চীন নিজেদের যুদ্ধাস্ত্র গোটা পৃথিবীর সামনে কেন নিয়ে আসতে চাইছে না?
নিউজ ডেস্কঃ ভারতবর্ষের নৌসেনার ক্ষমতা যে বৃদ্ধি পাবে তা আগে থেকেই নির্ধারিত ছিল। কারন পি ৭৫ আই প্রোজেক্টের কারনে প্রচুর বিধ্বংসী সাবমেরিন আসতে চলেছে সেনাবাহিনীর হাতে। ইতিমধ্যে বেশ কিছু সাবমেরিন পেতে চলেছে সেনাবাহিনী। শুধু সাবমেরিন নয়, ফ্রিগেট ডেস্ট্রয়ার থেকে শুরু করে বিমানবাহী রণতরী এবং তা দেশীয় প্রযুক্তিতেই তৈরি। বিশেষ করে চীন এবং পাকিস্তানকে চাপে রাখতেই যে একাধিক পদক্ষেপ নেওয়া তা বেশ স্পষ্ট। শুধু ভারত নয় ভারতের পাশাপাশি চীনের বর্তমান সবথেকে বড় শত্রু দেশ আমেরিকাও একাধিক বিধ্বংসী সাবমেরিন থেকে শুরু করে বিধ্বংসী যুদ্ধজাহাজ তাদের সেনাবাহিনীর হাতে আসতে চলেছে। চীন এবং আমেরিকার মধ্যে সবথেকে বড় পার্থক্য হল আমেরিকা তাদের জিনিস সকলের সামনে এনে প্রমান দেয় আর চীন তা কোনদিনই দিতে চায়না। অর্থাৎ চীনের জিনিস নিয়ে সকলেরই কমবেশি প্রশ্ন আছে।
প্রথম দুটি কলম্বিয়া ক্লাস ব্যলিস্টিক মিসাইল সাবমেরিন নির্মানের জন্য মার্কিন নৌবাহিনী অর্থ বরাদ্দ করেছে আমেরিকা। এর মধ্যে প্রথম কলম্বিয়া ক্লাস সাবমেরিন ইউএসএস কলম্বিয়ার পূর্ন বাজেট ও দ্বিতীয় কলম্বিয়া ক্লাসের সাবমেরিন ইউএসএস উইসকনসিনের প্রাথমিক অর্থ বরাদ্দ করা হয়েছে। মোট বরাদ্দের পরিমান $৯.৪বিলিয়ন ডলার। জেনারেল ডায়নামিক্স ইলেকট্রিক বোটের দায়িত্বে থাকা এই সাবমেরিন গুলি তৈরি হবে। এই ক্লাসের ১২টি অত্যাধুনিক সাবমেরিন ১৪টি ওহিও ক্লাস সাবমেরিনকে রিপ্লেস করতে চলেছে।
ওহিও ক্লাস সাবমেরিন গুলি কিরকম? ১৯৮১-৯৭সালের মধ্যে এই ১৮টি ওহিও ক্লাস সাবমেরিন সার্ভিসে অ্যানা হয়েছিল। ওহিও ১৮,৭৫০টনের সাবমেরিন। ৮০০ফুট সমুদ্রের গভীরতায় যাওয়ার ক্ষমতা আছে। এই ১৮টি ওহিওর মধ্যে ৪টিকে মার্কিন নৌবাহিনী ক্রুজ মিসাইল ক্যরিয়ার SSGN তে রূপান্তর করা হয়। যাদের নাম হল ইউএসএস ওহিও, মিশিগান, ফ্লোরিডা ও জর্জিয়া। এই এক একটি SSGN ২২টি করে টিউব বহন করে থাকে, যার এক একটিতে ৭টি করে টমহক ক্রুজ মিসাইল ইনস্টল করা আছে। যার এক একটির রেঞ্জ ২৫০০-৩০০০কিমি। অর্থাৎ একটি সাবমেরিনে ১৫৪টি ক্রুজ মিসাইল। যা পরমাণু ও সাধারন অস্ত্র বহন করতে পারে।
বাকি ১৪টি ওহিও ইউএসএস হেরিন এন জেকসন, আলাবামা, আলাস্কা, নেভাডা, টেনেসি, পেনসিলভেনিয়া, ওয়েস্ট ভার্জেনিয়া, কেন্টাকি, মেরিল্যন্ড, নেব্রাস্কা, রোডে আইল্যন্ড, মায়নে, ওয়াইমিং ও লুইসিয়ানা SSBN হিসাবে কাজ চালিয়ে যায়। এগুলির প্রতিটি ২৪টি ট্রাইডেন্ট ২ আইসিবিএম ক্লাস এসএলবিএম বহন করে। যাদের ১০+ মার্ক ৫ পরমানু অস্ত্র বহন করে এবং ধ্বংস ক্ষমতা ৪৫৫কিলোটন। রেঞ্জ ১৪০০০+কিমি।
নতুন প্রজন্মের কলম্বিয়া ক্লাস ছাড়াও, ওহিও ক্লাসের সাবমেরিন যে পরিমানে আধুনিক, স্টেল্থ আর অপারেট করা সহজ এমন সাবমেরিন আগামী ২০ বছরেও চীন বানাতে পারবে কি না সে বিষয়ে যথেষ্ট সন্দেহ রয়েছে। ওহিও সাবমেরিনকে “ভার্চুয়ালি আনডিটেক্টেবেল” বলা হয়। কারন এটি শব্দ উৎপাদন করে না পাশাপাশি এর স্পেশাল কোটিং শত্রুপক্ষের সোনার ওয়েভকে রিফ্লেক্টও করে না। আর আমেরিকা এটিকে রিপ্লেস করতে যাচ্ছে। ভাবুন এবার আসি নতুন কলম্বিয়া ক্লাসের। এর ১২টি সাবমেরিন তৈরিতে খরচ হবে আনুমানিক $১১০বিলিয়ন। ওজন ২১,০০০টন। পাম্পজেট প্রপালশান যেমনটা ব্যবহার করে ফ্রান্সের বারাকুডা ক্লাস। মোট ১৬টি ট্রাইডেন্ট ডি ৫ বহন করে যা পৃথিবীর যেকোনো অঞ্চলে আক্রমণ করার ক্ষমতা রাখে। মোট লাইফ সাইকেল কস্ট পরবে $৩৪৭বিলিয়ন ডলার।
এর আধুনিকতা নিয়ে বেশি কিছু জানা যায়নি। তবে এটা বিশ্বের সেরা সাবমেরিন হতে চলেছে যার সম্পর্কে কারও কোনও ধারণা নেই। এমন অনেক কিছু লুকিয়ে আছে এই সাবমেরিনের মধ্যে। তার মধ্যে জলের মধ্যে ডুবে থাকা অবস্থায় ইলেকট্রনিক ওয়ারফেয়ার ও স্পেশাল মিশনের ক্ষেত্রে আলাদা টিউবকে কম্যান্ডোদের সাথে জলের মধ্যে ছেড়ে দেওয়ার মত অংশ গুলি সাধারন ব্যপার এদের ক্ষেত্রে। রেঞ্জ ও এন্ডিউরেন্স আনলিমিটেড বাকি পরমাণু সাবমেরিনের মত। কিন্তু এর ডেপ্থ অর্থাৎ কত গভীরে যেতে পারে তা ও কত গতী তা সম্পূর্ন গোপন করে রাখা আছে।
চীনের সেনাবাহিনী শুধু ভিডিও তে তাদের ক্ষমতা প্রকাশ করে, কোনোদিন এখনও পর্যন্ত কারও সামনে এনে প্রমান দেয়নি। গ্রাউন্ড রিয়েলিটিতে সব কিছু আকাশ আর পাতালের পার্থক্য।