ভারত

জানেন কি অতীতে কি শ্রীলঙ্কা ভারতের অংশ হতে চেয়েছিল?

ভারতের দক্ষিণ পূর্বে অবস্থিত শ্রীলঙ্কা কে ভারত মহাসাগরের লুকোনো মুক্তো বলা হয়। দি পার্ল অফ ইন্ডিয়ান ওশেন নামে খ্যাত শ্রীলঙ্কা শুধু যে তার অসাধারণ ভূপ্রকৃতি, জীব বৈচিত্র্য ও মূল্যবান জেম স্টোনের জন্য বিখ্যাত তাই নয় বরং চা উৎপাদন ও সিনামেন মানে ডাল, চিনি উৎপাদনের জন্যও খ্যাত। এটা জেনে আশ্চর্য হবেন যে ভারতের দক্ষিণ অংশ শ্রীলঙ্কার উত্তর ভাগের মধ্যে দূরত্ব মাত্র ৫৪ কিলোমিটার, এমনকী ভারতের আন্দামান নিকোবর দ্বীপপুঞ্জের দূরত্বও এর থেকে অনেক বেশী। অনেক ঐতিহাসিকদের মতে পূর্বে হাজার হাজার বছর পূর্বে ভারত ও শ্রীলঙ্কার মধ্যে ব্রিজের মাধ্যমে যোগাযোগ ছিল কিন্তু পরে সাগরে সেই ব্রিজ হারিয়ে যায়। শ্রীলঙ্কার উত্তর ভাগের বাসিন্দা তামিল জনগোষ্ঠী ভারতের তামিলনাড়ু থেকেই শীলঙ্কা গিয়ে বসতি গড়ে তুলেছে যার জন্য ভারত ও শ্রীলঙ্কা এই দুই দেশের সংস্কৃতি অনেকটা একই। শ্রীলঙ্কায় সবচেয়ে বেশী প্রচলিত যে ধর্ম তা হল বৌদ্ধ ধর্ম যা ভারত থেকেই শ্রীলঙ্কা তে গেছে। অতীতে ভারতের চোল ও পান্ডিয়া সাম্রাজ্য শ্রীলঙ্কা কে শাসন করেছে। এটা শুনে আপনাদের অনেকেরই মনে হতে পারে মাত্র কয়েক কিলোমিটার দূরে অবস্থিত শ্রীলঙ্কা কেনো ভারতের অংশ হল না। কী এমন কারন যার জন্য শ্রীলঙ্কা আলাদা দেশ? অতীতে কী শ্রীলঙ্কা ভারতের অংশ হতে চাইছিল? এবং ভবিষ্যতে কী শ্রীলঙ্কা ভারতের অংশ হবে? আজ এই ব্যাপারেই বিস্তারিত আলোচনা করব।

শ্রীলঙ্কা সম্পর্কে কিছু তথ্য জানা যাক:—-

** ভারতের মতই শ্রীলঙ্কায় জনপ্রিয় খেলা ক্রিকেট, তবে শ্রীলঙ্কার জাতীয় খেলা ভলিবল। অলিম্পিকে এখনও পর্যন্ত মাত্র দুটি পদক পেয়েছে দেশটি। এই দুটোই এসেছে অ্যাথলেটিকস থেকে।

** শ্রীলঙ্কায় ঠান্ডা পানীয়ের থেকে অনেক বেশি বিক্রি হয় এলা কিরি। এই এলা কিরি হল গরুর দুধ।

** শ্রীলঙ্কার জাতীয় পতাকা বিশ্বের মধ্যে অন্যতম সবচেয়ে পুরনো পতাকা।

** এশিয়ার অন্যতম উচৃচ শিক্ষিত দেশ হল শ্রীলঙ্কা। দেশটিতে শিক্ষিতের হার ৯২ শতাংশ। গোটা দেশে ১১টা বিশ্ববিদ্যালয় আছে।

** বিশ্বের সবচেয়ে বেশি চা রপ্তানিকারক দেশ হল শ্রীলঙ্কা। এছাড়াও  কফি, নারকেল, রাবার উৎপাদন ও রপ্তানিতে বিখ্যাত এই দেশ।

** শ্রীলঙ্কার জনসংখ্যার প্রায় ৭২ শতাংশ বুদ্ধ ধর্মাবলম্বী, ১২ শতাংশ হিন্দু, ৯ শতাংশ মুসলিম, ৭ শতাংশ খ্রিস্টান। ২০২১ সালের জনগননা অনুযায়ী শ্রীলঙ্কার মোট জনংখ্যা  প্রায় ২ কোটি ২৬ লাখ।

** বিশ্বের প্রথম মহিলা প্রধানমন্ত্রী নির্বাচিত হয় এই শ্রীলঙ্কা থেকেই। শ্রীমাভ বন্দেরনায়েক শ্রীলঙ্কার নির্বাচিত প্রথম মহিলা প্রধানমন্ত্রী। তাঁর মেয়ে চন্দ্রিকা কুমারাতুঙ্গা ১৯৯৪ থেকে ২০০৫ সাল পর্যন্ত রাষ্ট্রপতি হওয়ার আগে ১৯৯৪ সালের আগষ্ট থেকে ডিসেম্বর পর্যন্ত শ্রীলঙ্কার প্রধানমন্ত্রীও ছিলেন।

প্রথমেই এটা বিস্তারিত ভাবে জানব শ্রীলঙ্কা কে ভারতের অংশ হওয়া কেন উচিত ছিল? যে কোন দেশ তৈরি হয় মূলত তিনটি জিনিসের উপর ভিত্তি করে একই জাতি, ভাষা ও সংস্কৃতির উপর নির্ভর করে। ১৮ শতকে ইউরোপে সর্বদা এই আধুনিক রাষ্ট্রবাদের জন্ম হয়। জার্মানি, ইটালির মত দেশগুলো এই ভাবেই তৈরি হয়েছে, কারন এখানে একই ভাষা ও জাতির লোক বাস করে। নাহলে এর আগে বিভিন্ন সাম্রাজ্যে বিভিন্ন জাতি ও ধর্মের লোক বাস করত। বিশেষজ্ঞদের মতে দক্ষিণ এশিয়ায় ভারতের মত আধুনিক দেশের জন্ম এভাবেই হয়েছে। ব্রিটিশরা ভারতীয় উপমহাদেশে তাদের অজান্তেই দেশাত্মবোধ গড়ে তুলেছিল। তবে জাতি, ধর্ম ও সংস্কৃতি এক থাকলেও সবসময় এক দেশ তৈরি হয় না যার প্রধান উদাহরণ শ্রীলঙ্কা। তবে হিন্দু ধর্মের মহাকাব্য রামায়নে শ্রীলঙ্কার উল্লেখ পাওয়া যায়। এখানে শ্রীলঙ্কা কে লঙ্কা বলা হয়েছে। এখানের রাজা রাবন সীতা মাতাকে বন্দি করে রেখেছিল। অযোধ্যার রাজা দশরথ পুত্র ভগবান শ্রী রামচন্দ্র বানর সেনা নিয়ে সমুদ্রের উপর সেতু বানিয়ে লঙ্কায় পৌঁছে রাবন কে বধ করে সীতা মা কে উদ্ধার করেন। তাই অনেকেই বলেন যেহুতু শ্রী রাম রাবন কে পরাজিত করেছিলেন সুতরাং সেই হিসাবে শ্রীলঙ্কা ভারতের হওয়া উচিত। 

রামায়ন ছাড়াও ভারত ও শ্রীলঙ্কার মধ্যে ঐতিহাসিক ভাবেও অনেক সম্পর্ক আছে। যদি আমরা ইতিহাসের দিকে ফিরে তাকাই দেখতে পাবো প্রাচীনকালে যার শিকার করত, ভারতে এমন বিশেষ শ্রেনীর মানুষদের ভেদাস বলা হত, তারা কালক্রমে ভারত থেকে শ্রীলঙ্কা বসতি স্থাপন করে। এইসময় মানুষ আফ্রিকা থেকে ভারগীয় উপমহাদেশে বসতি স্থাপনের জন্য আসছিল। শ্রীলঙ্কায় এখনও ভেদাসরা রয়েছে। বলা হয় এই ভেদাসরা শ্রীলঙ্কার প্রথম মানুষ প্রজাতি ব্যালেনগোডা ম্যানের বংশ। এছাড়াও পঞ্চম শতকে উত্তর ভারত থেকে ইন্দো-আরিয়ান জাতির মানুষ শ্রীলঙ্কা তে বসতি স্থাপনের জন্য যেতে শুরু করে, ইতিহাসে এর সুস্পষ্ট প্রমান রয়েছে। এই ইন্দো-আরিয়ান মূলত ইন্দো-ইয়োরোপীয়ান গবাদি পশু পরিপালকদের জাতিভুক্ত যারা ২০০০ খ্রিষ্টপূর্বাব্দে তে মধ্য এশিয়া থেকে দক্ষিণ এশিয়া তে বসতি স্থাপনের জন্য আসে। শ্রীলঙ্কার ঐতিহাসিক কাহিনী মহাবামসা ও দীপাবামসা তে এটা উল্লেখ পাওয়া যায় যে ৫০০ খ্রিষ্টপূর্বাব্দে তে ভারতের দক্ষিণ বঙ্গের ভাঙ্গা নামক জায়গা থেকে রাজকুমার বিজয় ও তার ৭০০ অনুগামী শ্রীলঙ্কায় গিয়ে বসতি স্থাপন করে। রাজকুমার বিজয়ই ছিল প্রথম সিংহলী রাজা। এখন প্রশ্ন আসে সিংহলী কারা? ইন্দো – আরিয়ান জাতি ও স্থানীয় শ্রীলঙ্কান মানুষদের যৌথ জাতি এই সিংহলী যারা এখন শ্রীলঙ্কার জনসংখ্যার সিংহভাগ। 

১০০০ থেকে ৫০০ খ্রিষ্টপূর্বাব্দের মধ্যে শ্রীলঙ্কার সাথে ভারতের দক্ষিন ভাগের অনেক ভাল সম্পর্ক ছিল। দুই দেশের মেগালিথিক বিউরিয়ালস, মাটির বাসনপত্র, কৃষিকাজ, লোহার টেকনোলজি একই রকম ছিল। ৩০০ খ্রিষ্টপূর্বাব্দ থেকে ১২০০ খ্রিষ্টাব্দ পর্যন্ত ভারতের পূর্ব, মধ্য ও দক্ষিণ ভাগ থেকে তামিল জনসংখ্যা ক্রমশ শ্রীলঙ্কা তে যেতে শুরু করে যারা দ্রাবিড় ভাষা বলত। এই তামিল জনগোষ্ঠী শ্রীলঙ্কার মোট জনসংখ্যার ১৫ শতাংশ। মূলত উত্তর ও পূর্ব শ্রীলঙ্কাতেই এই তামিল জনগোষ্ঠী পাওয়া যায়। আগেই বলা হয়েছে যে শ্রীলঙ্কার দীপাবমসা অনুযায়ী বৌদ্ধ ধর্ম ভারত থেকেই সেখানে গেছে। ৪০০ খ্রিষ্টাব্দতে শ্রীলঙ্কার রাজা দিবানামাপিয়া তিসার রাজত্বকালে ভারতের সম্রাট অশোকের পুত্র মাহিন্দ্রা শ্রীলঙ্কায় বৌদ্ধ ধর্ম প্রচলন করে। তখন বৌদ্ধ গাছের একটি অংশ ভারত থেকে শ্রীলঙ্কা নিয়ে যাওয়া হয়েছিল এবং অসংখ্য বৌদ্ধ মঠ তৈরি করা হয়েছিল। বর্তমানে শ্রীলঙ্কার ৭০.২ শতাংশ জনগোষ্ঠী বৌদ্ধ ধর্ম অনুসরণ করে। ১০০০ খ্রিষ্টাব্দতে দক্ষিণ ভারতের বিখ্যাত চোল সাম্রাজ্যের রাজা রাজা রাজা চোলা বিশাল সেনা নিয়ে শ্রীলঙ্কা আক্রমণ করে এবং শ্রীলঙ্কার অনুরাধাপুরা সাম্রাজ্যকে দখল করে। অনুরাধাপুরা সাম্রাজ্য ছিল শ্রীলঙ্কার প্রথম স্থাপিত রাজত্ব। ফলে শ্রীলঙ্কা চোল সাম্রাজ্যের অন্তর্ভুক্ত হয়। চোল সাম্রাজ্যের অধীনে সিংহলি রাজারা শ্রীলঙ্কা শাসন করত। এরপর ১৩ শতকের দিকে চোল সাম্রাজ্যের পতনের পর দক্ষিণ ভারতের পন্ডিয়া সাম্রাজ্য শ্রীলঙ্কা আক্রমণ করে সেখানকার জাফনা রাজত্বের পতন ঘটিয়ে শ্রীলঙ্কা দখল করে। কিন্তু এরপরে তেমন কোন বড় ভারতীয় সম্রাট বর শ্রীলঙ্কা দখল করতে পারে নি কারন দক্ষিণ ভারতে এরপর আর বড় কোন রাজনৈতিক শক্তির উত্থান হয় নি। এরপর ইউরোপের শক্তিগুলি নিজেদের সাম্রাজ্য বিস্তার করতে শুরু করে। ভারত ও শ্রীলঙ্কা বহুদিন ধরেই ব্রিটেন, পর্তুগাল ও ডাচদের অধীনে ছিল। অনেক ঝামেলার পর ভারত ও শ্রীলঙ্কা শেষপর্যন্ত ব্রিটিশদের অধীন হয়। ব্রিটিশ সংস্কৃতি দুই দেশেই ছড়িয়ে পড়ে। চা শিল্প, রেলওয়ে নেটওয়ার্ক দুই দেশে ব্রিটিশরাই শুরু করেছিল। এছাড়াও বর্তমান দিনে দাড়িয়ে যদি লক্ষ করা হয় তাহলে দেখা যাবে ভারত ও শ্রীলঙ্কা উভয়েই গনতান্ত্রিক দেশ। দুই দেশেই তামিল ভাষার প্রচলন আছে। দক্ষিণ ভারতের সাথে বিশেষ করে তামিলনাড়ু ও কেরলার সাথে শ্রীলঙ্কার খাবারের ব্যাপক মিল রয়েছে। দুই দেশেই হিন্দু ও বৌদ্ধ ধর্মালম্বী বর্তমান। এসব দেখে স্বাভাবিক ভাবে মনে হতেই পারে ভারত ও শ্রীলঙ্কা কেনো এক দেশ নয়?? উভয়ের একদেশ হওয়াই উচিত ছিল।

এবার দেখা যাক ভারত ও শ্রীলঙ্কা কেনো একদেশ হল না। প্রথমেই হচ্ছে সাগর দ্বারা বেষ্টিত দ্বীপ রাষ্ট্র শ্রীলঙ্কা খুব কম সময়ই বিদেশি শাসকদের অধীনে ছিল। হ্যাঁ চোল ও পান্ডিয়ারা শ্রীলঙ্কা দখল করেছিল কিন্তু তখনও স্থানীয় সিংহলি রাজারাই রাজত্ব করত শ্রীলঙ্কা। ইন্দো- আরিয়ান জাতিও এখানে এসে স্থানীয়দের সাথে মিশে গিয়ে সিংহলী জাতি হয়েই রয়ে গেছে। ব্রিটিশরাও ভারত ও শ্রীলঙ্কা আলাদা আলাদা ভাবেই শাসন করেছে সুতরাং শ্রীলঙ্কার মানুষ কখনও চায়নি অন্য কোন দেশের অধীনে থাকতে। দ্বিতীয়ত শ্রীলঙ্কা সিংহলী উপজাতির দেশ। ভাষা, ধর্ম ও খাদ্যের ব্যাপারে শ্রীলঙ্কার সাথে ভারতের মিল থাকলেও শ্রীলঙ্কানরা স্থানীয় সিংহলি সরকারের অধীনেই থাকতে চায়। তৃতীয়ত ব্রিটিশ শাসনের পূর্বে ভারতের বিভিন্ন রাজ্যে বিভিন্ন রাজবংশ রাজত্ব করত। ব্রিটিশরা গোটা ভারতকে এক করে শাসন করেছিল এর থেকেই অখন্ড ভারতের সৃষ্টি হয়। তবে ব্রিটিশ শাসনেও ভারতের বিভিন্ন রাজ্যের মধ্যে ঝামেলা তৈরি হয়েছিল, অনেক রাজ্য স্বাধীন দেশ তৈরি করতে চাইছিল। যার জন্য পাকিস্তান কে তো আলাদা দেশই করে দিতে হয়, একই কারনে মায়ানমার, নেপাল ও ভুটানকেও আলাদা দেশ হতে হয়। ভারতের লৌহমানব খ্যাত সর্দার বল্লভভাই প্যাটেলকেও অনেক কষ্ট করে ভারতের ঐক্য রক্ষা করতে হয়েছিল। এমন পরিস্থিতি তে শ্রীলঙ্কা যে ভারতের সাথে যুক্ত হবে এটা ভাবাও ভুল। চতুর্থত এটা সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ কারন, ১৯৮০ সালের আগে শ্রীলঙ্কা ও ভারতের মধ্যে দারুন সম্পর্ক ছিল তবে ১৯৮৩ সালে শুরু হওয়া শ্রীলঙ্কান গৃহযুদ্ধ সব হিসাব উল্টে দেয়। লিবারেশন টাইগারস অফ তামিল এলাম বা এলটিটি নামে নামে একটি গোষ্ঠী উত্তর ও পূর্ব শ্রীলঙ্কায় বিদ্রোহ শুরু করে যাদের লক্ষ ছিল স্বাধীন এলাম নামে একটি তামিল দেশ তৈরি। বলা হয় ইন্দিরা গান্ধীর নেতৃত্বে ভারতের সিকিউরিটি এজেন্সি র এবং তামিলনাড়ু পুলিশ এই এলটিটিট তৈরি করে যা নিয়ে শ্রীলঙ্কার সাথে ভারতের সম্পর্ক খারাপ হয়। তবে রাজিব গান্ধী কে হত্যার পর এলটিটিকে জঙ্গি সংগঠন ঘোষনা করে ভারত, এরপর গৃহযুদ্ধ শেষ হয় শ্রীলঙ্কায়। ভারত ও শ্রীলঙ্কার মধ্যে শান্তিচুক্তি হয়। বর্তমানে শ্রীলঙ্কায় চীনের প্রভাব বাড়ছে ক্রমশ। এসব বিভিন্ন কারনে অদূর ভবিষ্যতেও শ্রীলঙ্কার ভারতে যুক্ত হবার কোন সম্ভবনা নেই।

আরও একটা বেশ মজার তথ্য দিই। আপনারা লক্ষ্য করে দেখবেন ভারতের মানচিত্রে শ্রীলঙ্কা কে দেখানো হয় কিন্তু ভারতের অন্যান্য প্রতিবেশী দেশ যেমন বাংলাদেশ, নেপাল, ভুটান, মায়ানমার, পাকিস্তান, চীন কে দেখানো হয় না। এর কারন টা জানেন কী?? এর পেছনে আছে ইউনাইটেড নেশন বা জাতি সংঘের সামুদ্রিক আইন। ১৯৫৬ সালে জাতিসংঘ কনফারেন্স অন দি ল অফ সী নামে একটি সম্মেলন করে যার উদ্দেশ্য ছিল আন্তর্জাতিক সামুদ্রিক আাইন ও সীমানা নির্নয় করা। ১৯৮২ সাল পর্যন্ত মোট তিনটি সম্মেলন করা হয়। এখানে নিয়ম করা হয়, যে কোন দেশের ২০০ নটিক্যাল মাইলের মধ্যে অন্য কোন দেশ অবস্থিত হলে সেই দেশ কে সেই দেশটির মানচিত্রে রাখা বাধ্যতামূলক। ২০০ নটিক্যাল মাইল মানে প্রায় ৩৭০ কিলোমিটার। ভারতের ধনুশকোটি থেকে শ্রীলঙ্কার দূরত্ব মাত্র ১৮ নটিক্যাল মাইল, যার জন্য ভারতের মানচিত্রে শ্রীলঙ্কা কে রাখা বাধ্যতামূলক, আন্তর্জাতিক আইন অনুযায়ী।

Leave a Reply

Your email address will not be published.