এক হাজার লোক মারতে পুতিনের ছোট্ট এক ট্রিক
নিউজ ডেস্কঃ ১৯৬১ সাল থেকে ১৯৮৯ সাল পর্যন্ত পূর্ব ও পশ্চিম জার্মানির মাঝে বার্লিন ওয়াল ছিল। ১৯৮৯ সালে এই দেওয়াল ভাঙ্গা হয়। সেই সময় জার্মানির লোক রাশিয়ান ইনটেলিজেন্স এজেন্সি কেজিবির উপর ক্ষেপে ছিল, বার্লিন ওয়াল ভাঙ্গার সময় প্রায় এক হাজার লোক কেজিবির অফিস ঘিরে ফেলে বলে ভেতরে যারা আছে তাদের সবাইকে হত্যা করা হবে। ভেতরে তখন পুতিন একা ছিল। পুতিন সোভিয়েত ইউনিয়নের সমস্ত গোপন নথি পুড়িয়ে দিয়ে শান্ত ভাবে বাইরে বেড়িয়ে ভিড়ের সামনে গিয়ে বলে ভেতরে রাশিয়ার বন্দুকধারী কম্যান্ডো আছে যদি কেউ ভেতরে যায় বাঁচবে না। পুতিনের এই একটি ট্রিকে সব ভিড় ফাঁকা হয়ে যায়। ভাবুন আপনি পুতিনের জায়গায় থাকলে কী করতেন? কতটা ঠান্ডা মাথার ভাবুন।
বার্লিন ওয়াল ভেঙে যাবার পর ২ বছরের মধ্যেই সোভিয়েত ইউনিয়ন ভেঙে গিয়ে ১৫ টি দেশ তৈরি হয়:– রাশিয়া, ইউক্রেন, বেলারুশ, আজারবাইজান, আর্মেনিয়া, জর্জিয়া, কিরঘিসস্তান, মলডোবা, তাজাখিস্তান, তুর্কমিনিস্তান, উজবেকিস্তান, এস্তোনিয়া, লাটাভিয়া, লিথুয়ানিয়া কাজখিস্তান। এই সমস্ত দেশের মানুষরা বিদ্রোহ শুরু করে তাদের দাবি ছিল তাদের সমস্ত টাকা মিলিটারির খাতে ব্যায় করা হয় এবং সোভিয়েত ইউনিয়নের সমস্ত সুবিধা রাশিয়া একা ভোগ করে বাকী ১৪ টি দেশ তেমন সুবিধা পায় না। ১৯৯১ সালে সোভিয়েত ইউনিয়নের শেষ প্রেসিডেন্ট মিখাইল গোর্বাচেভ সোভিয়েত ইউনিয়ন ভেঙে দিয়ে ১৫ টি দেশ তৈরি করে। এই ঘটনা ভ্লাদিমির পুতিনের মনে তীব্র প্রভাব ফেলে। তিনি পূর্ব জার্মানি থেকে সেন্ট পিটাসবারগে চলে আসেন। কিন্ত মনে মনে তিনি সিদ্ধান্ত নিয়েছিলেন সেই পুরোনো সোভিয়েত ইউনিয়নের মতন বিশাল সাম্রাজ্য তৈরি করার। রাশিয়া তৈরি হওয়ার পর তার প্রেসিডেন্ট হন বরিস ইয়ালসেন, প্রায় অর্ধ পাগল এই ব্যাক্তি রাশিয়ার ইতিহাসে অন্যতম খারাপ প্রেসিডেন্ট ছিলেন।
বরিস ইয়ালসেন যে সময় প্রেসিডেন্ট হন সেসময় রাশিয়ার সাধারণ মানুষ অত্যন্ত গরীর ছিল তার শাসনকালে মাফিয়া রাজ, অপরাধমূলক কাজকর্ম অত্যন্ত বৃদ্ধি পায়। রাশিয়ার সাধারণ মানুষ আরও গরীব হতে শুরু করে। তাই দরকার ছিল বরিস ইয়ালসেনের বিকল্প। ততদিনে ভ্লাদিমির পুতিন ধীরে ধীরে রাজনীতিতে আসতে শুরু করেন। মার্চ, ১৯৯৭ এ প্রেসিডেন্ট এক্সিকিউটিভ অফিসের ডেপুটি চীফ অফ স্টাফ নিযুক্ত হন এবং কন্ট্রোল ডিরেক্টরের প্রধান হন। জুলাই, ১৯৯৮ এ তিনি ফেডারেল সিকিউরিটি সার্ভিসের ডিরেক্টর হন। মার্চ, ১৯৯৯ এ তিনি রাশিয়ান ফেডারেশনের সিকিউরিটি কাউন্সিলের সিকিউরিটি হন। বরিস ইয়ালসেনের উপর ক্রমশ চাপ বাড়ছিল এবং তার বিরুদ্ধে দুর্নীতির অভিযোগ ক্রমশ বাড়তে থাকে যার জন্য বাধ্য হয়ে বরিস ইয়ালসেন ১৯৯৯ সালের আগস্ট মাসে ভ্লাদিমির পুতিন কে প্রধানমন্ত্রী নিয়োগ করেন। কিন্তু সেই বছরই ৩১ ডিসেম্বর রাষ্ট্রপতি বরিস ইয়ালসেন পদত্যাগ করেন তখন ভ্লাদিমির পুতিন রাশিয়ার অ্যাক্টিং প্রেসিডেন্ট হন। অবশেষে ২০০০ সালের ৭ মে ভ্লাদিমির পুতিন রাশিয়ার রাষ্ট্রপতি নির্বাচিত হন।