আমেরিকার যুদ্ধবিমান ধ্বংস করতে পৃথিবীর ছোট দেশ গুলি যথেষ্ট ভূমিকা নিচ্ছে
নিউজ ডেস্কঃ যুদ্ধের ময়দানে আত্মবিশ্বাস যে একটা বিরাট ব্যাপার তা বলাই বাহুল্য। আর সেই কারনে একাধিক যুদ্ধে শক্তিশালী দেশকে ও অপরদেশের কাছে হারতে হয়েছিল এই আত্মবিশ্বাস কম থাকার কারনে, পাশাপাশি যুদ্ধের ময়দানে মাইন্ডসেট ও একটি বড় ব্যাপার।
আত্নবিশ্বাস থাকলে অনেক কিছুই করা যায় যুদ্ধের ময়দানে। এবং তা হয়ত উদাহরন দিয়ে শেষ করা যাবে না। তবে ১৯৯৫ সালের জুন মাসে সার্বিয়া এক কমান্ডার যে আত্নবিশ্বাসের উদাহরন দিয়েছিল তা ইতিহাসের পাতায় চিরজীবন লেখা থাকবে।
১৯৯৫ সালে জুন মাস সার্বিয়ায় তুমুল যুদ্ধ চলছে।এমন সময় আমেরিকার বায়ুসেনার দুটি এফ ১৬ পাঠানো হল টহল মিশন পরিচালনা করার জন্য। মিশনে যাওয়ার আগে অবশ্য তাদের আকাশ প্রতিরক্ষার ব্যাপারে সতর্ক করা হয়েছিল। যেহেতু যুদ্ধের সময় একটি AWECS ও পাঠানো হয়েছিল সেই কারনে।
এফ ১৬ যখন স্যামের(সার্ফেস টু এয়ার মিসাইল-ভুমি থেকে আকাশে আক্রমণ শানাতে পারে) রেঞ্জের ভিতর আসল তখন সার্বিয়ার এক কমান্ডার স্যামের রাডার অন করলো এবং প্রায় সাথে সাথে আবার বন্ধও করে দিয়েছিল। স্যামটি ছিল এসএ ৬। যার রেঞ্জ মাত্র ১৭ কিঃমিঃ।তখন এফ ১৬এর “রাডার ওয়ার্নি রিসিভার” পাইলটকে সতর্ক করেছিল স্যামের রাডারের ব্যাপারে। কিন্তু পাইলট কিছুই খুজে পেল না। কারন খুব অল্প সময়ের জন্য সেই কমান্ডার স্যামের রাডার অন করেছিল। আবার সেই AWECS ও কোন রাডারের সিগনাল শনাক্ত করতে পারে নি। আর সেই কারনে পাইলট মনে করলো এটা “ফলস্ এ্যালার্ম” যা মাঝে মাঝে হয়ে থাকে।
অল্প সময়ের জন্য রাডার অন করার কারন হলো যদি আরো লম্বা সময় ধরে অন রাখা হত তাহলে এফ ১৬ স্যামের লোকেশন(অর্থাৎ কোথায় রাখা আছে) জেনে যেত এবং ধ্বংস করে দিতে সক্ষম হত। সেই কমান্ডার যেই অল্প সময়ের জন্য রাডার অন করেছিল সেখান থেকে সে এফ ১৬ এর উচ্চতা,গতিবেগ এবং গতিপথ সম্পর্কে সকল তথ্য জেনে নেয়। হিসাব-নিকাশ করে সম্ভাব্য একটি ফ্লাইট পথ অঙ্কন করে। ফ্লাইট পথ অঙ্কন করা মানে হলো এফ ১৬ গুলো ঠিক কোন রুট দিয়ে মিশনটি শেষ করবে। এই কাজটা সেই কমান্ডার সেই অল্প তথ্য দিয়ে আন্দাজ করে নেয়। অথচ সেখানে ভুলের সম্ভাবনা ছিল প্রচুর।
এরপর সেই কমান্ডার স্যামের রাডার বন্ধ করেই দুইটি মিসাইল ফায়ার করে। অর্থ্যা মিসাইল দুটিকে আনগাইডেড অবস্থায় ফায়ার করে দেয় তার নিজের তৈরি করা সেই ফ্লাইট রুটে দিকে। এই রুট কিন্তু আন্দাজে তিনি ধরে নিয়েছিলেন। অর্থ্যা এফ ১৬ দুটি যে কোন সময় যে কোন দিকেই উড়ে যেতে পারতো। তারপরও সেই কমান্ডার একটা বড়সড় ঝুকি নিয়ে দুটি মিসাইল ফায়ার করেছিল।
মিসাইল দুটি যখন এফ ১৬ গুলোর কাছাকাছি চলে গিয়েছে তখনই সেই কমান্ডার স্যামের রাডার অন করলেন। মাত্র ৫ সেকেন্ড আগে রাডার অন করলেন।এবং মিসাইল দুটিকে এফ ১৬ বরাবর গাইডও করলেন। আর ভাগ্যবশত একটি মিসাইল হিটও করে এফ ১৬কে একটি এফ ১৬ ভূ-পাতিত করলেন সেই কমান্ডার। যেহেতু রাডার অফ থাকা অবস্থায় মিসাইল ফায়ার করা হয়েছিল সেহেতু এফ ১৬এর পাইলটদের কোন সংকেতও আসে নি যে তাদের দিকে স্যাম আসছে।
আত্নবিশ্বাস,সাহস এবং ঝুঁকির এই তিনটি সমন্বয়ে যুদ্ধক্ষেত্রে এর থেকে ভাল উদাহরন হতে পারেনা যা এই কমান্ডার করে গেছেন।