চীন

প্রচুর দেশকে অস্ত্র বিক্রির ছক চীনের

নিউজ ডেস্কঃ চীনের ক্ষমতা বৃদ্ধি যে সারা পৃথিবীর মাথা ব্যাথার কারন হয়ে দাঁড়িয়েছে টা বলাই বাহুল্য। বিশেষ করে দক্ষিণ চীন সাগর থেকে শুরু করে প্রশান্ত মহাসাগরে এবং ভারত মহাসাগরে চীনের বিরুদ্ধ লড়তে একের পর এক দেশ নিজেদের মধ্যে গাঁটছড়া বাঁধছে। তবে চীন যে নিজেদের অস্ত্র ভাণ্ডারে সামরিক অস্ত্র মজুত করছে তাই নয় পাশাপাশি আজকাল বহু দেশকে অস্ত্র বিক্রি করছে অর্থাৎ বিশ্ব অস্ত্র বাজারে নিজেদের জায়গা করে নিতে চাইছে তারা। 

চীনের নৌবাহিনীতে বর্তমানে কনভেনশনাল পাওয়ার আট্যাক সাবমেরিনের সংখ্যা ৭৪ এবং ডিজেল ইলেকট্রিক সাবমেরিনের সংখ্যা ৫৬। এর মধ্যেই উন্নত প্রযুক্তির সাবমেরিন হিসাবে টাইপ ০৩৯এ/বি সিরিজের (এসএসকে) এ্যাটাক সাবমেরিন প্রথম সার্ভিসে আসে ২০০৬ সালে। ন্যাটো রিপোর্টেড কোড নেম ইউয়ান ক্লাস (Yuan-class) সাবমেরিন।

চীনের নৌসেনার কাছে বর্তমানে এই ধরনের সাবমেরিন ১৮ টি রয়েছে এবং প্রতিটি অপারেশনাল। এই সাবমেরিনটি চীন নিজে ডিসাইন করলেও জারমানের তৈরি ইঞ্জিন এবং এয়ার ইন্ডিপেনডেন্ট প্রোপালশন (এআইপি) ব্যবহার করেছে । ৩৬০০ টন ওজনের টাইপ ০৩৯বি/০৪১ ইয়ুয়ান-ক্লাস ডিজেল ইলেক্ট্রিক এট্যাক সাবমেরিন (এসএসকে) এর দৈর্ঘ্য ৭৭.৬ মিটার, বিম ৮.৪ মিটার এবং ড্রাফট ৬.৭ বর্গমিটার। সাবমেরিনটির সর্বোচ্চ গতিবেগ ২০ নটিক্যাল মাইল (সাবমার্জ অবস্থায়)। চীনের কথা অনুযায়ী এটি সমুদ্রের ৪০০ মিটার গভীর পর্যন্ত যেতে সক্ষম। অর্ধ নিমজ্জিত অবস্থায় এর সর্বোচ্চ গতি প্রতি ঘন্টায় ২০ নটিক্যাল মাইল বা ৩৭ কিলোমিটার। এটিতে ৬৫ জন ক্রু-অফিসার মোতায়েন রয়েছে।

পাশাপাশি এই সাবমেরিনটিতে তে ৬টি ৫৩৩ মিলি মিটার টর্পেডো টিউব রয়েছে। যাতে ওয়াইইউ-৬/৭ টর্পেডো সহ সাম্প্রতিক সময়ে ভয়ঙ্কর ধ্বংস ক্ষমতা সম্পন্ন এন্টিশীপ ও এন্টি এয়ারক্রাফট ক্যারিয়ার ধ্বংস করার মত ওয়াইজে-১৮ সুপার সনিক ক্রুজ মিসাইল ইনস্টল করা হয়েছে। এছাড়া আছে ১৮ নটিক্যাল মাইল পাল্লার সমুদ্রের নিচে ফায়ারিং সক্ষমতার সিওয়াই-১ এএসডাব্লিউ মিসাইল সিস্টেম।

তবে চীনের বিশ্ব বাজারে বর্তমানে বেশ কিছু ক্রেতা রয়েছে। থাইল্যাণ্ড রয়্যাল নেভী এস২৬টি ক্লাসের এক্সপোর্ট ভার্সনের এই জাতীয় মোট ৩টি সাবমেরিন ক্রয়ের চুক্তি করেছিল ২০১৫ সালে এবং ২০২৩ সালে থাইল্যাণ্ড রয়্যাল নেভীকে এই ক্লাসের সাবমেরিনের প্রথমটি সরবরাহ করতে চলেছে চিন। 

অন্যদিকে ২০১৫ সালে আন্তর্জাতিক বাজারের অপর ক্রেতা পাকিস্তান ৮টি টাইপ ০৩৯বি (আপগ্রেড) সিরিজের ইয়ুয়ান-ক্লাস ডিজেল ইলেক্ট্রিক এট্যাক সাবমেরিন (এসএসকে) ক্রয়ের চুক্তি করেছিল। তার মধ্যে এই ৮ টি সাবমেরিনের দাম নির্ধারণ করা হয় ৫.০০ বিলিয়ন ডলার।একন পর্যন্ত হওয়া চিনের ইতিহাসে সর্বোচ্চ মূল্যের অস্ত্র রপ্তানি চুক্তি এটি। এই সাবমেরিন গুলির মধ্যে ৪টি তৈরি হবে চিনে এবং বাকী ৪ গুলি পাকিস্তানের করাচী শিপইয়ার্ডে। চুক্তি অনুসারে চিন পাকিস্তানকে ২০২৩ সাল থেকে ২০২৮ সালের মধ্যে সব গুলি সাবমেরিন পর্যায়ক্রমে সরবরাহ করা হবে।

Leave a Reply

Your email address will not be published.