ভারত

১৯৭১ সালে পাক-ভারতের জলপথের যুদ্বের সময় করাচি বন্দর ভারতীয় নৌসেনা কিভাবে আক্রমণ করেছিল? কোন কোন মিসাইল ব্যবহার করা হয়েছিল?

নিউজ ডেস্ক  ভারতীয় নৌবাহিনীর একটি অবিস্মরণীয় অবদান রয়েছে যুদ্ধের ময়দানে। তবে গোটা দেশেই ৪ঠা ডিসেম্বর দিনটিকে কেন নৌ বাহিনী দিবস হিসেবে উদযাপন করা হয় সেটি সম্পর্কে অবগত নন অনেকেই।  কিন্তু নৌ কর্মকর্তাদের সূত্রের খবর পাকসেনাদের হারানোর পর এই এই খ্যাতি অর্জন করে ভারতীয় নৌবাহিনী। 

নৌবাহিনী সূত্রের খবর অনুযায়ী জানা যায়,  ১৯৭১ সালে পাক-ভারতের জলপথের যুদ্বের সময় করাচি বন্দর ভারতীয় নৌবাহিনীরা ২২ তম  মিসাইল ভেসেল স্কোয়াড্রন  পাক সেনাদের ওপর নিক্ষেপ করেছিল। এই স্কোয়াড্রনে জাহাজগুলি দ্রুত গতিতে চলা ক্ষমতা রাখে এবং ক্ষেপণাস্ত্রের জন্য সার্বিক দিক থেকে প্রস্তুত ছিল। কার্যত সেই যুদ্ধে জয় হয়েছিল ভারতে।  যার কারণেই প্রাক্তন রাষ্ট্রপতি রামনাথ কোবিন্দের কাছ থেকে রাষ্ট্রীয় পুরস্কারের মাধ্যমে বিরল সম্মানে ভূষিত হয়েছিল নৌবাহিনীরা। 

অন্যদিকে আবার ১৯৯১ সালের অক্টোবর মাসে মুম্বাইতে ২২ তম মিসাইল ভেসেল স্কোয়াড্রন আনুষ্ঠানিকভাবে অনুষ্ঠিত হয়েছিল। যেখানে ১০টি বীর  ক্লাস এবং তিনটি প্রবাল ক্লাস মিসাইল ভোট নিয়ে প্রতিষ্ঠিত হয়েছিল। কিন্তু ভারতীয় নৌবাহিনীর শক্তি বাড়ানোর জন্য পূর্ববর্তী ইউ এস এস আর থেকে ও এস এ শ্রেণীর ক্ষেপণাস্ত্র বোর্ড গুলি অন্তর্ভুক্ত করার মাধ্যমে ১৯৬৯ সালের মধ্যে “কিলারদের’ উৎপত্তি ঘটে ছিল। 

পরবর্তীতে মিসাইল ভোট গুলিকে বাণিজ্যিক জাহাজের ভারতে নিয়ে যাওয়া হয়েছিল এবং ১৯৭১ সালের প্রথম দিকে কলকাতায় চালু করা হয়েছিল। যথারীতি ভারত-পাকিস্তান যুদ্ধের সময় একটি গুরুত্বপূর্ণ মিশনে মিসাইলগুলোকে  প্রথম ময়দানের নামিয়ে ব্যবহার করা হয়েছিল।  যার ফলাফলে নিষ্পত্তিমূলক ভূমিকা পালন করেছিল মিসাইল গুলি।  মিসাইল লঞ্চ করার পরেই সে একই বছরে অর্থাৎ ১৯৭১ সালের ৪-৫ ডিসেম্বরে মধ্যবর্তী রাতে একজন তরুণ ভারতীয় নৌবাহিনীর সর্বকনিষ্ঠ যোদ্ধারা যখন পাকিস্তানি বাহিনীর উপর ধ্বংসাত্মক আক্রমণ শুরু হয়েছিল তখন ভারতীয় নৌবাহিনীর জাহাজ নির্ঘাত ,  নিপাত এবং বীর  স্টাইক্স ক্ষেপণাস্ত্র নিক্ষেপ করে এবং পাকিস্তান নৌবাহিনীর জাহাজ খাইবার এবং  মুহাফিজকে ডুবিয়েই হারমানে। তবে শুধু একটি ঘটনা নয় পরবর্তীতে ৮-৯ ডিসেম্বরে মধ্যবর্তী রাতে আর একটি সাহসী আক্রমণ চলে দুই দেশের মধ্যে।  সেই সময় আইএনএস বিনাশ দুটি ফ্রিগেট সহ চারটি স্ট্রাইক্স ক্ষেপণাস্ত্র নিক্ষেপ করে । যার কারণে পাকিস্তান ফ্লির্ট ট্যাংকার ডুবে যায় এবং করাচিতে কেমারি তেল সঞ্চয়ের ক্ষেত্রে যথেষ্ট ক্ষতি পরিলক্ষিত হয়।  

তবে রিকোয়ার্ড নামযুক্ত ওপ ট্রাইডেন্ট, অপারেশন টিকি আধুনিক ইতিহাসের সবচেয়ে সফল অপারেশন গুলির মধ্যে একটি বলে গণ্য করা হয়। পাশাপাশি অপারেশন এই কোনরকম নৌবাহিনীতে কোন হতাহতের ঘটনা ঘটেনি। যেখানে মুম্বাইতে অবস্থিত মিসাইল ভেসেল স্কোয়াড্রন অপারেশন বিজয়, অপারেশন পরাক্রমে অংশগ্রহণ করেছে এবং অতি সম্প্রতি পুলওয়ামা হামলার পর বর্ধিত নিরাপত্তা সময় এটি পাকিস্তান উপকূলের কাছাকাছি দূরত্বের মধ্যে মোতায়েন করা হয়েছিল।  যা গত পাঁচ দশক ধরে সমুদ্রের কাছে একটি বিশ্বাসযোগ্য ক্ষমতা বজায় রেখেছে।  সুতরাং মিসাইল ভেসেল স্কোয়াড্রনে সূচনা ৫০ বছর ইতিমধ্যে পূর্তি হয়েছে ২১ সালে। কার্যত জাহাজ এবং স্কোয়াড্রনে লোকেদের এই বীরত্বপূর্ণ কাজের কারণেই তাদের কিলার খেতাব হিসাবে আখ্যায়িত করার পাশাপাশি ভারতীয় নৌ-বাহিনী দিবস হিসেবে ৪ঠা ডিসেম্বরকে ঘোষণা করে সরকার। 

১৯৭১ সালের যুদ্ধে ভারতের কাছে ৫০ তম বার্ষিকী চিহ্নিত হওয়ায়  এটাকে ” স্বর্নিম বিজয় বর্ষ” হিসেবে পালিত করার ঘোষণা করেছে ভারতীয় সরকার।  সাবাসি স্কোয়াড্রন কর্মীদের একটি মহাবীর চক্র,  সাতটি বীর চক্র এবং আটটি নৌসেনা পদকসহ যুদ্ধ সম্মান প্রদান করা হয়েছে। এই সম্মান নৌবাহিনীদের কাছে হত্যাকারীদের বীরত্বের সাক্ষ্য  বহন করে।

Leave a Reply

Your email address will not be published.