পাকিস্তান এবং তুরস্ককে চাপে রাখতে গ্রীসের সাথে বন্ধুত্ব বৃদ্ধি ভারতবর্ষের
নিউজ ডেস্কঃ শত্রুর শত্রু আমার মিত্র। এই পলিসি নিয়েই সারা বিশ্বের বেশিরভাগ দেশ চলে। একাধিক দেশ কাঁধে কাঁধে মিলিয়ে চলার পাশাপাশি একসাথে এখন প্রচুর প্রোজেক্ট ডেভেলপমেন্টের কথা ভাবছে। বিশেষ করে পাকিস্তানকে চাপে রাখতে এই পথে হাঁটতে পারে ভারতবর্ষ।
গ্রিক ভারতের সাথে ঘনিষ্ঠ সামরিক সম্পর্ক গড়ে তুলতে আগ্রহ প্রকাশ করেছে। পাকিস্তান তুর্কির সঙ্গে ঘনিষ্ট সম্পর্ক গড়ে তোলার পার্শ্ব প্রতিক্রিয়া বলা যেতে পারে। যদিও ইতিমধ্যে ফ্রান্সের সাথে বেশ ভালো সম্পর্ক গড়ে উঠেছে গ্রীসের। ফ্রান্স বেশ কিছু রাফালে দিয়েছে গ্রীসের সেনাবাহিনীকে।
ভারত ও গ্রিস গত 29 অক্টোবরে বিদেশমন্ত্রী দের এক ভার্চুয়াল বৈঠক 1 অনুষ্ঠিত হয়েছিল। আঞ্চলিক ও আন্তর্জাতিক বিষয় নিয়ে আলোচনা হয়েছে সেই মিটিং এ। পূর্ব ইজিয়ান সাগরে তেল এর সন্ধান পাওয়ার পর দুই দেশ এর মধ্যে উত্তেজনা ওই জলসীমায় অধিকার নিয়ে বিবাদ তুঙ্গে উঠেছে। একটি তুর্কি যুদ্ধজাহাজ সম্প্রতি গ্রিস এর সঙ্গে বিবাদে ক্ষতিগ্রস্ত পর্যন্ত হয়েছে। দুই দেশ ওই অঞ্চলে সামরিক মহড়া চালাচ্ছে যদিও তারা দুজনেই NATO সামরিক জোট এর সদস্য।
তবে তুর্কির ওই অঞ্চলে রাশিয়ার অত্যাধুনিক এস 400 ট্রায়ামফ বায়ুরক্ষণ প্রনালী বসানোতেই হয়েছে সমস্যা। এই নিয়ে আমেরিকার সঙ্গে তুরস্কের যা নিয়ে বিরোধ বাধে, আমেরিকা তাদের জয়েন্ট স্ট্রাইক ফাইটার প্রোগ্রাম এফ 35 থেকে বের করে দেয় তুরস্ককে, পাশাপাশি তুরস্কের জন্য তৈরী 20 টি এফ 35 বিমান সম্প্রতি গ্রিস কে দেওয়ার কথা ঘোষণা করে। গ্রিক প্রতিরক্ষা মন্ত্রী পেনাজিওটপিয়াস বলেছেন তুরস্ক NATO জোট কে ভিতর থেকে দুর্বল করছে, তিনি আরো জানান, যে তুর্কির বর্তমানে নেতাদের এই ধারণা হয়েছে ওই অঞ্চলে তারা সবচেয়ে শক্তিশালী তাই তারা যা খুশি তাই করতে পারে। গ্রিক সীমানা তে এস 400 মোতায়েন এক উস্কানি মূলক কাজ বলেও তিনি জানিয়েছেন।
এক ভূমিকম্প তে অবশ্য দুই দেশের মধ্যে সামরিক উত্তেজনা কিছু কম হয়েছে তবে তা সাময়িক সময়ের জন্য। যদিও দুই দেশ একে অপরকে এক্ষেত্রে সহযোগিতা করবে বলেছে। তবে তুরস্ক সম্প্রতি পাকিস্তান এর সঙ্গে তাদের সামরিক সম্পর্ক জোরদার করছে। পাকিস্তান তুর্কি থেকে জঙ্গি হেলিকপ্টার ও যুদ্ধজাহাজ ক্রয় করার চুক্তি করেছে। পাশাপাশি কাশ্মীর নিয়ে তুর্কির প্রেসিডেন্ট এরদোগান উস্কানি মূলক বক্তব্য দিয়েছিলেন ইউনাইটেড নেশনসে।
গ্রিস যদিও ইউরোপের ও দুনিয়ার বেশ কয়েকটি দেশের সমর্থন পাচ্ছে কিন্তু দুনিয়ার অন্যতম উদীয়মান শক্তি ও পাকিস্তানের বিরোধী ভারত এর সহায়তা তারা বেশ গুরুত্ব দিচ্ছে। ভারত বর্তমানে একটি প্রথম সারির আর্থিক ও সামরিক শক্তি যার সঙ্গে তুর্কি ও পাকিস্তানের উভয়ের সঙ্গে সম্পর্ক খারাপ। তাই গ্রিস এই সুযোগ কোনমতে ছাড়তে চাইছে না। গ্রিস এর বিদেশমন্ত্রী নিকস দন্ডিয়াস ভারতের বিদেশমন্ত্রী এস জয়শঙ্কর সঙ্গে বৈঠক এর পর,এক টুইট বিবৃতিতে বলেছেন আমাদের দুই প্রাচীন সভ্যতা একযোগে কাজ করবে এশিয়া ও মেডিটেরিয়ান অঞ্চলে শান্তি ও সমৃদ্ধির লক্ষে।
দুই দেশের পারস্পরিক বিষয় ছাড়া ইউ এন রিফর্ম ও সাইপ্রাস তুর্কির দখল দারী ও বর্তমান পরিস্থিতি নিয়ে আলোচনা হয়েছে। গ্রীস বরাবর ভারত কে সমর্থন করে এসেছে আন্তর্জাতিক ক্ষেত্রে। ১৯৮৫ সালে পরমাণু অস্ত্র বিষয়ক নতুন দিল্লি ঘোষণা পত্র কে গ্রিক স্বাগত জানিয়েছিল। গ্রিক প্রতিরক্ষা মন্ত্রী আঙ্কারা অবস্থিত নতুন দিল্লি দূতাবাস সম্প্রতি ভারতের রাজদূত অমিত লাগুন সঙ্গে দেখা করেন ও বলেন দুই দেশের ঘনিষ্ট রাজনৈতিক আর্থিক সম্পর্কের পাশে সামরিক সম্পর্ক জোরদার হবে বলে আশা প্রকাশ করেছেন।
আন্তর্জাতিক বিশেষজ্ঞ মহলের মতে তুরস্ক পাকিস্তান জোট মোকাবেলা করতে ভারত গ্রিস ঘনিষ্ঠ সম্পর্কের দিকে এগোচ্ছে। বহু আন্তর্জাতিক মহল বলছে শক্তিশালী ভারত এর মোকাবেলা করার ক্ষমতা পাকিস্তান কিংবা বর্তমানে আর্থিক ভাবে দুর্বল তুর্কির নেই, পাশাপাশি সঙ্গে গ্রিসের সঙ্গে যুক্তরাষ্ট্রের ও ফ্রান্স এর সমর্থন আছে। ফ্রান্স সম্প্রতি গ্রীসের সেনাবাহিনীকে তাদের পুরানো ১৮ টি রাফায়েল অফার করেছে।
বেশ কিছু গ্রিক সামরিক কর্মকর্তা ভারত ও গ্রিক নৌ সেনা এবং বায়ুসেনার যৌথ অভ্যাস ইজিয়ান ও পূর্ব মেডিটেরিয়ান অঞ্চলে করার উপর জোর দিচ্ছেন। ভারত কে ভবিষ্যতে এক নৌবেস অফার করার ব্যাপারে সরকার কে চিন্তা করতে বলছে।