ভারত

বিপাকে ভারতীয় সেনা। সীমান্তে লাল চোখ দেখাচ্ছে শত্রু। তারই মধ্যে হরতাল দেশীয় কোম্পানির

নিউজ ডেস্কঃ ভারতবর্ষের দেশীয় সামরিক সরকারি প্রতিষ্ঠান গুলি যে কিছু ক্ষেত্রে ভারতীয় যুদ্ধাস্ত্র দেওয়ার ক্ষেত্রে অপদস্ত করে থাকে তা একাধিকবার উঠে এসেছে বিভিন্ন রিপোর্টে। এবং সেই কারনে দেশের বাইরের শত্রুর থেকে দেশের ভিতরের শত্রুদের কাছে বেশি পরিমাণে অপদস্ত হতে হয়।

আগামী ১২ ই অক্টোবর OFB এর ইউনিয়ন এর ৪১ টি কারখানার আশি হাজার কর্মীদের অনির্দিষ্টকালের জন্য হরতালে যেতে বসেছে। অর্থাৎ ঐ দিন থেকে OFB এর সবকটি কারখানায় অনির্দিষ্টকালের জন্য কাজ বন্ধ থাকবে।

এমনই একটা সময় বেছে নিয়েছে স্ট্রাইক করার জন্য,যখন ভারতের সাথে চীনের সীমান্ত সমস্যা চূড়ান্ত পর্যায়ে পৌছিয়ে গিয়েছে। অপরদিকে আরেক প্রতিবেশী পাকিস্তান চীনের সাথে তাল মিলিয়ে সীমান্তে গতিবিধি বৃদ্ধি করেছে। আর এমন সময়ে আসন্ন শীত উপলক্ষে যখন ভারতীয় আর্মির প্রয়োজন প্রচুর পরিমাণে যুদ্ধ রসদের,ঠিক তখনই OFB অনির্দিষ্ট কালের জন্য কাজ বন্ধ রাখার সিদ্ধান্ত নিয়েছে। অর্থাৎ OFB সরাসরি দেশের কঠিন সময়কে তাদের নিজস্ব স্বার্থসিদ্ধ করার জন্য বেছে নিয়েছে। তারা এই মূহুর্তে সরাসরি সরকার কে চ্যালেঞ্জ করছে যে– “তোমরা আমাদের দাবী মেনে নাও,নাহলে আমরা সেনাকে গোলা-বারুদ, প্রভৃতি অন্যান্য সরঞ্জাম দেওয়া বন্ধ করে দেব, যা এই মূহুর্তে আর্মির সবচেয়ে বেশি প্রয়োজন। কারণ চীন সীমান্তে লাল চোখ দেখাচ্ছে,পাকিস্তান তার সুযোগ নিয়ে অতিরিক্ত লাফালাফি করছে, এই সময়ে আমাদের দাবী মেনে নিতে তোমরা বাধ্য তা হোক ন্যায্য বা অন্যায্য”।

প্রায় ২১৯ বছরের পুরনো এই সংস্থা ভারতের প্রধান অস্ত্র নির্মাণ সংস্থা। মাত্র একশ বছর আগেও এই OFB ছিল পৃথিবীর অন্যতম সর্বশ্রেষ্ঠ অস্ত্র নির্মাণ সংস্থা। ইংরেজ আমলে প্রথম বিশ্বযুদ্ধের সময় OFB এর তৈরী অস্ত্র দিয়ে যুদ্ধ হয়েছে এশিয়া থেকে ইউরোপে। অথচ আজ এই সংস্থা দেশের সসস্ত্র বাহিনীর ওপর এক প্রকার বোঝা। OFB এর তৈরী আশি শতাংশ প্রোডাক্টের ক্রেতা ভারতীয় আর্মি,আর এটা অনেকটা বাধ্য হয়েই আর্মিকে OFB এর প্রোডাক্ট ব্যবহার করতে হয়। এমনটা নয় যে OFB এর সব প্রোডাক্ট ই খারাপ,কিন্তু অধিকাংশ ক্ষেত্রেই ভারতীয় আর্মিকে OFB এর প্রোডাক্টের সাথে নিজেদের মানিয়ে নিতে হয়। অধিকাংশ ক্ষেত্রেই মানহীন OFB এর প্রোডাক্ট শত চেষ্টা করেও ভারত নিজেদের বন্ধু দেশ গুলির কাছে বিক্রি করতে পারে না। অথচ সেই মানহীন প্রোডাক্ট ভারতীয় আর্মিকে বেশি দামে ক্রয় করতে হয় চাপে পরে প্রায় বাধ্য হয়ে। অথচ ভারতীয় আর্মির কাছে ঐ এক‌ই প্রোডাক্টের গুনগত মানে ভালো অপশন থাকে।

স্বাধীনতার বাহাত্তর বছর ধরে যখন এভাবেই OFB এর দোকান চলছিল,তখন তাদের কোন সমস্যা হচ্ছিল না। কিন্তু সরকার যখন দেশের সামরিক বাজরের স্বার্থে অন্যান্য দেশীয় বেসরকারি কোম্পানি গুলিকে প্রোমোট করছে,বাজারে প্রতিযোগিতা সৃষ্টি করছে, তখন তা বিরাট সমস্যার কারণ হয়ে দাড়িয়েছে OFB এর কাছে। তাদের এত দিনের সাজানো গোছানো দোকানে এসে আঘাত করেছে সরকারের প্রোমোশনে উঠে আসা বিভিন্ন দেশীয় বেসরকারি অস্ত্র নির্মাণ সংস্থা। আর তাই OFB নিজেদের অক্ষমতার কথা বুঝে নিয়ে, ঐ সমস্ত সংস্থার সাথে গুনগত মানের লড়াইয়ে না গিয়ে সরাসরি সরকারকে অপদস্ত করছে। আর তারা এতটাই নীচু মানের একটা পদক্ষেপ নিয়েছে এমন একটা সময়ে,যখন দেশের সবচেয়ে বেশি দরকার ছিল তাদের। OFB এর দরকার ছিল আর্মির,যখন চীন-পাকিস্তান একত্রে সীমান্তে লাল চোখ দেখাচ্ছে।OFB জানে এখন সরকারের কাছে কোন দ্বিতীয় অপশন নেই। কারণ যে পরিমাণ গোলা বারুদ ভারতীয় আর্মির দরকার তা সবে উঠে আসা দেশীয় সংস্থা গুলির অল্প সময়ে জোগান দেওয়ার মতো সক্ষমতা এখনো গড়ে ওঠে নি। আর সরকার বিদেশ থেকেও এমার্জেন্সী এত পরিমাণ গোলাবারুদ এর সরবরাহ করতে পারবে না, যেটা OFB তাদের বিরাট কর্মী বলের সাহায্যে করতে পারে। আর তাই এটাই সঠিক সময় সরকারকে অপদস্ত করার,দেশের কি স্বার্থ সেটা পরে,আগে নিজেদের স্বার্থ। আর এই ব্যাপারে OFB এর ইউনিয়ন সহজেই বিরোধী দল গুলির ভালো সাপোর্ট পেয়ে যাবে। নোংরা রাজনৈতিক ষড়যন্ত্রের সমর্থকের অভাব নেই ভারতবর্ষে। এবার দেখার বিষয় ভারত সরকার কি করে।

Leave a Reply

Your email address will not be published.