পরিচয় দিতে গেলে গায়ে কাঁটা দেবে উইং কম্যান্ডার বরুন সিং এর। কেন জানেন?
নিউজ ডেস্কঃ যুদ্ধজাহাজ থেকে শুরু করে যুদ্ধবিমান। একাধিক বিধ্বংসী অস্ত্র রয়েছে ভারতবর্ষের হাতে। ভবিষ্যতে যাতে ভারতবর্ষের সেনাবাহিনী থেকে শুরু করে নৌবাহিনী এবং বিমানবাহিনীর ক্ষমতা বিরাটভাবে বাড়ানো যায় সেই কথা মাথায় রেখে বিভিন্ন ধরনের দেশীয় যুদ্ধাস্ত্রকে সার্ভিসে নিয়ে আসা হচ্ছে। তবে সবথেকে বড় ব্যাপার হল এই যে দেশীয় যুদ্ধাস্ত্র গুলি সার্ভিসে আসলেও বেশ কিছু খামতি থেকে যায় প্রথমাবস্থায় আর সেই জিনিস গুলির উন্নয়ন বিরাটভাবে প্রয়োজন হয়ে পরে। তবে কখনও ভেবে দেখেছেন যে যদি যুদ্ধবিমান মাঝ আকাশে সমস্যায় পরে তখন পাইলটদের জীবন কতোটা ঝুঁকিপূর্ণ হয়ে ওঠে! তবে ভারতবর্ষের এমন কিছু যোদ্ধা আছেন যারা নিজের জীবন বাজি রেখে দেশের হয়ে লড়ে গেছেন বা তাদের জন্যই আজ দেশের বিভিন্ন ক্ষেত্রের অনেক উন্নয়ন চোখে পরেন। দেশের তেমনি এক যোদ্ধা হলেন উইং কম্যান্ডার বরুন সিং। শৌর্য চক্র পেয়েছেন তিনি।
এই উইং কম্যান্ডারের পরিচয় দিতে গেলে গায়ে কাঁটা দেবে। আর এই উইং কম্যান্ডোর বরুন সিং এর কারনেই ভারতবর্ষের দেশীয় যুদ্ধবিমান তেজাসের বেশ উন্নতি হয়েছে। আসলে ২০২০ সালের ১২ অক্টোবর তেজাসের ফ্লাইট নেন তিনি। সবকিছু ঠিক থাকলেও অল্টিটিউড বারার সাথে সাথে তিনি শরীরের ভীষণভাবে অস্বস্তি বোধ করে, এক্ষেত্রে জানিয়ে রাখা ভাল যে অল্টিটিউড বারার সাথে সাথে বায়ুর চাপ বিরাটভাবে কমতে থাকে আর সেই সময় পাইলটের শরীরে যাতে চাপ না পরে সেই কারনে যুদ্ধবিমানে বিশেষ একটি সিস্টেম ইন্সটল করা থাকে যাকে “ককপিট প্রেসারাইজেশান সিস্টেম”। এই সিস্টেম ককপিটে এয়ার প্রেসার ঠিক রাখে।
বরুন সিং বুঝতে পেরেছিলেনে যে সিস্টেম ফেল আছে, আর সেই সময় তিনি যুদ্ধবিমানটিকে লো অল্টিটিউডে নিয়ে আসতে শুরু করেন। অল্টিটিউড ড্রপ করার সাথে সাথে তেজাসের ফ্লাইট কনট্রোল সিস্টেম ও ফেল হয়ে যায়। যা ছিল বিরাট বাজে ব্যাপার। এই কনট্রোল সিস্টেম ফেল করার সাথে সাথে তেজাসের কনট্রোল সিস্টেম পুরো হাতের বাইরে চলে গেছিল। বিমানটি আপ ডাউন করতে শুরু করে, দ্রুততার সাথে অল্টিটিউড ড্রপ করতে শুরু করে দেয়। ফলে পাইলটের শরীরে বিরাটভাবে চাপ আসতে শুরু করে দেয়। আর সেই কারন বশত পাইলট শারীরিক ভাবে দুর্বল হতে শুরু করে। তবে তিনি হার না মেনে তেজাসকে কনট্রোলে নিয়ে আসেন। কিন্তু তেজাস ১০,০০০ ফুট উচ্চতাতে এসে আবার নিয়ন্ত্রণের বাইরে চলে যায়, বিপদজনকভাবে মাটিরদিকে যেতে শুরু করে দেয়। পাইলট জানতেন যে এবার ইজেক্ট না করলে প্রান সংশয় হতে পারে, তবে নীচে জনবসতি থাকার কারনে তা না করে এক যোদ্ধার পরিচয় দেন এবং বিমানকে অনেক কষ্টে নিজের নিয়ন্ত্রণে নিয়ে আসেন এবং সেফ ভাবে রানওয়েতে ল্যান্ড করান।
এই দুঃসাহসিক কাজ করার ফলে তিনি শুধু বীরত্বের পরিচয় দেননি পাশাপাশি যুদ্ধবিমানটিকে ধ্বংসের হাত থেকে বাঁচিয়ে ছিলেন।
তেজসেই এই ফ্লাইটে পাইলট সঠিক ভাবে এই ফ্লাইট কন্ট্রোল সিস্টেম ফেইলিওর এবং ককপিট প্রেসারাইজিং সিস্টেম ফেইলিওরের কারন চিহ্নিত করে। যার ফলে ভেতরের একাধিক পরিবর্তন করে তেজসের এই সমস্যাকে সঠিক ভাবে দূর করা সম্ভব হয়। অর্থাৎ ভবিষ্যতে এমন কারনে একাধিক পাইলটের জীবন বাঁচবে বরুন সিং এর জন্য। কিছুমাস আগেই হেলিকপ্টার ক্রাসে বীরগতি প্রাপ্ত হয়েছেন এই বীর পাইলট।