রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর “হিন্দু” হওয়ার কারনে ঠিক যে কাজটি করেছিল বাংলাদেশ
ভারত ও পাকিস্তানের যুদ্ধ সকলের কাছেই একটা রোমাঞ্চকর বিষয়। বর্তমান যুগেও ভারত এবং পাকিস্তানের সম্পর্ক যে ভালো নয় সেই সম্পর্কে অবগত গোটা পৃথিবী। পূর্বে এই দুটি দেশের মধ্যে, তাই যুদ্ধ লেগে থাকত। আর যুদ্ধ মানেই শুধু সেই দুটি দেশ নয় তার প্রতিবেশী দেশের উপরও যথেষ্ট প্রভাব পরতো। সেরকমই ১৯৬৫ সালে ভারত ও পাকিস্তানের যে যুদ্ধ হয়েছিল তার প্রভাব পূর্ব বাংলায় কতোটা পরেছিল সেই সম্পর্কে অনেকেই জানতে ইচ্ছুক।
তবে জানা যায় যে ১৯৬৫ সালের ৬ই সেপ্টেম্বর ভারতীয় বাহিনী লাহোর অভিমুখে হামলা শুরু করার মধ্য দিয়ে ভারত পাকিস্তান আনুষ্ঠানিক পূর্ণাঙ্গ যুদ্ধ শুরু হয়। পাকিস্তানের বড় শহরগুলো যেমন লাহোর, শিয়ালকোট, করাচি রক্ষার্থে পাকিস্তানী শাসনগোষ্ঠী পূর্ণশক্তির প্রয়োগ করেছিল। অপরদিকে পূর্ব বাংলা ছিল তখন অরক্ষিত। পূর্ব বাংলার নিরাপত্তার দায়িত্বে একটি মাত্র রেজিমেন্ট ছিল। কিন্তু সেখানে উপস্থিত ছিল না কোন ট্যাংক। তাই এরকম ঢিলা নিরাপত্তাকে এক ধাক্কায় তখন গুঁড়িয়ে দেওয়ার সমর্থ্য ছিল ভারতীয় বাহিনীর। ইচ্ছা করলে পূর্ব বাংলায় হামলা চালাতে পারতো ভারত। কিন্ত দুর্বল কারোর উপর তখন হামলা চালায়নি।
তবে পরবর্তীতে ভারতীয় সেনাবাহিনীরা বুঝতে পেরেছিল যে ১৯৬৫ সালের যুদ্ধে পূর্ব পাকিস্তান আক্রমণ না করাটা অনেক বড় ভুল ছিল। সেই সময় পূর্ব পাকিস্তান পশ্চিম পাকিস্তান এবং বহির্বিশ্ব থেকে সম্পূর্ণরূপে বিচ্ছিন্ন ছিল। সেই কারণে নিত্য প্রয়োজনীয় দ্রব্যের দাম জলের মতো বেড়ে গিয়েছিল। যার ফলস্বরূপ অর্থনৈতিক এবং সামরিক পরনির্ভরতা সহ পূর্ব পাকিস্তানের সামগ্রিক অসহায়ত্ব সকল বাঙ্গালীর চোখে প্রকটভাবে দেখা দেয়। রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর “হিন্দু” হওয়ায় তার সমস্ত গান পাকিস্তান বেতারে সম্প্রচার নিষিদ্ধ করা হয়েছিল। অপরদিকে কাজী নজরুল ইসলাম মুসলিম হওয়ার সত্ত্বেও তার ইসলামিক গানগুলো থেকে “হিন্দুয়ানী” শব্দগুলো বাদ দিয়ে পরিবেশন করা হতো। যুদ্ধে পূর্ব পাকিস্তানের বাঙালি জাওয়ানেরা নিজের জীবন বাজি রেখে লাহোরকে রক্ষা করেছিল। অথচ পাকিস্তান সরকার পূর্ব পাকিস্তানের ন্যূনতম নিরাপত্তার নিশ্চয়তা দিতে পারেনি। যুদ্ধ পরবর্তী বিষয়টি এমনভাবে প্রতিমান হয় যে ১৯৬৫ সালের যুদ্ধ বাহ্যত ভারতের বিরুদ্ধে হলেও যুগপৎ তা ছিল পূর্ব বাংলার বিরুদ্ধেও।