স্বাধীন দেশের স্বপ্ন দেখা মানুষটির মৃত্যুও কাড়তে পারেনি তাঁর অমরত্ব। যতীন্দ্রমোহন সেনগুপ্তের অনস্বীকার্য অবদান
২৩ জুলাই ১৯৩৩ সাল। দেশ হারিয়ে ফেলে মুক্তি সংগ্রামী এক মহান নেতাকে। তবে এটা কি ছিল স্বাভাবিক মৃত্যু নাকি ষড়যন্ত্র? এই প্রশ্ন মন উঠলেও উত্তর পাওয়া যায় না কোনো। কারারত অবস্থায় অসুস্থ হওয়া সত্ত্বেও নেই তেমন কোন সুচিকিৎসার সুব্যবস্থা উপরন্তু সেদিকে নজর না দিয়ে তাঁকে স্থানান্তরিত করা হয় রাঁচিতে। রাঁচি জেলে স্থানান্তরিত হওয়ার কয়েক মাসের মধ্যে এই মহান মুক্তি সংগ্রামী চিরবিদায় নেয় সবার কাছ থেকে। স্বাধীন দেশের স্বপ্ন দেখা এই মানুষটির অমরত্ব কেড়ে নিতে পারেনি মৃত্যুও। এই মহান মানুষটি আর কেউ নন আমাদের দেশের অন্যতম স্বাধীনতা সংগ্রামী যতীন্দ্রমোহন সেনগুপ্ত।
২২ ফেব্রুয়ারি ১৮৮৫ সালে অধুনা বাংলাদেশের চট্রগ্রামের বরমা গ্রামে জন্মগ্রহণ করেন যতীন্দ্রমোহন সেনগুপ্ত। তাঁর বাবা ছিলেন যাত্রামোহন সেনগুপ্ত যিনি একজন প্রতিষ্ঠিত আইনজীবী হওয়ার পাশাপাশি ছিলেন ‘বেঙ্গল লেজিসলেটিভ কাউন্সিল’ (Bengal Legislative Council)-এর সদস্য। এছাড়াও তাঁর আরেকটি পরিচিতি ছিল জাতীয় কংগ্রেসের অবিসংবাদি নেতা হিসেবে। তাঁর মা ছিলেন বিনোদিনী দেবী। তাঁর শৈশবকাল চট্টগ্রামে কেটেছে। ছোটবেলা থেকেই অত্যন্ত বুদ্ধিমত্তা ছিলেন তিনি।
যতীন্দ্রমোহন তাঁর প্রাথমিক শিক্ষা মাত্র নয় বছর বয়সে চট্টগ্রামের ‘হাজারী স্কুল’ থেকে শুরু করে। এর দুই বছর পরে চট্টগ্রাম কলেজিয়েট স্কুলে ভর্তি হন তিনি। এরপর উচ্চশিক্ষার লাভের জন্য তাঁর বাবা তাঁকে ভর্তি করেন কলকাতার ‘সাউথ সুবার্বন স্কুল’-এ। হেয়ার স্কুল থেকে তিনি ১৯০২ সালে এন্ট্রান্স পাশ করেন। প্রেসিডেন্সি কলেজে ভর্তি হন যতীন্দ্রমোহন। সেখানে তাঁর সহপাঠী ছিলেন বিখ্যাত ব্যক্তি ড. রাজেন্দ্রপ্রসাদ, দেবীপ্রসাদ খৈতান প্রমুখ। তাঁর সহপাঠীদের সাহচর্যে উচ্চাকাঙ্ক্ষী হয়ে ওঠেন যতীন্দ্রমোহন। ১৯০৪ সালে উচ্চশিক্ষার লাভের জন্য ভর্তি হন কেমব্রিজ বিশ্ববিদ্যালয়ের ডাউনিং কলেজে। ডাউনিং কলেজ থেকে ১৯০৮ সালে স্নাতক ডিগ্রি অর্জন করেন এবং ১৯০৯ সালে আইন বিষয়ে ডিগ্রি অর্জন করেন। ইংল্যান্ডে নানাবিধ সামাজিক কাজকর্মসহ খেলাধূলার সাথে যুক্ত থাকতেন। নৌকা চালানো থেকে শুরু করে টেনিস, ক্রিকেট প্রভৃতি খেলায় অসাধারণ প্রতিনিধিত্বের জন্য এবং তাঁর প্রগাঢ় বুদ্ধি ও অসামান্য ব্যক্তিত্বের জন্য ইংল্যাণ্ডের ‘ইণ্ডিয়ান মজলিশ’ এবং ‘ইস্ট আ্যণ্ড ওয়েস্ট সোসাইটি’র সভাপতি হিসাবে নির্বাচিত হন তিনি। সেখানে বন্ধু হিসেবে তিনি পান গুরুসদয় দত্তকে। যিনি পরবর্তীকালে প্রবর্তন করেছিলেন বাংলায় ব্রতচারী শিক্ষার। ১৯০৭ সালে কেমব্রিজে জওহরলাল নেহরুর সাথে পরিচয় হয় তাঁর। সেই সময় ইংল্যাণ্ডের উপর ভারতের স্বাধীনতা আন্দোলনের ঢেউ -এর প্রভাব পড়েছিল। ইংল্যাণ্ডে থাকাকালীন সময়েই স্বাধীনতা আন্দোলনে সাথে জড়িয়ে পরেছিলেন যতীন্দ্রমোহন এবং জওহরলাল। ইংল্যাণ্ডে থাকাকালীন সময়ে তাঁর পরিচয় হয় নেলী গ্রে’ ওরফে এডিথ অ্যালেন গ্রে-র সাথে। তাদের সেই পরিচয় ভালোবাসাই পরিনত হয়েছিল। তবে তাদের এই সম্পর্ক মেনে নিতে পারেননি নেলীর বাবা-মা। নেলী তাঁর বাবা মায়ের বিরুদ্ধে গিয়ে ১৯০৯ সালের ১ আগস্ট যতীন্দ্রমোহন সেনগুপ্তকে বিবাহ করেন। পরবর্তীকালে নেলী সেনগুপ্তও ভারতীয় রাজনীতিতে সক্রিয়ভাবে অংশগ্রহণ করেছিলেন।
১৯০৯ সালে দেশের মাটিতে ফিরে আসেন যতীন্দ্রমোহন সেনগুপ্ত। শুরু করেন চট্টগ্রাম জেলা আদালতে আইনজীবি হিসেবে তাঁর কর্মজীবন। এরপর ১৯১০ সালে কলকাতা হাইকোর্টের আইনজীবি হিসেবে নিযুক্ত হন যতীন্দ্রমোহন সেনগুপ্ত। ওই সময় নিশ্চিত শাস্তি হওয়া বহু স্বাধীনতা সংগ্রামীকে মুক্ত করে আনেন তিনি। আলিপুর ষড়যন্ত্র মামলায় অভিযুক্ত সংগ্রামীর বিরুদ্ধে পুলিশের আনা সমস্ত সাক্ষীকে তিনি মিথ্যা প্রমাণ করে দিয়ে কারাবাস থেকে মুক্ত করেন দেন সাতজন অভিযুক্তকে। এই সাফল্য তাঁকে একজন দক্ষ আইনজীবি হিসেবে পরিচয় দেয়। তবে প্রথমদিকে আইনজীবি হিসেবে তাঁর উপার্জন কম হওয়ায় ওই সময় কিছুদিনের জন্য অধ্যাপনা করেছিলেন সুরেন্দ্রনাথ বন্দ্যোপাধ্যায় প্রতিষ্ঠিত ‘রিপন কলেজ’-এ। রিপন কলেজে স্বয়ং সুরেন্দ্রনাথ বন্দ্যোপাধ্যায়কেই তাঁর সহকর্মী হিসেবে পেয়েছিলেন।
আইনজীবি হিসেবে অসামান্য সুবক্তা ছিলেন যতীন্দ্রমোহন। কিভাবে সাক্ষীকে জেরা করে সেই মামলার মোড় ঘোরাতে হবে তা তিনি খুব ভালো করে জানতেন অর্থাৎ এই কাজে তিনি অত্যন্ত পারদর্শী ছিলেন। তৎকালীন ভারতের ফৌজদারী মামলায় তাঁর সমকক্ষ আইনজ্ঞ খুব কমই ছিল। স্বাধীনতা সংগ্রামীদের প্রতি ছিল প্রগাঢ় শ্রদ্ধা এবং সেই শ্রদ্ধা থেকেই তিনি সম্পূর্ণ বিনা পয়সায় মামলা লড়তেন স্বাধীনতা সংগ্রামীদের জন্যে। নাগরখানা খন্ডযুদ্ধে ও সরকারি টাকা লুটের মামলায় অভিযুক্ত মাস্টারদা সূর্য সেন, অনন্ত সিংহ, অম্বিকা চক্রবর্তী প্রমুখকে তাঁর প্রগাঢ় বুদ্ধির সাহায্যে মুক্ত করে এনেছিলেন। এছাড়াও তিনি বিপ্লবী প্রেমানন্দ দত্তকে ইন্সপেক্টর প্রফুল্ল রায় হত্যা মামলায় নির্দোষ প্রমাণ করেন মুক্ত করে এনেছিলেন।
রাজনীতির জগতে দেশবন্ধু চিত্তরঞ্জন দাশের প্রেরণায় তাঁর কর্মজীবনের শুরু হয় এক নতুন অধ্যায়। ১৯১১ সালে কংগ্রেসের রাজনীতিতে যোগ দেন করায় তাঁকে কারারুদ্ধ হতে হয়েছিল। ব্রিটিশ বিরোধী আন্দোলনে স্বেচ্ছাসেবক হিসেবে তিনি চট্টগ্রামের মানুষকে সংঘবদ্ধ করতে এক গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেছিলেন। যার ফলে গান্ধীজি তাঁর ‘ইয়ং ইণ্ডিয়া’ পত্রিকায় তাঁর এই ভূমিকা নিয়ে ভূয়সী প্রশংসা করেছিলেন। ১৮ জুন ১৯১৮ সালের চট্টগ্রামে এক ঐতিহাসিক ভাষণ দেন চিত্তরঞ্জন দাশ। এরপরই যতীন্দ্রমোহন ওই ঐতিহাসিক ভাষণের দ্বার উদ্বুদ্ধ হওয়া চট্টগ্রামবাসীদের একত্রিত করে চট্টগ্রাম জেলায় গঠন করেছিলেন কংগ্রেস একটি কমিটি। সভাপতিত্ব করেছিলেন স্বয়ং তিনিই। আইনের সাহায্য নিয়ে সংগ্রামীদের মুক্ত করার পাশাপাশি চট্টগ্রামে যুব বিদ্রোহ থেকে শুরু করে বিভিন্ন ধরনের আন্দোলনকে পরিচালনা করা কাজেও সক্রিয় ভূমিকা পালন করেছিলেন যতীন্দ্রমোহন। ভারতের ইতিহাসের পাতায় কুখ্যাত গনহত্যা হিসাবে পরিচিত জালিয়ানওয়ালাবাগের হত্যাকাণ্ডের প্রতিবাদে মহাত্মা গান্ধীর নেতৃত্বে সারা দেশব্যাপী শুরু হয়েছিল অসহযোগ আন্দোলন। সেই সময় যতীন্দ্রমোহন তাঁর পেশা ছেড়ে দিয়ে সরাসরি যুক্ত হয় এই আন্দোলনের সাথে। ওই একই বছরের শুরু হয় বার্মা অয়েল কোম্পানির বেতন বৃদ্ধি ও কর্মব্যবস্হার উন্নতির দাবিতে শ্রমিকদের বিক্ষোভ। এই আন্দোলনে শ্রমিকদের পক্ষে দাঁড়িয়ে যতীন্দ্রমোহন কর্তৃপক্ষের সাথে মীমাংসা করেন। ১৯২১ সালে ‘আসাম বেঙ্গল রেলওয়ে ধর্মঘট’ সংঘটিত হয় আসামের চা বাগানের কুলিদের উপর নির্যাতন ও নিপীড়নের প্রতিবাদে। এই আন্দোলনের নেতৃত্বে দিয়েছিলেন যতীন্দ্রমোহন। তিনি মহাত্মা গান্ধীকে আমন্ত্রণ করেন যাতে তিনি চট্টগ্রামে এসে এই ধর্মঘটকে কংগ্রেসের জাতীয় কর্মসূচির অন্তর্গত করে। যতীন্দ্রমোহনের এই আহ্বানে মহাত্মা গান্ধী চট্টগ্রামে এসে ‘আসাম বেঙ্গল রেলওয়ে ধর্মঘট’কে কংগ্রেসের জাতীয় কর্মসূচিতে অন্তর্ভুক্ত করার পাশাপাশি তিনি ওই ধর্মঘটীদের ধৈর্য্যের এবং যতীন্দ্রমোহনের সুসংগঠিত নেতৃত্বের প্রশংসা করেছিলেন। পরবর্তীকালে মহাত্মা গান্ধী জানিয়েছিলেন যে এই আন্দোলন কংগ্রেসের অহিংসবাদী আন্দোলনের শক্তি বৃদ্ধি করেছিল। এই ধর্মঘট পরিচালনা করার জন্য বন্ধক রাখতে হয়েছিল তাঁর ভিটেমাটি। আন্দোলন পরিচালনা করার জন্য তাঁকে বহুবার কারারুদ্ধ করেছিল ব্রিটিশ সরকার।
১৯২২ সালে কংগ্রেসের কার্যকরী সমিতির সদস্য হিসাবে যোগ দেন। এরপর যতীন্দ্রমোহন যোগ দেন ১৯২৩ সালের ১ জানুয়ারি দেশবন্ধু চিত্তরঞ্জন দাশ প্রতিষ্ঠিত ‘স্বরাজ’ দলে। তিনি সারাজীবন তাঁর গুরু চিত্তরঞ্জন দাশের আর্দশ ও প্রদর্শিত পথেই চলেছিলেন। হঠাৎই মৃত্যুবরন করেন চিত্তরঞ্জন দাশ। এরপর তিনি তাঁর কাঁধে তুলে নেন বাংলা প্রাদেশিক কংগ্রেস কমিটির সভাপতির দায়িত্ব তথা ‘ফরওয়ার্ড’ পত্রিকার দায়িত্বভার এবং সর্বোপরি কলকাতার মেয়রের দায়িত্ব। মেয়র হওয়ার পর তিনি মেয়েদের জন্য অনেকগুলি প্রাথমিক বিদ্যালয় স্থাপন করার পাশাপাশি চিকিৎসা, স্বাস্থ্য, জল সরবরাহ ও শৌচপ্রণালী ব্যবস্থার প্রভৃতি উন্নয়নমূলক কাজ করেন। কলকাতা কর্পোরেশনের মেয়র হিসাবে পরপর পাঁচবার নির্বাচিত হয়েছিলেন তিনি। ১৯২৬ সাল তখন তিনি কলকাতা কর্পোরেশনের মেয়র ওই সময় কলকাতায় শুরু হওয়া হিন্দু-মুসলিমের দাঙ্গা বুদ্ধিমত্তার সাথে নিয়ন্ত্রণ করেছিলেন তিনি। ১৯২৮ সালে যতীন্দ্রমোহন কংগ্রেসের কলকাতা অধিবেশনের অভ্যর্থনা কমিটির সভাপতি হিসাবে নির্বাচিত হন। চট্টগ্রামের ১৯৩১ সালে ভয়াবহ বন্যায় ও সাম্প্রদায়িক দাঙ্গায় ক্ষতিগ্রস্ত মানুষের সাহায্যার্থে ত্রাণকার্যের দায়িত্ব গ্রহণ করেন।
১৯৩০ সালে আয়োজিত করা হয়েছিল রেঙ্গুনে ভারত থেকে বার্মাকে আলাদা করার প্রতিবাদে কর্মসূচি তাঁকে তিনি রাজদ্রোহী বক্তৃতা দিয়েছিলেন যার জন্য তাঁকে গ্রেফতার করা হয়েছিল। পরে তিনি মুক্তি পাওয়া পর যান ইংল্যাণ্ডে। সেখানে গিয়ে তিনি চট্টগ্রাম পুলিশের বিরুদ্ধে ছবি ও তথ্য-প্রমাণ পেশ করেন। যার কারনে পদচ্যুত হয়েছিলেন চট্টগ্রামের বিভাগীয় কমিশনার নেলসন। এরই ফলস্বরূপ জেলা ম্যাজিষ্ট্রেট ক্রেগ বাধ্য হন অবসর নিতে এবং চাকরি ছেড়ে দিয়ে হান্টার সাহেব চলে যান বিলেতে। এরপরই আত্মহত্যা করেন পুলিশ সুপার সুট্যার। এর ফলে জমা হয় পুলিশের ক্ষোভ যতীন্দ্রমোহনের বিরুদ্ধে। ব্রিটিশ সরকারকে কমিশনার টেগার্ট বলেন যে সশস্ত্র বিপ্লবের সাথে যুক্ত রয়েছে যতীন্দ্রমোহন। টেগার্টের সেই অভিযোগের ভিত্তিতে ১৯৩৩ সালে যতীন্দ্রমোহন দেশে ফেরার পরে বোম্বাই বন্দরে তাঁকে গ্রেফতার করা হয়। গ্রেফতারের পরে তাঁকে প্রথমে রাখা হয় যারবেদা জেলে। এরপর তাঁকে স্থানান্তরিত করে পাঠানো হয় দার্জিলিংয়ে। সেখানে থাকাকালীন সময়ে গুরুতর অসুস্থ হয়ে পড়েন তিনি। অসুস্থ হওয়ার সত্ত্বেও উপযুক্ত চিকিৎসার ব্যবস্থা করায় হয় না তাঁর জন্য। দিন দিন তাঁর অবস্থার অবনতি হতে থাকলে তাঁকে চিকিৎসার জন্য পাঠিয়ে দেওয়া হয় রাঁচিতে। তবে সেখানে গিয়ে তাঁর স্বাস্থ্যের আরও অবনতি হতে থাকে।
‘অ্যাডভান্স’ নামের একটি ইংরেজি পত্রিকা প্রকাশ করতেন স্বয়ং যতীন্দ্রমোহন । দেশের জন্য নিজের জীবনকে উৎসর্গ করেছিলেন তিনি। ১৯২১ সালে বার্মা অয়েল কোম্পানিতে শ্রমিকদের ধর্মঘটের সময় ওই শ্রমিকদের পরিবার প্রতিপালনের জন্য চল্লিশ হাজার টাকা ঋণ নিয়েছিলেন। এই ঘটনার পরিপ্রেক্ষিতেই জনগণ তাঁকে ‘দেশপ্রিয়’ উপাধিতে ভূষিত করে ছিলেন। এছাড়াও চট্টগ্রামের মানুষ তাঁকে ‘ চট্টগ্রামের মুকুটহীন রাজা’ নামে অভিহিত করেছ। যতীন্দ্রমোহনের স্মরণে দক্ষিণ কলকাতার একটি পার্কের নাম রাখা রয়েছে ‘দেশপ্রিয় পার্ক’ নামে। বর্তমানে দক্ষিণ কলকাতায় দেশপ্রিয় পার্কের ভিতরে যতীন্দ্রমোহন সেনগুপ্ত এবং তাঁর স্ত্রী নেলী সেনগুপ্তের যুগলমূর্তি রয়েছে। যতীন্দ্রমোহনের স্মরণার্থে রাঁচীতে কাঁকে রোডের নামটি পরিবর্তন করে ‘দেশপ্রিয় যতীন্দ্রমোহন রোড’ রাখা হয়েছিল।
৫ জুন, ১৯৩৩ সালে দেশপ্রিয়কে কারাগার থেকে স্থানান্তরিত করা হয়েছিল রাঁচিতে। সুচিকিৎসার অভাবে ১৯৩৩ সালের ২৩ জুলাই রাঁচিতে মৃত্যুবরন করেন যতীন্দ্রমোহন সেনগুপ্ত।