দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের সমাপ্তিতেও কেন একাধিক সমস্যা সম্মুখীন হতে হয়েছিল ভিয়েতনাম, ইরাক ও আফগানিস্তানের?
যুদ্ধ মানেই ধ্বংসস্তুপের খেলা। তবে ইতিহাসে সবচেয়ে ভয়ংকর যুদ্ধ হিসেবে আজও পর্যন্ত জায়গা দখল করে নিয়েছে প্রথম এবং দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধ। বিশ্বযুদ্ধের ধ্বংস লিলার পরেও কিছু দেশ নিজেদের অস্তিত্ব কায়েম করতে পারলেও কিছু দেশ ব্যর্থ হয়েছে। যুদ্ধের পর গোড়া থেকে যেসব দেশ নিজেদের ভালো করে গড়ে তুলতে পারেনি তারা হলো ইরাক, ভিয়েতনাম ও আফগানিস্তান। এর পেছনে একটাই কারণ হলো যে দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের পরেও এই দেশগুলিতে অভ্যন্তরীণ কিছু দ্বন্দ্বের কারণে তারা আর্থিক দিক থেকে ও গণতান্ত্রিক দিক থেকে গড়ে উঠতে ব্যর্থ হয়েছে। এই দুটি দেশের বর্তমান অবস্থা কি সেটা একটু বিস্তারিত ভাবেই বলা যায়।
*ইরাক :- এই দেশের অভ্যন্তরীণ কিছু গোষ্ঠীদ্বন্দ্বের কারণে এর গণতন্ত্র ঠিক ভাবেই তৈরি হতে পারেনি। দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধ শেষে ইরাকের মোট জনগোষ্ঠীর মধ্যে ছিল ৬০ শতাংশ শিয়া ও ৪০ শতাংশ সুন্নি সম্প্রদায়ের লোকেরা। মূলত এই দুটি গোষ্টীর মধ্যে ছিল সাপে-নেউলের সম্পর্ক। সেই সময় সাদ্দাম হোসেনের শাসনাধিনে ছিল সুন্নি আবর।তার শাসন চলাকালীনই শিয়ারা আরবরা সুন্নি আরবদের দ্বারা বিভিন্নভাবে নির্যাতিত হতো।কিন্তু ২০০৪ সালে যখন আমেরিকা সাদ্দামকে সরিয়ে দিয়ে ডেমক্রেসি চালু করে তখন সংখ্যা গরিষ্ঠতার জোর দেখিয়ে শিয়ারা ক্ষমতায় আসে যা সুন্নি আরবদের জন্য দূর্ভাগ্য নিয়ে আসে।তখন সুন্নি আরবরা শিয়া আরবদের দ্বারা নির্যাতিত হতে থাকে।এই অবস্থার থেকে উত্তরনের জন্য কাতার,তুরস্ক কিছু সুন্নীদেশ সুন্নী আরবদের অর্থনৈতিক ও সামরিক সহায়তা দিয়ে গেরিলা সংগঠন গড়ে তোলে।সাদ্দাম হোসেনের মিলিটারির অফিসাররা ফেনাটিকদের সঙ্গে নিয়ে গড়ে তোলে আইএস-আইএস,যারা ইরাকের শিয়াদের বিরুদ্ধে যুদ্ধ করে।এভাবে শিয়া ও সুন্নি সংঘাতের কারনে ইরাকের গনতন্ত্র সঠিকভাবে নির্মাণ হতে পারেনি।
*আফগানিস্তান :- অন্যদিকে আফগানিস্তানেও প্রায় একই চিত্র দেখা যায়। ইরাকের মতো আফগানিস্তানের উপর আমেরিকা হামলা করায় এর গণতন্ত্রের বিকাশ ঘটতে পারেনি। ৯/১১ এর পর আমেরিকা হামলা করলে প্রাথমিকভাবে তালিবান ভেঙ্গে পড়লেও পরবর্তীতে তারা পাকিস্তানের সহায়তায় পুনরায় পাকিস্তানে এসে সুসজ্জিত হয়ে দীর্ঘদিন গেরিলা যুদ্ধ চালিয়েছিল। কিন্তু আফগানিস্তানে গনতান্ত্রিকভাবে নির্বাচিত হওয়া গর্ভমেন্টগুলোই করাপ্ট হওয়ার কারনে আফগানিস্তানেও গনতন্ত্র খর্ব রয়ে গিয়েছে।
উল্লেখ্য, ইরাক ও আফগানিস্তান উভয় দেশের অবস্থা দেখলে একই রকম মনে হবে । কারণ শত শতবছর অটোক্রেটদের দ্বারা শাসিত হয়ে এসেছে এই দুটি দেশ। এখানে হুট করে Angelo Saxon সভ্যতার মূল্যবোধ ও শাসনব্যবস্থা সফল হবে না। আমেরিকা ইরাক ও আফগানিস্তানে ব্লানডার করার পরও বিশেষ কিছু শিখতে পারেনি। মার্কিন প্রশাসনকে আমেরিকাতে থাকা মুসলিম ব্রডারহুড লবি এবং অন্ধ লেফট্ লিবারেল লবি ম্যানিপুলেট করছে এই ব্যাপারে। কিন্তু তারা এর ফলাফল সম্পর্কে আন্দাজ করতে পারছে না।