ভারত

ইংল্যান্ড, আমেরিকার কারনেই ভারতবর্ষের দেশীয় প্রযুক্তির পঞ্চম প্রজন্মের যুদ্ধবিমান একটিভ নেই

নিউজ ডেস্কঃ একটা সময় ছিল যখন ভারতবর্ষকে আমেরিকা এবং ইংল্যান্ডের নোংরা রাজনীতির স্বীকার হতে হয়েছিল। বিশেষ করে ৭০ বা ৮০ র দশকের দিকে ভারতবর্ষের সামরিক ক্ষেত্রে বিরাট উন্নয়নের বাঁধা ছিল এই আমেরিকা এবং রাজনীতি। নইলে হয়ত আজ ভারতের হাতে দেশীয় প্রযুক্তির পঞ্চম প্রজন্মের যুদ্ধবিমান থাকতে পারত।

১৯৭০ সালের দিকে ভারতের বায়ুসেনার জন্য নতুন যুদ্ধবিমানের দরকার ছিল আর সেই কারনে ভারতের বায়ুসেনা পুরোনো সুখোই-৭, ইলেকট্রিক ক্যানবেরা, ভ্যাম্পায়ার ট্রেনার, মিগ-২১ FL, হান্টার এবং HF-24 মারুতের মতো যুদ্ধবিমানগুলিকে সুপারসনিক ট্যাকটিক্যাল এয়ারস্ট্রাইক এয়ারক্রাফট (TASA), ডিপ পেনিট্রেশন স্ট্রাইক এয়ারক্রাফট (DPSA), শর্ট টেকঅফ এন্ড ল্যান্ডিং (STOL) ট্রান্সপোর্ট এয়ারক্রাফট এবং অত্যাধুনিক ট্রেনার যুদ্ধবিমান দিয়ে রিপ্লেস করতে চেয়েছিল।

DPSA কে যুদ্ধবিমান তৈরির দায়িত্ব দেওয়া হয়েছিল কারন ভারতের হ্যাল কে এর আগে HF-24, HT-2 এর মত যুদ্ধবিমান তৈরি করেছিল। আর সেই কারনে হ্যাল প্রথমে ঠিক করেছিল F-4 ফ্যান্টমের মত যুদ্ধবিমান তৈরি করবে, তবে কিন্তু সমস্যা ছিল অনেক, কারন হ্যালের কাছে এত বিশাল পরিকাঠাম এবং দক্ষতা ছিল না।

আর সেই কারনে বায়ুসেনা ঠিক করেছিল যে মারুত প্ল্যাটফর্মের উপর ভিত্তি করে একটি অত্যাধুনিক গ্রাউন্ড অ্যাটাক(ভূমিতে আক্রমণ করা যায়) যুদ্ধবিমান তৈরি করবে। ১৯৭০-৭৬ পর্যন্ত সময় দেওয়া হয়েছিল হ্যালকে এই বিমান তৈরির জন্য।

১৯৭৩ সালে পশ্চিম জার্মানি ভারত কে সাহায্য করতে এগিয়ে এসেছিল। তারা ভারতের সাথে যুক্ত ভাবে একটি অত্যাধুনিক যুদ্ধবিমান তৈরি করতে রাজি পর্যন্ত হয়ে যায়। তবে ইঞ্জিন হিসাবে তারা বেছে নিয়েছিল রোলস রয়েসের RB-199-34R ইন্জিন। অর্থাৎ সেইসময় ইংল্যান্ডের জাগুয়ার এর যোগ্য প্রতিদ্বন্দ্বী তৈরি করতে চেয়েছিল ভারতের বায়ুসেনা। তবে সেইসময় ইংল্যান্ড এবং আমেরিকার চাপ সৃষ্টি করেছিল পশ্চিম জার্মানির উপর। এবং তাদের বাধ্য করা হয়েছিল এই প্রজেক্ট ছেড়ে দিতে। পাশাপাশি রোলস রয়েস ও RB-199-34R ইন্জিন দিতে অস্বীকার করে। আর তাদের এই নোংরা রাজনীতিকে ঢাকা দেওয়ার জন্য বলা হয় যে ভারত সোভিয়েত ব্লকের দেশ তাই ভারত কে কোনোরূপ সাহায্য করা হবে না।

বিশ্ব রাজনীতির চাপে পড়ে এই প্রজেক্ট বন্ধ হয়েছিল সেইসময় এবং এই ঘটনা ভারতের নিজস্ব অ্যাভিয়েশন ইন্ডাস্ট্রির জন্য বিরাট ক্ষতি করেছিল। পরে ভারতবর্ষের বায়ুসেনা বাধ্য হয়ে জাগুয়ার যুদ্ধবিমান ক্রয় করেছিল।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *