রাশিয়া

চেচিনিয়ার যুদ্ধে কি পদক্ষেপ নিয়েছিলেন পুতিন? সিক্রেট সার্ভিসের হয়ে কি করেছিলেন?

নিউজ ডেস্কঃ পুতিন ক্ষমতায় এসে একের পর এক পদক্ষেপ গ্রহন করেছেন। বিশেষ করে এমন কিছু পদক্ষেপ তিনি করেছিলেন যার উত্তর এখনও পর্যন্ত খুঁজে পাওয়া যায়নি। 

পুতিন রাষ্ট্রপতি নিয়োগ হবার সময় অনেক মানুষ বিরোধিতা করে। কিন্তু অদ্ভুত ভাবে তাদের সবাইকে হয় জেলে ভরা হয় না হয় তারা উধাও হয়ে যান। এটা শুধু ইঙ্গিত ছিল ভবিষ্যত দিন কেমন হতে চলেছে, পুতিন কেমন ভাবে রাশিয়া শাসন করতে চলেছে? পুতিনের নামে বলা হয় তিনি একজন একনায়ক তন্ত্রে বিশ্বাসী, স্বৈরাচারী শাসক, কিন্তু আজ পর্যন্ত কেউ তা প্রমান করতে পারেন নি। আজ পর্যন্ত বহু মানুষ চেষ্টা করেছিল তার বিরুদ্ধে সমস্ত প্রমাণ জোগাড় করতে কিন্তু তারা কেউই জীবিত থাকে নি। 

পুতিনের জীবনে অন্যতম বড় ঘটনা হল চেচিনিয়ার যুদ্ধ। চেচেনিয়াতে দুটো যুদ্ধ হয়েছিল। প্রথমে চেচেনিয়া সম্পর্কে একটু জানা যাক। চেচেনিয়া নর্থান ককেশাস অঞ্চলে একটা প্রদেশ যারা সবসময় বিদেশী শাসকদের বিরুদ্ধে লড়াই করেছে এমনকী পনেরো শতকে অটোম্যান তুর্কী সাম্রাজ্যের বিরুদ্ধেও। 

১৯৫৭ সালে স্ট্যালিনের মৃত্যুর পর সোভিয়েত ইউনিয়নের প্রেসিডেন্ট হন নিকিতা ক্রুশ্চেভ তিনি চেচেনিয়াদের ১৯৫৮ সালে অনেক স্বাধীনতা দেন। কিন্তু ১৯৯০-৯১ সালে সোভিয়েত ইউনিয়ন ভেঙে যাবার পর অন্যান্য অনেক দেশের মতন চেচেনিয়া ও স্বাধীনতা ঘোষনা করে। সেখানে রীতিমতো গৃহযুদ্ধ শুরু হয়। রাশিয়ার সেনা ১৯৯৪ সালে চেচেনিয়া তে প্রবেশ করে। যাকে চেচেনিয়ার প্রথম যুদ্ধ বলা হয়। উভয়পক্ষের মধ্যে ভয়ানক যুদ্ধ হয় যাতে অন্তত এক লক্ষ মানুষ মারা যায়। অবশেষে ১৯৯৬ সালে খাশিয়াভুরুত চুক্তির মাধ্যমে এই যুদ্ধ শেষ হয় রাশিয়া সেখানে নিজেদের সংবিধান চালু করে। কিন্ত ১৯৯৬ সালের ১৬ নভেম্বর রাশিয়ার রাজধানী মস্কো তে সিরিয়াল বোম্বিং হয়। এরপর রাশিয়া তে মাঝেমাঝেই চেচেনরা আক্রমন করতে থাকে। 

১৯৯৯ সালের ৪ সেপ্টেম্বর মস্কোর একটি বিল্ডিং এ বিস্ফোরণ হয় যাতে প্রায় ৬৮ জন লোক মারা যায়, মোট তিনটি বোম্ব বিস্ফোরণ হয় এবং চার নম্বর বোম্ব ডিফিউজ করে রাশিয়ান সেনা। সবাইকে বলা হয় চেচেনরা এই বোম্ব লাগিয়েছে কিন্তু এই পুরো ব্যাপারটা রাশিয়ান সিক্রেট সার্ভিস কেজিবির প্ল্যান যার নেপথ্যে ছিল ভ্লাদিমির পুতিন। আসলে পুতিনের লক্ষ ছিল পুরো চেচেনিয়া দখল করা কিন্ত হঠাৎ করে তো কাউকে আক্রমণ করা যায় না তার জন্য কারন লাগে। সেইজন্য এই পরিকল্পনা। এরপর রাশিয়ান সেনা চেচেনিয়া আক্রমণ করে। হেলিকপ্টার, মিসাইল সব চালানো হয়, পূর্ণ শক্তিতে চেচেনদের দমন করে চেচেনিয়ার পূর্ন ক্ষমতা নিজের হাতে নেয়। এই যুদ্ধ পুতিমকে রাতারাতি রাশিয়ার জনগনের সামনে জাতীয় বীর তৈরি করে এবং তিনি রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট হয়ে যান।

Leave a Reply

Your email address will not be published.