নিউজ ডেস্কঃ ভারতীয় প্রতিরক্ষা ব্যবস্থাগুলির মধ্যে একটি হল নৌবাহিনী। এই নৌবাহিনীর সেনারা ভারতের জল সীমানাকে রক্ষা করে চলেছে দশকের পর দশক। এই নৌসেনার সম্পর্কে রয়েছে কিছু তথ্য যা বেশিরভাগ মানুষই জানেন না।
১.বর্তমান দিনে ইন্ডিয়ান নেভি হিসাবে স্বীকৃত পাওয়া ভারতীয় নৌবাহিনীর প্রতিষ্ঠাতা ছিল ইস্ট ইন্ডিয়ান কোম্পানি। ১৬১২ সালে স্থাপিত হওয়া ভারতীয় নৌবাহিনীর নাম রাখা হয়েছিল “রয়্যাল ইন্ডিয়ান নেভি”। তবে ১৬১২ সালে স্থাপিত হলেও “রয়্যাল ইন্ডিয়ান নেভি” নামকরন হয়েছিল ১৯৩৪ সালে।এরপর দেশ স্বাধীন হওয়ার পর ১৯৫০ সালে এই “রয়্যাল ইন্ডিয়ান নেভি” নামটির পরিবর্তন করে রাখা হয় ইন্ডিয়ান নেভি।তবে ১৯৫০ সালে ভারতীয় নৌবাহিনীর নাম ইন্ডিয়ান নেভি রাখা হলেও এর অনেক আগে অর্থাৎ ১৮৩০ সালে ব্রিটিশরা ভারতীয় নৌবাহিনীর নাম রেখে ছিল ইন্ডিয়ান নেভি।
২. ৪ ডিসেম্বর ভারতীয় নৌসেনার দিবস হিসাবে পালন করা হয়।কিন্তু এই দিনটি ভারতীয় নৌসেনা প্রতিষ্ঠা দিবস নয়। এই ৪ ডিসেম্বর পালন করার পিছনে রয়েছে অন্য একটি কারন।১৯৭১ সালে ভারত–পাকিস্তান যুদ্ধের সময় ভারতীয় নৌবাহিনী আক্রমণ করেছিল পাকিস্তানের করাচি বন্দরের ওপর।আর এই অপারেশনের নাম দেওয়া হয়েছিল অপারেশন ট্রাইডেন্ট । এই অপারেশনে ভারতীয় নৌবাহিনীরা সাফল্য লাভ করেছিল।আর তাদের এই অসীম বীরত্ব ও সাফল্যের স্মৃতি স্বরূপ ৪ ডিসেম্বর দিনটি নৌসেনার দিবস হিসাবে পালন করা হয়।
৩.দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের সময় ভারতবর্ষ থেকে প্রচুর পরিমাণে কাঁচামাল ব্রিটেনে নিয়ে যাওয়া হয়েছিল এবং ছোট ছোট নৌকা ব্যবহার করা হয়েছিল।
৪.ইন্ডিয়ান নেভি পৃথিবীর প্রথম ১০ নৌবাহিনীর মধ্যে একটি। বিশ্ব র্যাঙ্কিং অনুযায়ী ভারতীয় নৌবাহিনী পঞ্চম স্থানে রয়েছে।এই বাহিনীতে রয়েছে ৫৮,৩৫০ সদস্য, দুটি এয়ারক্রাফট কেরিয়ার, ন’টি শিপ ট্যাঙ্ক, ১০ টি ডেসট্রয়ার, একটি পরমাণু শক্তিচালিত সাবমেরিন।এছাড়াও রয়েছে ১৪ টি ডিজেল ইলেকট্রিক অ্যাটাক সাবমেরিন, ২৫ টি করভেট, ৭ টি মাইন বিধ্বংসী, ১৫ টি ফ্রিগেট, ৪৭ টি নজরাদারির ভেসেল, ৪ টি জ্বালানি বহনকারী ট্যাঙ্কার ইত্যাদি।
৫.বিশ্বের উন্নয়নশীল দেশগুলি মতো ভারতও নিজেদের প্রতিরক্ষা ব্যবস্থাকে অনেক উন্নত করে তুলেছে।সেনাবাহিনী থেকে শুরু করে নৌবাহিনী, বায়ুসেনা সবার কাছেই রয়েছে সুপারসনিক ক্রুজ মিসাইল যা পৃথিবীতে একমাত্র ভারতে আছে। ব্রহ্মস যা বিশ্বের সবচেয়ে দ্রুতগামী দেশীয় মিসাইল। এই ব্রহ্মসের মতোই বিধ্বংসী মিসাইল আছে ভারতের কাছে।
৬.ভারতের সর্বপ্রথম রণতরীটি হল আইএনএস ভিরাট যা বর্তমানে ইন্ডিয়ান নেভির অবসর প্রাপ্ত রণতরী।এছাড়াও এই রণতরীটি ছিল বিশ্বের সবথেকে পুরনো এয়ারক্রাফট কেরিয়ার।
৭.নৌবাহিনীতে রয়েছে মার্কোস বা মেরিন কমান্ডো নামক একটি স্পেশাল ফোর্স।এই ফোর্সকে মাগার মাছ’ও বলা হয়।এছাড়াও এই ফোর্স সন্ত্রাসবাদীদের যম এবং তারা এই ফোর্সকে দাড়িওয়ালি ফৌজ’ বলে সম্বোধন করে।এই ফোর্সটি তৈরি করা হয়েছিল ২৬/১১ এর মুম্বই হামলার পর। এই এই বাহিনীতে যোগ দিতে বিরাট ট্রেনিং প্রসেসের মধ্যে দিয়ে যেতে হয়।তারপরেরও মাত্র ১০ শতাংশ সুযোগ পায় এই বাহিনীতে।
৮.ইন্ডিয়ান নেভি পৃথিবীর উত্তর এবং দক্ষিণ মেরুতে অভিযান করেছিলেন যাতে সাফল্য লাভ করেছিল।
৯. ২০২৭ সালের মধ্যে ভারতের নৌবাহিনীর হাতে থাকবে ১৫০ টি জাহাজ এবং ৫০০ টি যুদ্ধবিমান।