ভারতের উপর কোনোরকম চাপ দিয়ে কাজ করাতে সক্ষম নয় আমেরিকা!
নিউজ ডেস্কঃ ভারতবর্ষকে নিয়ে যে আমেরিকা গেম খেলতে চাইছে তা একাধিকবার প্রমান হয়েছে। কারন চীনের বিরুদ্ধে আমেরিকাকে লড়তে গেলে ভারতের সাথে বন্ধুত্ত্ব বাড়াতে হবে। বিশেষ করে পাকিস্তানের সাথে আমেরিকার দুরত্ব বাড়ার ফলেই একাধিক সমস্যার সম্মুখীন হতে হচ্ছে তাদের। অপরদিকে একটা কথা আছে যে শত্রুর শত্রু আমার বন্ধু। আর সেই কারনে ভারতের সাথে নিজেদের ঘনিষ্ঠতা বাড়াচ্ছে আমেরিকা। তবে বেশ কিছু দিক থেকে আমেরিকা ভারতের উপর চাপ সৃষ্টি করছে। যদিও ভারতের উপর চাপ সৃষ্টি করা বা নিষেধাজ্ঞা দেওয়া মানে যে আমেরিকার চরম ভুল হবে তা হাড়েহাড়ে বুঝতে পারছে তারা। ইতিমধ্যে ভারতবর্ষের উপর কোনও নিষেধাজ্ঞা দেওয়া হবেনা বলে জানিয়েছে তারা।
ভারত আমেরিকার রক্তচক্ষুকে উপেক্ষা করে নিজেদের সার্বভৌমত্বের ধরে রাখার জন্য আমেরিকার CAATSA কে উপেক্ষা করছে বহু দিন ধরেই। কিছু মাস আগে রাশিয়ার সাথে এস ৪০০ এর চুক্তি সম্পন্ন করে ইতিমধ্যে আমেরিকাকে চ্যলেঞ্জ ছুড়ে দেওয়া হয়েছে। ২০১৮ সালে চুক্তি সই হওয়ার পর থেকে ২০২১, এখন পর্যন্ত আমেরিকা ভারতের বিরুদ্ধে কোন পদক্ষেপ নিতে পারেনি। ইতিমধ্যে ভারতবর্ষের বিরুদ্ধে যে কোনও নিষেধাজ্ঞা জারি হবেনা তা জানিয়ে দেওয়া হয়েছে। তা করলে যে আমেরিকা চরম ক্ষতির সম্মুখীন হবে তা ভালো করেই জানে তারা। এরই মধ্যে আবার ইরানের সাথে ভারত নিজের চাবাহার পোর্টের উন্নয়নের ফলে নিজেদের উপস্থিতিকে আরও শক্তিশালী করা হচ্ছে।
আন্তর্জাতিক মহলের মতে ভারত ইরানের চাবাহার পোর্টকে কেন্দ্র করে বিরাট পদক্ষেপ নিতে চাইছে। বিশেষ করে চাবাহার এর সাথে ভারত এবার INSTC কে যুক্ত করতে চলেছে। জানিয়ে রাখা ভালো যে INSTC হল International North–South Transport Corridor! এর মাধ্যমে রেল রোড এবং শিপ রুটের মাধ্যমে ভারতের সাথে ইরান, আফগানিস্তান, আজারবাইজান, রাশিয়া, সেন্ট্রাল এশিয়া থেকে ইউরোপ প্রর্যন্ত একটি করিডর স্থাপন করা হতে চলেছে। আর এর ফলে সমস্ত অঞ্চল একটি বানিজ্যিক সম্পর্ক স্থাপন করা সম্ভব হবে বলে মনে করা হচ্ছে। এবং এই দুটি করিডরই শুরু হচ্ছে ভারতবর্ষের মুম্বাই থেকে। একটি রুট বান্দার আব্বাস পোর্ট সিটি হয়ে আজারবাইজানের সিটি বাকু প্রর্যন্ত। এবং অন্যটি মুম্বাই থেকে বান্দার আব্বাস হয়ে রাশিয়ান এ্যস্ট্রাখান শহর প্রর্যন্ত।
আরও কিছু রুট কাজাখস্তান ও তুর্কমেনিস্থানের মধ্যে দিয়ে হবে। এর ফলে ক্যরিং কস্ট ১৫টন মল সরবরাহে $২৫০০ডলার কম হবে। যা ভারতীয় মূল্যে ১,৮১,৮৮৫টাকা হয়।
বর্তমানে বন্দর আব্বাস থেকে ইরানে সি ট্রেডের ৮৫শতাংশ হয়। ভারতের যদি ইরানের চাবাহারে ডিপ সি পোর্ট তৈরি করে তাহলে ইরানের সি ট্রেড ক্ষমতা আড়াই মিলিয়ন টন থেকে বেড়ে ১২.৫মিলিয়ন হবে। কিছুটা হলেও স্পষ্ট যে কেন ভারত এই চাবাহারকে INSTC এর অধীনে আনতে চাইছে। পাশাপাশি ইরানও ভারতের এই সিদ্ধান্তকে সমর্থন করেছে ইতিমধ্যে।
আর তার জন্য ভারত চাবাহার দিয়ে সেন্ট্রাল এশিয়া, ইউরোপ থেকে রাশিয়াতে ব্যবসা বিরাট রাস্তা পেয়ে যাবে। ভারত ইতিমধ্যে চাবাহরে প্রথম ফেজে কাজ করছে। আর Shahid Beheshti পোর্টের জন্য ইতিমধ্যে ভারত ক্রেন সহ পোর্টের জন্য প্রয়োজনীয় যন্ত্রাংশ যোগান দিয়েছে। এর আগেও ভারতকে আমেরিকা ইরানের চাবাহার পোর্ট থেকে দূরে থাকতে চাপ দিয়েছে। ভারত তা কোনোভাবেই পরোয়া করে নি। ইরান-ভারত চাবাহার প্রকল্পে ভারতের যে আখেরে উন্নতি হবে তা বলাই বাহুল্য। এবং ভবিষ্যতে এই কাজ ভারতের উন্নতিকে অনেক দূর এগিয়ে নিয়ে যাবে।