ভারত

আমেরিকা, রাশিয়া ও চীনের মতো ভারতবর্ষের বিমানবাহিনীর বোম্বারের দরকার?

নিউজ ডেস্কঃ ভারতবর্ষের সেনাবাহিনীতে কি বোম্বার প্রয়োজন? এই নিয়ে অনেকের অনেক মত আছে। তবে জানা দরকার যে বোম্বার কেন আর কারা ব্যবহার করে?স্ট্রেটেজিক লং রেঞ্জ বোম্বার ব্যবহার করে তিনটি দেশ। আমেরিকা, রাশিয়া ও চীন।

আমেরিকার শত্রু চীন ও রাশিয়া। অন্য দিকে চীন রাশিয়ার শত্রু আমেরিকা তথা পশ্চিমী বিশ্ব। এই সব শত্রু দেশ গুলির সাথে ভারতের শত্রু দেশ গুলির আকাশ পাতাল তফাত। ভারতের দুটি শত্রু তাদের প্রতিবেশী দেশ গুলি। অন্যদিকের আমেরিকা আর রুশ/চীনের মধ্যে রয়েছে প্যসিফিক ওশান।

আর এখানেই কারনটা লুকিয়ে কেন আমাদের জন্য স্ট্রেটেজিক বোম্বার একটা স্ট্রেটেজিক ব্লান্ডার। প্রথমত যুদ্ধের পরিস্থিতিতে স্ট্রেটেজিক বোম্বার সম্পত্তির পাশাপাশি বোঝাও বটে। একটি স্ট্রেটেজিক বোম্বার যখন আপনি চীনের মত দেশের বিরুদ্ধে কাজে লাগাবেন তখন তাকে এস্কর্ট করার জন্য যুদ্ধবিমান পাঠাতে হবে।

চীনের কাছে এখন এয়ার ডিফেন্স হিসাবে রয়েছে S-300, S-400, HQ-09, HQ-16 ইত্যাদি। আর এগুলি পুরোপুরি একটির সাথে অপরের ডাটা লিংক করা। অর্থাৎ নেটওয়ার্ক সেন্ট্রিক সিস্টেম। যার মাধ্যমে চীন একটি পূর্ন “ইন্টিগ্রেটেড এয়ার ডিফেন্স” পেয়েছে। এস্কর্ট বিমান দিয়ে নিজের হাতে থাকা বোম্বারকে হয়তো চীনের এয়ারক্রাফটের হাত থেকে বাঁচালেন। কিন্তু স্যাম সিস্টেম? তার কি হবে। আর এটা জোড় দিয়ে বলা সম্ভব নয় যে চীনের এয়ারক্রাফট কে শুধু এস্কর্ট ফ্লিটকে আটকানো সম্ভব। বুঝুন ভালো করে, একটি বোম্বার যখন চীনে বোম্বিং করতে যাচ্ছে তখন বোম্বার, এস্কর্ট ফ্লিট, আর প্রতিটি ফাইটারে থাকা পাইলট সবাইকে মারাত্মক রিস্কের মধ্যে দিয়ে যেতে হবে। তাহলে এত বিলিয়ন ডলার ইনভেস্ট করার লাভ কি।

এখানেও প্রশ্ন রয়েছে। প্রথমত আমেরিকা ও চীন/রাশিয়ার উদাহরন কেন টানা হল আর বোম্বারের যে রোল তা কি কোনো অন্য উপায়ে পূরন করা সম্ভব?

দুটোর উত্তর একে অপরের সঙ্গে অতঃপ্রত ভাবে জড়িত। ভারতের প্রতিবেশী চীন ও পাকিস্তানের বিরুদ্ধে বোম্বারের কাজ করার জন্য অনেক সহজ উপায় হল লং রেঞ্জ ক্রুজ মিসাইল। বোম্বার ব্যবহার করা হয়ে থাকে অনেক দূরত্বে বোম্বিং করার জন্য। ক্রুজ মিসাইলতো সেই একই কাজ করে। উল্টে আরও নিখুত ভাবে।

ক্রুজ মিসাইল সিস্টেম আনম্যনেড অর্থাৎ এটি যেমন পাইলটের জীবনের রিস্ক থাকে না। তেমন অত্যন্ত খরচ সাপেক্ষ। একটি বোম্বারের মেইন্টেন্যন্স খরচ প্রচুর। তার জ্বালানী, বেস, ম্যন পাওয়ার ইত্যাদিতে বিলিয়ন বিলিয়ন ডলার খরচ হয়। সেখানে ক্রুজ মিসাইল একবার ম্যনুফ্যকচার করে ফেললে তা ডেপ্লয় করুন। তারপরে সেইরকম চিন্তার আর কোনও কারন নেই।

ক্রুজ মিসাইলের রেঞ্জ এখন ৩,০০০-৪৫০০কিমি প্রর্যন্ত হতে পারে। আর এর ম্যনুফ্যকচারিং খরচও কম। তাই এটির স্ট্রেটেজিক ভ্যলু অনেক বেশি। অন্যদিকে আমেরিকা ও চীনের পক্ষে দূরত্বের জন্য এত লং রেঞ্জ মিসাইল কাজে লাগানো সম্ভব নয়। তাই তাদের বোম্বারের মত সাদা হাতি পুষতে হয়।

সোজা কথার লং রেঞ্জ ক্রুজ মিসাইল বোম্বারের সহজ বিকল্প। যা একদিকে যেমন আমাদের পাইলটের জীবনকে শত্রুপক্ষের হাত থেকে বাচায়, তেমন অনেক অনেক কম খরচে কার্য সিদ্ধি করা সম্ভব।

Leave a Reply

Your email address will not be published.