ও অন্যান্য দেশ সমুহ থেকে আমদানি করা হতো। তবে সম্প্রতি প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর “মেক ইন ইন্ডিয়া” স্লোগানকে মাথায় রেখে দেশেই আরো বেশি করে সামরিক অস্ত্র তৈরির ওপর জোর দেওয়া হয়েছে। দেশীয় পদ্ধতিতে তৈরি অস্ত্রের এই তালিকাতে নতুন সংযোজন হলো ৯ এমএম মেশিন পিস্তল। এই মেশিন পিস্তলের হাত ধরে প্রতিরক্ষার ক্ষেত্রে আত্মনির্ভরতার পথে বেশ খানিকটা এগিয়ে গেলো ভারত।
ডিআরডিওর পক্ষ থেকে প্রকাশ করে প্রেস বিবৃতিতে জানানো হয়েছিল ভারতীয় প্রতিরক্ষা গবেষণা সংস্থা ও ভারতীয় সেনার যৌথ উদ্যোগে প্রস্তুত এই পিস্তলটি শুধু ভারতীয় সেনাই নয়, আইটিবিপি, এসএসবি সহ সিআরপিএফ, বিএসএফ জওয়ানরাও ব্যবহার করতে পারবেন। এছাড়া ট্যুইটারে মেশিন পিস্তলটি সম্পর্কে বিষদে আরও বেশ কিছু তথ্য প্রকাশ করেছে ডিআরডিও।
প্রকাশিত তথ্য অনুযায়ী, ৯ এমএম পিস্তল তৈরিতে ব্যবহার করা হয়েছে অত্যন্ত উচ্চমানের অ্যালুমিনিয়াম, যা সাধারত বিমান তৈরির কাজে ব্যবহৃত হয়। শুধু ভারতীয় সেনার বলবর্ধন ই নয় বিদেশেও রপ্তানি করা হবে এই পিস্তল। এক একটি ৯ এম এম পিস্তলের দাম প্রায় ৫০ হাজার টাকা পর্যন্ত পড়তে পারে বলে জানানো হয়েছে। উচ্চমানের এই পিস্তলের ওজন যেমন হবে বেশ হালকা তেমনই এর নিশানা ও হবে অব্যর্থ।
ডিআরডিও তাদের বিবৃতিতে জানিয়েছে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর আত্মনির্ভর ভারত প্রকল্পে গতি আনতেই নেওয়া হয়েছে এই পদক্ষেপ। আপাত ক্ষুদ্র পদক্ষেপ হলেও অদূর ভবিষ্যতে এই মেশিন পিস্তলটিই ভারতীয় সেনা বাহিনীর কাছে অত্যন্ত কার্যকর হয়ে উঠবে বলেই মনে করা হচ্ছে। এক্ষেত্রে উল্লেখ্য বিশ্বের দ্বিতীয় সর্ববৃহৎ সেনাবাহিনী থাকা সত্বেও অস্ত্র আমদানিতে বিশ্বে দ্বিতীয় স্থানে রয়েছে ভারত। অপরদিকে আমদানির তুলনায় অস্ত্র রফতানিতে বেশ কিছুটা পিছিয়ে ২৩ নম্বর স্থানে রয়েছে ভারত।
আমদানি ও রফতানির এই অসাম্য কমিয়ে আনতে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী আগামী পাঁচ বছরে বিদেশে প্রতিরক্ষা সরঞ্জাম রফতানির হার বৃদ্ধি করে বার্ষিক ৫ বিলিয়ন ডলার আয়ের লক্ষ্যমাত্রা রেখেছেন। আশা করা হচ্ছে ভারত ২০২৫ সালের মধ্যে ১.৭৫ লক্ষ কোটি টাকার প্রতিরক্ষা সরঞ্জাম বন্ধু দেশগুলিতে রফতানি করতে সক্ষম হবে।
পূর্বে প্রতিরক্ষা মন্ত্রী রাজনাথ সিং জানিয়েছিলেন ২০১৫ থেকে ২০২০-র মধ্যে ভারতীয় বাহিনীর ব্যবহারের জন্য বিদেশ থেকে অন্তত সাড়ে ৩ লক্ষ টাকার অস্ত্র ও সরঞ্জাম আমদানি করা হয়েছিল। আশা করা হচ্ছে এবার চিত্রটা কিছু হলেও পাল্টাবে। দাবি করা হচ্ছে নতুন এই সিদ্ধান্তের পর আগামী ৬-৭ বছর ভারতীয় সংস্থাগুলি প্রতিরক্ষা সরঞ্জাম তৈরির জন্য অন্তত ৪ লক্ষ টাকার বরাত পাবে। আর্টিলারি গান, কমব্যাট হেলিকপ্টার, অ্যাসল্ট রাইফেল, কভার্ট, রাডার, সশস্ত্র গাড়ি, ট্রান্সপোর্ট এয়ারক্রাফট সহ একাধিক উচ্চপ্রযুক্তিসম্পন্ন অস্ত্র এবার থেকে তৈরি হবে ভারতেই। ভারতের নিজস্ব প্রযুক্তি কাজে লাগিয়ে অধিকাংশ প্রতিরক্ষা সরঞ্জাম দেশের মাটিতেই তৈরি করা গেলে বার্ষিক খরচ তো কমে আসবে অনেকটাই তার সাথে থাকবে অফুরন্ত লাভের সম্ভাবনা ও।