কুম্ভকর্ণ, হোয়াইট হাউস, তাজমহল। বোমের নাম গুলি এরকম কেন রেখেছিল ভারতবর্ষ?
নিউজ ডেস্কঃ ভারতের পরমানু শক্তিধর রাষ্ট্র হওয়া যে এক বিরাট বড় ইতিহাস তা হয়ত কমবেশি সকলেরই জানা। আর ভারতবর্ষের পরমানু শক্তিধর রাষ্ট্র হওয়ার ক্ষেত্রে সবথেকে বড় বাঁধা চীন বা পাকিস্তান নয় আজকের খুব কাছের মিত্র আমেরিকা ছিল। আর সেই আমেরিকার চোখকে ফাঁকি দিয়েই ভারতবর্ষ পরমানু শক্তিধর রাষ্ট্রে পরিনত হয়। আর সেই আমেরিকার রক্ত চক্ষুকে উপেক্ষা করতে একাধিক কাজ করতে হয়েছিল ভারতবর্ষকে।
কুম্ভকর্ণ, হোয়াইট হাউস, তাজমহল- এই নাম গুলিকে সারা জীবন মনে রাখবে আমেরিকা। বিশেষ করে তাদের হোয়াইট হাউস নামটি। কারন এই নামের কারনেই ভারত পৃথিবীর সবথেকে বিধ্বংসী অস্ত্র হাইড্রোজেন বোম্বের সফল পরীক্ষা করে।
ভারতকে পরমানু শক্তিধর রাষ্ট্রে পরিনত করতে ১৯৯৫ সালে আবারও পরমানু পরীক্ষা করার সিদ্ধান্ত নিয়েছিলেন প্রধানমন্ত্রী নরসীমা রাও। কিন্তু আমেরিকার অত্যাধুনিক স্যাটেলাইট কারনে তা জানাজানি হয়ে যায়। আর আমেরিকা এবং ইউরোপের রক্তচক্ষুকে উপেক্ষা করতে সেই পরীক্ষা বন্ধ করতে বাধ্য হয় ভারত।
অটল বিহারী বাজপেয়ী প্রধানমন্ত্রী হওয়ার পরে তিনি আবারও সিদ্ধান্ত নিয়েছিলেন এই পরীক্ষা করার, আর সেই কারনে তিনি এ পি জে আব্দুল কালামকে জিজ্ঞাসা করেছিলেন যে এই পরমানু পরীক্ষা করতে তাঁর কতসময় লাগবে? তিনি জানিয়েছিলেন যে তাঁর অনুমতি পেলে মাত্র ১ মাস সময় লাগবে। অনুমতি পাওয়ার পর কাজ শুরু করে দেন মিসাইল ম্যান।
এই পরীক্ষা করতে মত ছয়টি ডিভাইস ব্যবহার করা হয়েছিল দুটি ধাপে। একটি ছিল থার্মোনিউক্লিয়ার ডিভাইস বা হাইড্রোজেন বম্ব (ফিউসন বম্ব)। আর এই ডিভাইসের নাম রাখা হয়েছিল হোয়াইট হাউস, তবে কেন এমন নাম রাখা হয়েছিল তা আজও কারও জানা নেই, উল্লেখ্য আমেরিকার রাষ্ট্রপতির বাসভবনের নাম হোয়াইট হাউস। অন্যদুটি ফিশন বম্বের নাম ছিল তাজমহল এবং অন্যটির নাম ছিল কুম্ভকর্ণ (প্রথম সাব-কিলোটন বম্ব) ।বাকি তিনটি বম্বের কোড নাম NT-1,NT-2,NT-3 ।
অদ্ভুত ভাবে ১৯৭৪ সালের পারমাণবিক পরীক্ষা যেমন বুদ্ধ পূর্ণিমার দিন হয়েছিল, ঠিক তেমনভাবে ১৯৯৮ সালের সেই পরীক্ষা ও এক বুদ্ধ পূর্ণিমার দিন করা হয়, যা হয়েছিল বিকাল ৩.৪৫ থেকে।
বলে রাখা ভালো যে সাধারণ পারমাণবিক বোমা থেকে হাইড্রোজেন বম্ব অনেক গুন বেশি শক্তিশালী।বর্তমানে ভারত সহ আমেরিকা, রাশিয়া,ফ্রান্স,ইংল্যান্ড এবং চীনের কাছে এই বম্ব আছে।