ভারত

ভারতের মহাকাশ গবেষনায় বেসরকারি সংস্থা গুলো কেন দ্রুত এগিয়ে আসছে?

অগ্নিকুল নামটি হিন্দি ও সংস্কৃত শব্দ থেকে নেওয়া হয়েছে যার অর্থ আগুন। ২০১৭ সালে এই সংস্থাটি তৈরি হয়। অগ্নিবান রকেটের সফল উৎক্ষেপন প্রমান করে ভারতের মহাকাশ গবেষনায় বেসরকারি সংস্থাগুলো কত দ্রুত এগিয়ে আসছে। 

অগ্নিকুল কসমসের তৈরি একটি অগ্নিবান রকেটের এটি একটি পরীক্ষা মূলক সাব অর্বিটাল লঞ্চ ছিল। যদি পৃথিবীর চারদিকে একবার প্রদক্ষিন করে আসা হয় তাকে এক কক্ষপথ বলা হয়। কিন্তু পৃথিবী পৃষ্ঠ থেকে পৃথিবীর কক্ষপথের কোনও এক নির্দিষ্ট কেন্দ্রে রকেট উৎক্ষেপনকে সাব অর্বিটাল লঞ্চ বলা হয়। অন্ধ্রপ্রদেশের শ্রীহরিকোটার সতীশ ধাওয়ান মহাকাশ কেন্দ্র থেকে ইসরো তাদের সমস্ত রকেট উৎক্ষেপন করে। এই মহাকাশ কেন্দ্রেই অগ্নিবান কসমসকে একটি আলাদা উৎক্ষেপন স্থান দেওয়া হয়েছে, সেখান থেকেই এই রকেট লঞ্চ করা হয়েছে। এটি দেশের প্রথম বেসরকারি লঞ্চ প্যাড। এই লঞ্চ প্যাডের নাম রাখা হয়েছে ধনুশ। এর আগে ভারতের প্রথম বেসরকারি রকেট বিক্রম এস উৎক্ষেপন করেছিল স্কাইরুট নামে একটি সংস্থা ২০২২ সালের নভেম্বর মাসে। তবে স্কাইরুট ইসরোর লঞ্চ প্যাড ব্যবহার করেছিল বিক্রম এসের জন্য। অগ্নিবান রকেটের মধ্যে বিশ্বের প্রথম থ্রিডি প্রিন্ট সেমি ক্রায়োজেনিক অগ্নিলেট ইঞ্জিন ব্যবহার করা হয়েছে। ভারতের বিখ্যাত শিক্ষা গবেষনা কেন্দ্র আইআইটি মাদ্রাজ অগ্নিকুল কসমসকে সাহায্য করেছে এই মিশনে। 

আমেরিকাতে যেমন নাসার পাশাপাশি বেসরকারি মহাকাশ গবেষনা সংস্থা রয়েছে এলন মাস্কের স্পেসএক্স ঠিক তেমনই ভারত সরকারও দেশে মহাকাশ গবেষনা ক্ষেত্রে বেসরকারি সংস্থাগুলোর বিনিয়োগের জন্য একাধিক পদক্ষেপ নিয়েছে। যে অগ্নিবান রকেটের পরীক্ষা করা হয়েছে সেটি একটি স্টেজ বিশিষ্ট ছিল। কিন্তু যখন সম্পূর্ন অগ্নিবান রকেট তৈরি হয়ে যাবে তখন এটি দুই স্টেজ বিশিষ্ট রকেট হবে যেটি ৩০০ কিলোগ্রাম পেলোড নিয়ে ৭০০ কিলোমিটার পর্যন্ত কক্ষপথে যেতে সক্ষম হবে। ইসরো তাদের জিএসএলভি রকেটে ক্রায়োজেনিক ইঞ্জিন ব্যবহার করে যেখানে তরল অক্সিজেনকে জ্বালানি হিসাবে ব্যবহার করা হয় কিন্তু অগ্নিবানে দেশের প্রথম সেমি ক্রায়োজেনিক ইঞ্জিন ব্যবহার করা হয়েছে যেখানে তরল ও গ্যাসের জ্বালালির মিশ্রন রয়েছে। 

অগ্নিবান রকেটে ঠান্ডা তরল অক্সিজেন ও অ্যাভিয়েশন টার্বাইন ফুয়েলের মিশ্রনকে জ্বলাানি হিসাবে ব্যবহার করা হয়েছে। বৃহস্পতিবার অগ্নিবান রকেট পরীক্ষার সময় এটি দুই মিনিট ওড়ার পর বঙ্গোপসাগরে এসে পড়ে। আগামী দিনে ভারতের মহাকাশ গবেষনার ক্ষেত্রে যেসব মিশন রয়েছে তাদের মধ্যে সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ন দুটি মিশন হচ্ছে ২০৩৫ সালের মধ্যে নিজস্ব মহাকাশ স্টেশন তৈরি করা এবং ২০৪০ সালের মধ্যে চাঁদে প্রথম ভারতীয় মহাকাশচারী পাঠানো।

Leave a Reply

Your email address will not be published.