ইংল্যান্ড এবং সোভিয়েত ইউনিয়নের জন্যই স্বাধীন হয়েছিল ইসরায়েল। কারন জানেন?
নিউজ ডেস্কঃ গাজার সাথে ইসরায়েলের যুদ্ধে প্রচুর মানুষ প্রান হারিয়েছে। এবং সবথেকে বড়ো ব্যাপার হল এই যে আজ যদি ইসরায়েলের কাছে শক্তিশালী এয়ার ডিফেন্স সিস্টেম না থাকত তাহলে ইসরায়েল শ্মশান হয়ে যেত। ৪৫০০ রকেট হামলা তারা আটকেছে। বুঝতে পারছেন তারা তাদের সীমান্তে কতোটা শক্তিশালী এয়ার ডিফেন্স সিস্টেম মোতায়েন করে রেখেছে। কিন্তু কখনও ভেবে দেখেছেন যে এর শুরুটা কোথায় হয়েছিল আর কবে হয়েছিল?
আসল ঝামেলা শুরু হয় আজ থেকে প্রায় ৪ দশক আগে।ইংল্যান্ড এবং সোভিয়েত ইউনিয়নের হাত ধরে স্বাধীন হয় ইসরায়েল। আসলে এই অশান্তি বহু পুরনো, ইহুদীদের উপর বিরাটভাবে একটা সময় অত্যাচার চালিয়েছিলেন হিটলার। যাই হোক ১৯২২ সালে ফিলিস্তিনের এলাকা ব্রিটিশ ম্যান্ডেট প্রাপ্ত হয়। ১৯৪৪ সালে অর্থাৎ ২২ বছর পর ইংল্যান্ডের নির্বাচনকে সামনে রেখে ফ্রাঙ্কলিন রুজভেল্ট একটি স্বাধীন ও গণতান্ত্রিক ইহুদি কমনওয়েলথ গঠনের অনুমোদন দেওয়া হয়। এরপর ৩ বছর পর ব্রিটেন এই প্রস্তাবটিকে জাতিসংঘে উত্থাপন করে। সেইবছর ই অগাস্ট মাসে জাতিসংঘে ফিলিস্তিনি বিষয়ক প্রস্তাবটি সুপারিশ করা হয় যা ২৯ নভেম্বর জাতিসংঘে গৃহীত হয়েছিল। ফিলিস্তিনি মূল ভূখণ্ডের ৫৫ শতাংশ একটি ইহুদি রাষ্ট্রের জন্য এবং আরবের জন্য রাখা হয়েছিল বাকি ৪৫ শতাংশ। বলে রাখা ভালো যে সেইসময় ১২ লাখ ৬৯ হাজার ইহুদি ছিল ৬ লাখ ৭৮ হাজার আরবের মানুষ।
১৯৪৮ সালের ১৫ মে ফিলিস্তিনের ওপর ব্রিটিশ ম্যান্ডেট অবসানের তারিখ ঘোষিত হয় এবং এর একদিন আগেই ইসরাইল তার স্বাধীনতা ঘোষণা করেছিল। সেইসময় সোভিয়েত ইউনিয়নের প্রেসিডেন্ট স্টালিন এবং যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ট্রুম্যান তৎক্ষণাৎ ইসরাইলকে স্বীকৃত দেয় ইসরায়েলকে।এভাবেই জন্ম হয়েছিল ইসরায়েলের। বিভক্তির পরই শুরু হয়েছিল আরব এবং ইসরায়েলের যুদ্ধ। নতুন জন্ম হওয়া একটি রাষ্ট্রের বিরুদ্ধে যুদ্ধ ঘোষণা করে আরব। মাত্র ১০ দিনের যুদ্ধে ইসরায়েলের কাছে ব্যাপকভাবে পরাজিত হয় আরব।
এরপর আবার যুদ্ধ শুরু হয় ১৯৬৭ সালে, একই সাথে ৫ টি দেশ আক্রমন করে ইসরায়েলের বিরুদ্ধে। তবে খুব একটা সুবিধা তারা করতে পারেনি মাত্র ৬ দিনের যুদ্ধে আরবের ৫ টি দেশের বিরুদ্ধে জয় পায়, পাশাপাশি গাজা স্ট্রিপ ও দখল করে নেয় ইসরায়েল। মাত্র ছয়দিনের যুদ্ধে ফিলিস্তিনের গাজা, পশ্চিমতীর, জেরুসালেম, মিসরের সাইনাই ও সিরিয়ার গোলান মালভূমি দখল করে নেয় এই ইহুদি রাষ্ট্রটি।
এরপর আবার যুদ্ধ শুরু হয় ১৯৭৮ সালে। এই যুদ্ধেও আখেরে লাভ হয় ইসরায়েলের। কারন ১৯৭৮ সালের ক্যাম্প ডেভিড চুক্তির মাধ্যমে মিসর ইসরাইলকে স্বীকৃতি দিলে ইসরাইল সাইনাই এলাকা মিশরের কাছে ফেরত দেয়। কিন্তু বাকি সব এলাকাতেই এখনো চলছে ইসরাইলের অব্যাহত দখলদারিত্ব।
ইসরাইল চূড়ান্ত হামলা চালায় উত্তর লেবাননের সীমান্ত ও গোলান মালভূমি এবং দক্ষিণ আকাবা উপসাগর ও সাইনাই উপত্যকায়। এতে ফিলিস্তিনের প্রায় ৭০ শতাংশেরও বেশি ভূখণ্ড ইসরাইরের দখলে চলে যায়।
১৯৬৭ এবং ১৯৭৩ সালে ইসরাইল আবারো আরবের দেশ গুলিকে আক্রমণ করে তার সীমানাকে বিস্তৃত করে। ইসরায়েলের ডিফেন্স ফোর্সের কারনে আজ ইসরায়েলের বিরুদ্ধে কথা বলতে ভয় পায় পৃথিবীর বহু দেশ। তারা টেকনোলোজির দিক থেকে আমেরিকাকেও অনেক জায়গায় পেছনে ফেলে দিয়েছে।