দেশ ভাগের পর ভারতবর্ষ পাকিস্তানকে কিভাবে সাহায্য করেছিল?
নিউজ ডেস্কঃ ভারতে ১৫ ই আগস্ট উদযাপন করা হয় স্বাধীনতা দিবস হিসাবে। ১৯৪৭ সালের ঠিক এই দিনটিতেই ভারতবাসী দীর্ঘ কয়েক দশকের সংগ্রাম এবং ত্যাগের পর নিপীড়ক ব্রিটিশ ঔপনিবেশিকদের হাত থেকে নিজেদের স্বাধীনতা ছিনিয়ে নিতে সক্ষম হয়েছিল। কিন্তু সেই একই সঙ্গে ব্রিটিশ শাসনের শেষে ভারতীয় উপহাদেশ বিভক্ত হয়ে যায় দুভাগে – জন্ম নেয় দুই নতুন দেশ ভারত এবং পাকিস্তান। অঞ্চল বিভাজন, ক্ষমতা এবং সম্পদের বিভাজন সবকিছু নিয়ে সেই সময় দুই দেশের মধ্যে তৈরি হয় এক চরম হিংসার পরিস্থিতি।
এগুলো তো না হয় জানা খবর।কিন্তু আপনি কি কখনো ভেবে দেখেছেন যে দেশভাগের পর পরই কিভাবে দুই দেশ কাজ শুরু করেছিলো? বিশেষত পাকিস্তান যার কিনা সেই সময় ছিলো না কোনো কেন্দ্রীয় ব্যাংকিং ব্যবস্থা ই!
সত্যি কথা বলতে দেশ বিভাজনের ফলে মুদ্রা, মুদ্রা তৈরি, তার বিনিময়, জনসাধারণের ঋণের ব্যবস্থাপনা, কর্মীদের স্থানান্তর, সম্পত্তি, সম্পদ এবং তার দায় ভাগ করা সম্পর্কিত যাবতীয় বিষয় নিয়ে যথেষ্ট ঝামেলায় মধ্যেই পড়েছিলো পাকিস্তান।
সেই সময় এই সমস্যা সমাধানের জন্য দেশভাগের প্রশাসনিক পরিণতি পরীক্ষা করা এবং যত তাড়াতাড়ি সম্ভব সুষ্ঠ ভাবে দুই দেশের হাতে সমান ভাবে যাবতীয় ক্ষমতা হস্তান্তরের উদ্দেশ্যে অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের মন্ত্রিসভাকে কেন্দ্র করে গঠন করা হয়েছিল এক বিশেষ কমিটি।
১৯৪৭ সালের ১ জুলাই পার্টিশন কাউন্সিল কর্তৃক গঠিত এই কমিটিতে চেয়ারম্যান বানানো হয় স্বয়ং গভর্নর জেনারেলকে। সেই সঙ্গে ওই কমিটিতে ছিলেন ইন্ডিয়ান ন্যাশনাল কংগ্রেস এবং মুসলিম লীগের দুইজন করে প্রতিনিধি। কিন্তু পরবর্তীতে এই কমিটিতে ঘটে বেশ কিছু রদবদল।
এবার অনেকেরই অজানা একটা তথ্য জানাই আপনাদের। ১৯৪৭ সালে দেশ ভাগের পর স্টেট ব্যাংক অব পাকিস্তান তৈরীর আগে ভারতীয় রিজার্ভ ব্যাঙ্কই কিন্তু সদ্য প্রতিষ্ঠিত দেশ পাকিস্তানকে মুদ্রা সরবরাহ করত এবং পাকিস্তানের কেন্দ্রীয় ব্যাঙ্ক হিসাবে কাজ করত।
দেশভাগের পর পাকিস্তানে প্রথম যে মুদ্রাটি ব্যবহার করা হয়েছিল তা হলো ভারতীয় রুপি, যার উপর ইংরেজিতে মুদ্রিত ছিল “পাকিস্তান সরকার”। সেই সঙ্গে নোটের সাদা অংশে উর্দুতে লেখা ছিল “হাকুমাত-ই-পাকিস্তান”।
এই বিষয়ে বেশ কিছু তথ্য জানা যায়আরবিআই -এর নথি থেকেও। সেই নথি অনুযায়ী “সকলের সম্মতিক্রমে তৈরি ব্যবস্থা অনুযায়ী, ভারতীয় সেন্ট্রাল ব্যাঙ্ক সেই সময় শুধুমাত্র যে পাকিস্তানের মুদ্রা তৈরীর দায়িত্বে ছিল তাই নয়। সেই সঙ্গে ১৯৪৮ সালের সেপ্টেম্বরের শেষ অব্দি পাকিস্তানের কেন্দ্রীয় ও প্রাদেশিক সরকারের নিজস্ব ব্যাঙ্ক হিসাবেও হিসাব নিকাশের যাবতীয় ভার নিয়েছিল সেন্ট্রাল ব্যাঙ্ক।