েছে ভারতবর্ষ একাধিকবার। আর সেই কারনে যথেষ্ট ক্ষতিগ্রস্ত হতে হয়েছে দেশের সেনাবাহিনীকে।

১৯৪৭ সালের এর দিকে অর্থাৎ দেশ স্বাধিনের সময় উপমহাদেশের ৫০০ টি প্রদেশের রাজাদের নিয়ে একধিক সিধান্ত এবং নতুন নিয়ম তৈরি করা হচ্ছিল। আর তার মধ্যে একটি বড় ব্যাপার ছিল এই যে এই রাজাদেরকে ভারত অথবা পাকিস্তান যেকোন একটি দিকে যোগ দিতে হত। সবাই যেকোন একদিকে যোগ দিতে শুরু করে তবে বাকি ছিল শুধু মাত্র কাশ্মীরের রাজা হরি সিং। এবং তিনি কোন তরফে যোগ না দিয়ে তার ইচ্ছা হয়েছিল কোনতরফে যোগ না দিয়ে একটি স্বাধীন দেশ তৈরি করা। আর তার এই সিদ্ধান্তের সুযোগ নিয়ে হঠাৎ পাকিস্তান কাশ্মীরে অ্যাটাক করে বসে।

আর এরপরেই হরি সিং ভারতবর্ষের সাথে যোগ দেয়। আর এর পরই শুরু হয় কাশ্মীর নিয়ে ভারত-পাকিস্তান যুদ্ধ ১৯৪৭-৪৮ এ। যুদ্ধের সময় একাধিক স্ট্রাটেজি নিতে হয়েছিল ভারতের সেনাবাহিনীকে। আর তাই ভারত ঠিক করে পাকিস্তানি সেনাবাহিনীর স্থান বুঝে বোম্বিং করা। তবে সেই সময় ভারতীয় বায়ুসেনার কাছে কোন বড় মাপের বোম্বার ছিলনা। আর সেই সময় ভারতকে নতুন ধরনের বোম্বার অফার করেছিল আমেরিকা।

আমেরিকা তাদের ২০+ B-25 মিডিয়াম বোম্বার অফার করে। তবে সদ্য স্বাধীন হওয়া দেশ ভারতবর্ষের এত পরিমান বাজেট ছিলনা। আর সেই কারনে এই কারনে এই যুদ্ধবিমান গুলিকে ক্রয় করে উঠতে পারনি। তবে যুদ্ধ জেতার জন্য বোম্বার আবশ্যিক হয়ে পরে। আর সেই সময় বায়ুসেনার অফিসার দের মাথায় এল B-24 এর কথা।

এই B-24 লিবারেটর আমেরিকার তৈরি একটি হেভি বোম্বর ছিল। দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের সময় কিছু B-24 ভারতে রাখা ছিল। তবে এগুলির মালিক ছিল আমেরিকা, ব্রিটিশ রয়্যাল এয়ারফোর্স ও রয়েল কানাডিয়ান এয়ারফোর্স।

আসলে ১৯৪৪-৪৫ এর দিকে ভারতীয় পাইলটরা এবং আমেরিকার এই হেভি বোম্বারগুলো মায়ানমারে জাপানী বেসে আক্রমন করত। আর এই যুদ্ধবিমানগুলিকে দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধ শেষ হওয়ার পর এবং ভারতবর্ষ স্বাধীন হওয়ার পর আমেরিকা এই বিমানগুলো আর নিয়ে যায় নি, আর সেই কারনে ভারতেই রাখাছিল যুদ্ধবিমান গুলি। তবে তাদের বাজে মানুষিকতার পরিচয় তারা দিয়ে গেছে। আর সত্যি বলতে কি আমেরিকা এবং ইংল্যান্ডের থেকে ভালো কিছু আশা করাটা যে কতোটা বিপদজনক টা ইতিহাস ঘাঁটলেই জানা যাবে। তারা গোটা অবস্থায় কোন যুদ্ধবিমানকে রেখে যায় নি। বিশ্বযুদ্ধের পর ব্রিটিশরা বোম্বার গুলিকে ভেঙে দিয়েছিলেন যাতে এগুলি ভবিষ্যতে কেউ ব্যবহার করতে পারে।

আর এই বিমানগুলি ভাঙা অবস্থায় কানপুরের চাকেরি এয়ারফিল্ডে পড়ে ছিল। আর এই বিমান গুলিকে পুনরায় তৈরি করার দায়িত্ব দেওয়া হয়েছিল HAL কে। কিন্তু বেঙ্গালুরু তে হ্যাল এর তত্ত্বাবধানে বিমান গুলিকে আনা সম্ভব ছিলনা। বিমানগুলো এত বড় মাপের ছিল যে তা রেল বা রোডে নিয়ে আসা যেতনা।

একমাত্র আকাশ পথই ছিল। আর সেই কারনে হ্যাল এর কিছু অফিসার কানপুরে গিয়ে বিমান গুলিকে একবার যাতে উড্ডয়ন করতে পারে সেই অবস্থায় নিয়ে আসে। বিমান গুলি অন্তত ১৫০০ কিমি পথ যাতে পারি দিতে পারে। মোট ৪২ টি লিবারেটর নিয়ে গঠিত হয়েছিল ৫, ৬ ও ১৬ নং স্কোয়াড্রন।

মোট ৪২ টি B-24 ভারতীয় বায়ুসেনার কাছে ছিল। পরে ৮ টি যুদ্ধবিমান কে আপগ্রেড করে মেরিটাইম পেট্রোলের জন্য Asv-15 রেডার, সোনোবায়াস ইনস্টল করা হয়।

Leave a Reply

Your email address will not be published.