নেপালের কারনে অসুবিধায় পড়তে পারে ভারতবর্ষ!
ইতিহাস সাক্ষী রয়েছে প্রতিবেশী দেশের সঙ্গে সম্পর্ক ভালো না রাখলে অপর দেশের অবস্থা কিছুটা হলেও করুন হয়ে ওঠে। সেরকমই চীন-নেপাল এবং ভারতের অভ্যন্তরীণ সম্পর্ক ঠিক কেমন সেই বিষয়ে নানা মুনির নানা মত রয়েছে। তবে নেপাল যেহেতু দরিদ্র প্রধান দেশ সেক্ষেত্রে চীন এবং ভারত দুপক্ষ থেকেই বিপুল পরিমাণে সাহায্য পেয়ে থাকে নেপাল। কিন্তু ভারতের সাহায্যের প্রতিদান ভুলে গিয়ে শুধুমাত্র চীনের দেখানো প্রলোভনের জন্য ভারতকে প্রতি পদক্ষেপে কোণ ঠাসা করে চলেছে নেপাল, এমনটাই মনে করছেন বিশেষজ্ঞরা। তারা জানিয়েছেন, সিকিমের কাঞ্চনজঙার পাদদেশ থেকে উত্তরাখণ্ডের লিপুলেখ পর্য্যন্ত সিকিম -পশ্চিমবঙ্গ- বিহার -উত্তরপ্রদেশ ও উত্তরাখন্ড ব্যাপী নেপালের সীমান্ত রয়েছে। ভারত নেপাল সীমান্তে নেপালের অভ্যন্তরে একেবারে ভারতীয় সীমারেখা পর্যন্ত গাড়ী চলাচলের যোগ্য পাকা রাস্তা বানিয়ে দিয়েছে চীন। সিকিমের ‘উত্তরে’ নামক গ্রাম থেকে ঐ অঞ্চলের অন্যান্য সব বসতি এলাকা পর্যন্ত নেপাল সীমানায় পৌছাতে বেশ কয়েক কিলোমিটার দুর্গম পাহাড়ি রাস্তায় হেটে যেতে হত, কিন্তু সেই দুর্গম পাহাড়ি এলাকায় নেপালের ভিতর ভারত সীমা পর্যন্ত পাকা রাস্তা বানিয়ে দিয়েছে চীন। এরকম অগুন্তি পাকা রাস্তা পুল ইত্যাদি ভারত সীমানা পর্যন্ত সব ভারতীয় প্রদেশকে জুড়ে রেখেছে একমাত্র চীন।
শুধুমাত্র চীন নয় নেপালের বেশ কয়েকবার দুঃসময়ে সহায়তার হাত বাড়িয়ে দিয়েছে ভারতও। নেপালের বিধংসী ভূমিকম্পে বিপুল পরিমান সাহায্য থেকে শুরু করে পুনরায় স্বাভাবিক অবস্থায় ফিরে আসতে সহযোগিতা করেছে ভারত। তবে শুধুমাত্র সহায়তা নয় নেপালকে একাধিক বিগ প্রজেক্ট পাইয়ে দিতেও সাহায্য করেছে ভারত। এমনকি কোনরকম ভিসা ও পাসপোর্ট ছাড়াই কয়েক হাজার নেপালি ও গোর্খারা বর্তমানে ভারতে স্থায়ী বসবাস করে চাকরি কিংবা ব্যবসা করে নিজেদের জীবন যাপন করছেন। এক্ষেত্রে চীনের মতোই ভারত সমানুপাতিক সহায়তা করে চলেছে নেপালকে। তবে চীনের ঝাঁ-চকচকে দৃশ্য দেখে বরাবরই চীনের পক্ষপাতিত্ব করতে দেখা গিয়েছেন নেপালকে। যার কারণে চীনের কথায় ভারতকে অপমান করতে কিংবা এক ঘরে করতে দুবার ভাবে না নেপাল। যদিও চীনের প্রতি নেপালের এই অন্ধবিশ্বাস আগামী দিনে ভারত ও নেপালের জন্য সংকটজনক বলেই মনে করছেন বিশেষজ্ঞরা।
অন্যদিকে আমাদের এই কথা ভুললেও চলবে না যে মধ্য পশ্চিম নেপালের গোর্খা জেলার রুই নামক ৭৫ পরিবারের বসত গ্রামটি ১৯৬০ সালেই নিজের দখলে নিয়ে ওখানে চীনারাই এতো বছর থেকে প্রশাসন চালাচ্ছে । ভূমি রাজস্ব দফতরের খাতায় ওই গ্রামটি নেপালের অন্তর্ভুক্ত । কিন্তু নেপাল সরকার গত ৬০ বছরে একবারও আপত্তি করেনি। এছাড়াও যদি ভারত-তিব্বত সীমানায় অরুণাচল প্রদেশ থেকে লাদাখ পর্যন্ত চীন বারবার অতিক্রমণ করে ভূমি বেদখল করে তাহলে নেপালের ঠিক কতটা ভূমি দখল করে রাখা হয়েছে সেটি জলের মতো স্বচ্ছ হয়ে যাবে। যদিও এই কথাটা ঠিক যে নেপালের কত অংশ জমি চীন স্বেচ্ছায় দখল করে রেখেছে আজ পর্যন্ত নেপাল সরকারের কাছে তার কোন স্পষ্ট হিসেবে নেই। সুতরাং, ভারতকে অবহেলা করে চীনের সঙ্গে বন্ধুত্বের সম্পর্ক দীর্ঘ করা নেপালের জন্য সুবিধা জনক কিনা তা সময় উত্তর দেবে।