নৌসেনার সম্পত্তিকে নিজেদের ব্যাক্তিগত কাজে ব্যবহার করতেন রাজিভ গান্ধী?
নিউজ ডেস্কঃ ভারতবর্ষের ডিফেন্স নিয়ে প্রশ্নের শেষ নেই। বিশেষ করে ব্রিটিশ ভারত ছাড়ার পর ভারত যেসব যুদ্ধবিমান ব্যবহার করেছে বা যেসব যুদ্ধজাহাজ ব্যবহার করেছিল তাদের কোয়ালিটি নিয়ে রয়েছে প্রচুর প্রশ্ন। যার উত্তর বা সমাধান কোনটাই পাওয়া সম্ভব নয়। কিছু রাজনৈতিক নেতা কিছু ক্ষেত্রে ব্যক্তিগত কারনেও ব্যবহার করেছে এই সমস্ত জিনিস, শুধু তাই নয় অত্যাধিক পুরনো যুদ্ধজাহাজ ক্রয় করার ফলে যুদ্ধজাহাজ গুলিকে বারবার মেরামত করতে হত।
আই এন এস ভিরাট। ভারতীয় নৌসেনার অন্যতম সেরা যুদ্ধজাহাজ বলা হয়ে থাকে। ভারতের নৌবাহিনীর সার্ভিসে আসে ১৯৮৭ সালে এবং ২০১৭ সাল পর্যন্ত অর্থাৎ দীর্ঘ ৩ দশক ধরে ভারতের নৌবাহিনীতে সার্ভিস দিয়ে এসেছে। কিন্তু মজার ব্যাপার হল এই যে ১৯৫৯ সালে ব্রিটেনের রয়্যাল নেভিতে সার্ভিসে আসে এবং ১৯৮৬ সাল পর্যন্ত ব্রিটেনের নৌসেনাকে সার্ভিস দিয়ে এসেছে। অর্থাৎ প্রায় ২৭ বছর সার্ভিস দিয়ে আসা একটি পুরনো জাহাজ ভারতীয় নৌসেনার হাতে এসেছিল। কখনও ভেবে দেখেছেন যে এতো পুরনো জাহাজ নৌবাহিনীর জন্য কেন ক্রয় করা হল?
১৯৮৬ সালে ভারতেরে হাতে আসার পর জাহাজটিকে মেরামত করা হয়, এরপর ১৯৯৩ সালে ইঞ্জিন রুমে জল ঢুকে খুব বাজে পরিস্থিতি তৈরি হয়। যার কারনে বেশ কয়েকমাস তা মেরামতির কাজেই চলে যায়। এরপর ১৯৯৫, ১৯৯৯, ২০০৩-০৪,২০০৮-০৯ এবং ২০১২-১৩ তে মেরামত করতে হয়েছে। তার মানে একটি পুরনো জুদ্ধজাহাজ ক্রয় করার ফলে নৌসেনা কতোটা অপদস্ত হতে হয় তা হারে হারে টের পেয়েছিল সেইসময় নৌসেনা এমনটাই মত একাধিক মহলের।
কিছু ক্ষেত্রে ব্যক্তিগত কারনেও ব্যবহার করেছে, শুধু তাই নয় অত্যাধিক পুরনো যুদ্ধজাহাজ ক্রয় করার ফলে যুদ্ধজাহাজ গুলিকে বারবার মেরামত করতে হত দীর্ঘ ৩০ বছর তাদের সার্ভিস লাইফ হলে অন্তত ৩ বছরের উপর ধরে মেরামত করা হয়েছিল।
বিশেষ করে কংগ্রেস লিডারদের কথা বলতে গেলে তো কেঁচো খুঁড়তে কেউটে বেড়িয়ে আসবে। কারন কিছু সময় এমন হয়েছে যে ভারত সরকারের জিনিস কে তারা তাদের নিজেদের জিনিস বলে মনে করত, এমনটাই মত একাধিক রাজনৈতিক মহলের। ১৯৮৭ সালে সেইসময়কার প্রধানমন্ত্রী রাজিভ গান্ধী তাঁর পরিবারকে নিয়ে লক্ষদ্বীপ ঘুরতে গিয়েছিলেন ভারতের নৌসেনার সেইসময় যুদ্ধজাহাজ আই এন ভিরাটে করে। সাথে রাজনৈতিক ব্যাক্তি এবং তখনকার বেশ নামকরা সাংবাদিকরাও ছিলেন এমনটাই প্রকাশ করা হয়েছিল ভারতের এক সংবাদমাধ্যম।
পরবর্তীকালে অবসর প্রাপ্ত নৌসেনা অফিসার অজয় ছিটনিস ব্যাপারটা অস্বীকার করেন। আর এই অজয় ছিটনিস যুক্ত ছিলেন এই পুরো ব্যাপারটির মধ্যে এমনটাই বলে থাকে আন্তর্জাতিক মহলের একাংশ।
যুদ্ধজাহাজটিতে একসাথে ৪২ টি এয়ারক্রাফট রাখা যেত এবং সি হ্যারিয়ার, হাল চেতাক, হাল ধ্রুব এবং ওয়েট ল্যান্ড সি এর মতো যুদ্ধবিমান এবং হেলিকপ্টার রাখা থাকত। এছাড়াও বারাকের মতো বিধ্বংসী মিসাইল থাকত।
৭৪৩ ফুট লম্বা এবং ৫২ কিমি/ঘণ্টা গতিবেগে প্রায় ১০,৫০০ কিলোমিটার চলতে পারত যুদ্ধজাহাজটি।
২০১৭ সালে এটিকে অবসর করানো হয়। ২০২০ র সেপ্টেম্বর থেকে যুদ্ধজাহাজটি ভাঙার কাজ শুরু হয়।