আমেরিকার সার্ভিসে থাকা পৃথিবীর সবথেকে দামী যুদ্ধবিমান ১ ঘণ্টা উড়তে কত লক্ষ টাকা ব্যয় হয় জানেন?
নিউজ ডেস্কঃ f 22 র্যাপ্টর। আমেরিকার পঞ্চম প্রজন্মের যুদ্ধবিমান। আজ পর্যন্ত পৃথিবীর ইতিহাসে তৈরি হওয়া এমন বিমান যার মুখোমুখি হওয়ার ক্ষমতা কোন যুদ্ধবিমানেরই নেই। পঞ্চম প্রজন্মের যুদ্ধবিমান চীন এবং রাশিয়ার কাছে থাকলেও তা আমেরিকার এফ ২২ এর মতো স্টেলথ ক্ষমতার অধিকারি নয়। ১৫ বছর ধরে সার্ভিসে এসেছে এই যুদ্ধবিমান। এখনও পৃথিবীর কোন দেশ এর মতো সমান ক্ষমতা সম্পন্ন যুদ্ধবিমান তৈরি করতে পারেনি, অর্থাৎ বুঝতেই পারছেন যে এটি কতোটা শক্তিশালী।
পৃথিবীতে এমন পাইলট হয়ত খুব কমই আছে যে আমেরিকার এই পঞ্চম প্রজন্মের যুদ্ধবিমানের বিরুদ্ধে লড়ার ক্ষমতা রাখে। ৪৪০০০ ঘণ্টার ঝড়ো পরীক্ষার পর ১৯৯৭ সালে প্রথমবারের জন্য আকাশে দেখা গিয়েছিল। এরপর ৩৫০০ ঘণ্টা আকাশে পরীক্ষা চালানোর পর ২০০৫ সালে সার্ভিসে আসে এই যুদ্ধবিমান।
পৃথিবীর অন্যতম শক্তিশালী আমেরিকার এই এফ ২২ র্যাপ্টর রক্ষণাবেক্ষণের পেছনে প্রচুর অর্থ ব্যয় করতে হয় মার্কিন সরকারকে। ২০১৩ সালের হিসাব অনুসারে এটির প্রতি ঘণ্টা উড্ডয়নে প্রায় ৪৯ লক্ষ টাকা খরচ করতে হয়।
এই যুদ্ধবিমান গুলির শুধু রক্ষণাবেক্ষণ খরচ নয় এটি তৈরি করতেও প্রচুর অর্থ খরচ করতে হয়। এক একটি যুদ্ধবিমানের দাম ১৫০ মিলিয়ন মার্কিন ডলার। অর্থাৎ ভারতীয় মুদ্রায় প্রায় ১৫ কোটি টাকা। যা ভারতের হাতে আসতে চলা ব্র্যন্ড নিউ এয়ারবাস এ-৩২০ এর থেকেও বেশি। এক একটি এয়ারবাসের দাম ১০০ মিলিয়ন মার্কিন ডলার। আর এই বিমানের দাম তার থেকেও ৫০ মিলিয়ন বেশি। পাশাপাশি এই যুদ্ধবিমান গুলির লাইফ সাইকেল কষ্ট ৩৩৪ মিলিয়ন মার্কিন ডলার।
যুদ্ধবিমানটির খরচ এতো হলেও এর স্টেলথ ক্ষমতার জন্য এটি বিশেষভাবে বিখ্যাত। এর রেডার ক্রস সিগনেচার ১৫০কিমি থেকে ০.০০০১বর্গ মিটার। কিছু সামরিক বিশেষজ্ঞ এর আরসিএসকে একটি বুদবুদের সাথে তুলনা করে থাকেন। ২ডি থ্রাস্ট ভেক্টর ইঞ্জিনের সাথে এটি ডগ ফাইটেরও দক্ষ ফাইটার।পাশাপাশি এর এর আফটার বার্নার ব্যবহার না করে পুরো যুদ্ধাস্ত্র বহন করেও এই যুদ্ধবিমান ম্যাক ১.৫ গতী বজায় নিয়ে আকাশে উড়তে সক্ষম যা অবিশ্বাস্য।
এতো খরচের কারন একটাই, যে এর প্রতিদ্বন্দ্বিতা করার ক্ষমতা পৃথিবীর কোন দেশেরই নেই। পৃথিবীর একমাত্র দেশ হিসাবে আমেরিকার কাছেই পঞ্চম প্রজন্মের ক্ষমতা যুক্ত যুদ্ধবিমান আছে। চীন বা রাশিয়া তাদের কাছে থাকা পঞ্চম প্রজন্মের যুদ্ধবিমান নিয়ে যতই বরাই করুক না কেন? আমেরিকার পঞ্চম প্রজন্মের যুদ্ধবিমানের কাছে কিছুই নয়। এই দুটি দেশ র্যাপ্টরের কাছাকাছি ক্ষমতা যুক্ত কোন যুদ্ধবিমান ই তৈরি করতে সক্ষম হয়নি। র্যাপ্টর এক অবিশ্বাস্য বিমান ছিল এবং ভবিষ্যতেও থাকবে বলে আশা করা হচ্ছে।
একটা কথা বলা বাহুল্য যে আমেরিকার হাতে থাকা এফ ৩৫ এর প্রোজেক্ট কষ্ট বেশ কিছুটা বেশি। এফ ৩৫ একাধিক দেশকে বিক্রি করলেও এফ ২২ এর গোপনীয়তা বজায় রাখার জন্য এখনও পর্যন্ত কোন দেশকে বিক্রি করা হয়নি, তবে রাশিয়ার বায়ুসেনাতে কিছু বছরের মধ্যে এই যুদ্ধবিমান দেখা যাবে বলে মত সামরিক বিশেষজ্ঞদের।