গালওয়ান ভ্যালিতে ঝামেলার পর ফ্রান্সের মিরাজ যুদ্ধবিমান ঠিক কি ভূমিকা ছিল? কি করেছিল ভারতবর্ষ?
রাজেশ রায়:– ভারতীয় বিমানবাহিনীতে অ্যাক্টিভ থাকা অন্যতম ঘাতক যুদ্ধবিমান হচ্ছে মিরাজ-২০০০। ভারতীয় বায়ুসেনায় একে আদর করে বজ্র বলে। ১৯৬৫ সালে ব্রিটেন ও ফ্রান্স যৌথভাবে একটি লাইট অ্যাটাক যুদ্ধবিমান তৈরি শুরু করে। দুই বছর পর ফ্রান্স অতিরিক্ত ব্যায়ের জন্য এই প্রজেক্ট থেকে সরে আসে । ব্রিটেন তখন পশ্চিম জার্মানি ও ইটালির সাথে যৌথভাবে এই প্রজেক্ট শুরু করে শেষে এই যুদ্ধবিমানের নাম হয় প্যানাভিয়া টর্নেডো। এরপর ফ্রান্সের ড্যাসল্ট অ্যাভিয়েশন ১৯৭২ সালে মিরাজ-২০০০ প্রজেক্ট শুরু করে। তখন এই প্রজেক্টের নাম ছিল ডেল্টা-১০০০। এরপর মিরাজ-জি নামে একটি এক্সপেরিমেন্টাল প্রোটোটাইপ তৈরি করে ড্যাসল্ট। ফ্রান্স বিমানবাহিনীর মিরাজ-৩ এর রিপ্লেসমেন্ট হিসাবে এই যুদ্ধবিমান তৈরি করে ফ্রান্স। পরে এর নাম হয় মিরাজ -জি ৮। ফ্রান্সের বিমানবাহিনী ম্যাক ৩ গতির একটি যুদ্ধবিমান চাইছিল যার জন্য ড্যাসল্ট মিরাজ জি ৮ ডিজাইন আবারও পরিবর্তন করে একটি নতুন ডিজাইনের দুই ইঞ্জিন বিশিষ্ট সুপার মিরাজ-জি ৮এ তৈরি করে। কিন্ত এই সুপার মিরাজ ফ্রান্সের মিরাজ এফ ১ ও আমেরিকার এফ-১৬ এর তুলনায় অত্যন্ত দামী হয়। যার জন্য ১৯৭৫ সালের ১৮ ডিসেম্বর ফ্রান্সের ন্যাশনাল ডিফেন্স কাউন্সিল এই প্রজেক্ট বাতিল করে দেয়। এরপর একটি ইঞ্জিন বিশিষ্ট মিরাজ তৈরি করা হয় যা মিরাজ -২০০০ নামে পরিচিত হয়। ১৯৭৮ সালের ১০ মার্চ প্রথম মিরাজ ২০০০ প্রোটোটাইপ আকাশে ওড়ে এবং ১৯৮৪ সালে প্রথম মিরাজ ২০০০ ফ্রান্সের বিমানবাহিনী তে যুক্ত হয়।
প্রথমের দিকে মিরাজ-২০০০ এর দুটি ভার্সন তৈরি করা হয়েছিল। মিরাজ ২০০০ এন ও মিরাজ ২০০০ ডি. মিরাজ ২০০০ এন হচ্ছে ডেডিকেটেড নিউক্লিয়ার অ্যাটাক অর্থাৎ পরমাণু হামলার কথা মাথায় রেখে তৈরি করা হয়েছিল। যুদ্ধবিমানটি এয়ার সোল মোইনি পোর্টি (ASMP) নিউক্লিয়ার স্ট্যান্ড অফ মিসাইল বহন কতে পারে। মিরাজ ২০০০ এন এর প্রথম প্রোটোটাইপ ১৯৮৩ সালে ৩ ফেব্রুয়ারী আকাশে উড্ডয়ন করে। প্রথম টেস্টে বিমানটি ৬৫ মিনিটের মধ্যে সর্বোচ্চ ১.৫ ম্যাক গতি তুলেছিল। শেষপর্যন্ত ১৯৮৮ সালে মিরাজ ২০০০ এন ফ্রান্সের বিমানবাহিনীতে যুক্ত হয়। এই মিরাজ ২০০০ এন উপর নির্ভর করে এর আপগ্রেডেড ভার্সন তৈরি করা হয় যার নাম দেওয়া হয় মিরাজ ২০০০ ডি। মিরাজ ২০০০ এন হচ্ছে নিউক্লিয়ার অ্যাটাক যুদ্ধবিমান কিন্তু মিরাজ ২০০০ ডি হচ্ছে কনভেনশাল অ্যটাক যুদ্ধবিমান, মানে সোজা কথায় মিরাজ ২০০০ ডি নিউক্লিয়ার যুদ্ধাস্ত্র বহন করে না। ১৯৯১ সালের ১৯ ফেব্রুয়ারীতে প্রথম মিরাজ ২০০০ ডি বিমানের ফ্লাইট টেস্ট হয়। শেষ পর্যন্ত ১৯৯৫ সালে এটি ফ্রান্সের বিমানবাহিনীতে যুক্ত হয়। সর্বমোট ৭৫ টি মিরাজ -২০০০ এন এবং ৮৬ টি মিরাজ -২০০০ ডি বিমান তৈরি করা হয়েছিল। পরে মিরাজ -২০০০ এর সর্বাধুনিক ভার্সন তৈরি করা হয়েছিল যার নাম মিরাজ-২০০০ ৫। ১৯৭৮-২০০৭ পর্যন্ত মোট ৬০১ টি মিরাজ ২০০০ তৈরি করা হয়েছে। ২০০৭ সালে গ্রীসের বিমানবাহিনী কে মিরাজ -২০০০ সাপ্লাই দেবার পর প্রোডাকশন লাইন বন্ধ করে দেওয়া হয়। ফ্রান্স সহ ভারত, তাইওয়ান, ব্রাজিল, পেরু, কাতার, সংযুক্ত আরব আমিরশাহি, গ্রীস বিশ্বের এই নয়টি দেশের বিমানবাহিনী তে মিরাজ-২০০০ যুক্ত আছে।
লাইট অ্যাটাক যুদ্ধবিমান হিসাবে তৈরি হলেও আপগ্রেডের পর মিরাজ ২০০০ একটি মাল্টিরোল সুপারসনিক যুদ্ধবিমানে পরিনত হয়। মিরাজ ২০০০ এর সর্বোচ্চ গতি ২৩৩৬ কিমি, রেঞ্জ ১৫৫০ কিমি, এতে Snecma M53–p2 আফটারবার্নিং টার্বোফ্যান ইন্জিন ব্যবহার করা হয়। এতে অস্ত্র হিসাবে রয়েছে ২ টি ৩০ এমএম DEFA ৫৫৪ রিভলবার ক্যানন ব্যবহার করা হয়েছে। মিরাজে মোট ৯ টি হার্ড পয়েন্ট রয়েছে। মিরাজে ৬৮ এমএম আনগাইডেড রকেট পড রয়েছে। এতে মিসাইল হিসাবে রয়েছে এমবিডিএ মিকা মিসাইল, মাত্রা R-550 ম্যাজিক ২ ও মাত্রা সুপার ৫৩০ ডি মিসাইল। ভারতীয় বায়ুসেনার মিরাজে অস্ত্র এয়ার টু এয়ার মিসাইল রয়েছে। এয়ার টু সারফেস মিসাইল হিসাবে রয়েছে এক্সোয়েট ও স্ক্ল্যাপ মিসাইল। তাছাড়া মিরাজ ২০০০ পিজিএম ৫০০, পিজিএম ২০০০ মডিউলার গাইডেড বোম্ব, জিবিউ ১২, জিবিউ ১৬, জিবিউ ২৪, জিবিউ ৪৯ লেজার গাইডেড বোম্ব, ও ইসরায়েলের স্পাইস ২০০০ বোম্ব বহন করতে পারে।
১৯৮০ সালে ভারতীয় বিমানবাহিনী ভারতীয় বায়ুসেনা খবর পায় পাকিস্তান আমেরিকার থেকে F-16 A/B অর্ডার করেছে যা ১৯৮২ সাল থেকে ডেলিভারি হবে। সেই সময় ভারতীয় বিমানবাহিনীতে থাকা রাশিয়ান মিগ-২১ ও মিগ-২৩ অত্যাধুনিক F-16 এর তুলনায় অনেকটাই পিছিয়ে ছিল। যারজন্য ভারতীয় বায়ুসেনা কেন্দ্রীয় সরকার কে রাজি করায় F-16 এর সমতুল্য যুদ্ধবিমান কেনার।
ভারত প্রথমে ঠিক করেছিল মিরাজ এফ ১ কেনার কিন্তু মিরাজ -২০০০ এর হাই পারফরম্যান্স এর জন্য ভারত মিরাজ -২০০০ ক্রয় করবে ঠিক করে। ১৯৮২ সালের অক্টোবরে ভারত ফ্রান্সের ড্যাসল্টের সাথে ৪০ টি মিরাজ-২০০০ কেনার চুক্তি করে। যার মধ্যে ৩৬ টি সিংগেল সিটের মিরাজ ২০০০ এইচ এবং ৪ টি ডবল সিটের মিরাজ ২০০০ টিএইচ (এইচ মানে হিন্দুস্তান). পরে আরও ৯ টি মিরাজ ২০০০ নেওয়া হয়। ভারত ১৫০ টি মিরাজ ২০০০ কিনবে ঠিক করেছিল ফ্রান্স থেকে যে গুলো ভারতে হিন্দুস্তান এরোনটিকস লিমিটেড বা হ্যাল তৈরি করবে ঠিক ছিল কিন্তু সেইসময় সোভিয়েত ইউনিয়নের সাথে ভারতের ভাল সম্পর্ক থাকার কারনে সোভিয়েত লবির কারনে ভারত আর মিরাজ-২০০০ না কিনে তার জায়গায় সোভিয়েত মিগ-২৯ কেনে। ১৯৮৫ সালে ২৯ জুন প্রথম ব্যাচে ৭ টি মিরাজ ২০০০ আসে ভারতীয় বায়ুসেনার হাতে।
১৯৯৯ সালে কার্গিল যুদ্ধের সময় মিরাজ-২০০০ শত্রুর রাতের ঘুম উড়িয়ে দিয়েছিল। ভারতের গ্রাউন্ড ফোর্সের সাথে যৌথভাবে মিরাজ -২০০০ যুদ্ধে যায়। একে অপারেশন সফদ সাগর বলে। দুই মাস ব্যাপী কার্গিল যুদ্ধে মিরাজ ২০০০ টোটাল ৫১৪ টি এয়ারস্ট্রাইক করেছিল হিমালয়ের উচ্চ পার্বত্য অঞ্চলে শত্রুর বেসের উপর। এইসময় ইসরায়েল ভারত কে ব্যাপক ভাবে সাহায্য করেছিল। ভারত আমেরিকা থেকে প্যাভওয়ে ২ লেজার গাইডেড বোম্ব কিট কিনেছিল কিন্তু কার্গিল যুদ্ধের সময় এর অনেক পার্টস দিতে অস্বীকার করে আমেরিকা কারন সে সময় আমেরিকা পাকিস্তানের বন্ধুত্ব ছিল, ভারতের এই বিপদের সময় ইসরায়েল ভারতের পাশে আসে। ইসরায়েলের বিশেষ টিম ভারতে এসে ভারতীয় বিমানবাহিনীর মিরাজ ২০০০ কে ব্যাপক আপগ্রেডেশন করে এর ফলে কার্গিল যুদ্ধে মিরাজ ২০০০ ব্যাপক পারফরম্যান্স করে।
২০০১-০২ এর সময় ভারত পাকিস্তান স্ট্যান্ডঅফের সময় মিরাজ ২০০০ বোম্বিং করেছিল পাকিস্তানের বেসের উপর।
কার্গিল যুদ্ধে মিরাজ ২০০০ এর পারফর্মেন্স দেখে ভারত ঠিক করেছিল ১২৬ টি মিরাজ ২০০০ ৫ কিনবে যা ছিল মিরাজ ২০০০ এর সর্বাধুনিক ভার্সন। এমনকী ফ্রান্স মিরাজ ২০০০ এর সম্পূর্ণ প্রোডাকশন লাইন ভারতে ট্রান্সফার করে দেবার কথাও ছিল। এই সময়ে ভারতীয় বায়ুসেনার MRCA বা মাল্টিরোল কমব্যাট এয়ারক্রাফট টেন্ডারে মিরাজ ২০০০ ৫ ছাড়াও, সুইডেনের Jas 39 গ্রিপিন, রাশিয়ান মিগ ৩৫, আমেরিকার F-16 ছিল। কিন্তু ভারত শেষ পর্যন্ত ২০০৪ সালে মাত্র দশটি মিরাজ ২০০০ এর অর্ডার দেয়, তারপর আর মিরাজ ২০০০ কেনা হয় নি। এটা সত্যিই আমাদের জন্য ছিল ঐতিহাসিক ভুল সিদ্ধান্ত, যার ফল আজও আমরা ভুগছি। মিরাজ ২০০০ এতটাই দারুন যুদ্ধবিমান যে ২০১৯ সালের ২৬ ফেব্রুয়ারিতে পাকিস্তানের বালাকোটে জঙ্গি সংগঠন জইশ ই মহম্মদের ঘাঁটিতে স্পাইস ২০০০ বোম্ব মেরে ফিরে আসে যা পাকিস্তান টের ও পায়নি। যা বালাকোট এয়ারস্ট্রাইক নামে বিখ্যাত। মোট ১২ টি মিরাজ ২০০০ পাকিস্তানে ঢুকেছিল সেদিন।
ভারত ২০১১ সালে বায়ুসেনাতে থাকা ৫১ টি মিরাজ ২০০০ কে আপগ্রেডের সিদ্ধান্ত নেয়, যা মিরাজ ২০০০ ৫ এর সমতুল্য হবে। মোট ১.৯-২.১ বিলিয়ন ডলার খরচ হয় এতে। এক একটি মিরাজের জন্য প্রায় ৪৩ মিলিয়ন ডলার খরচা হয় এতে, যা অত্যন্ত ব্যয় সাপেক্ষ। সবচেয়ে বড় ব্যাপার এই প্যাকেজের মধ্যে ইন্জিন রিপ্লেসমেন্ট ছিলই না। সেই তুলনায় ৬৯টি মিগ -২৯ কে ইন্জিন রিপ্লেসমেন্ট সহ আপগ্রেডেশে খরচ হয়েছিল মাত্র ৯০০ মিলিয়ন ডলার। এমনকী ইসরায়েল সে সময় অফার দিয়েছিল ১১ মিলিয়ন ডলার আপগ্রেডেশন প্যাকেজ প্রতি বিমানের জন্য। ইসরায়েলের টেকনোলজি আমরা সবাই জানি, কার্গিল যুদ্ধে ইসরায়েলই আমাদের মিরাজ কে আপগ্রেড করে রাশিয়ান R-73 মিসাইল ফায়ারিং ক্যাপেবিলিটি, লেজার গাইডেড বোম্ব কিট, লাইটনিং পড যুক্ত করেছিল। আসুন যানা জাক মিরাজ ২০০০ এ কী কী আপগ্রেডেশন করা হয়েছে:—-
* প্রথমেই মিরাজে থমসনের আপগ্রেডেড RDY2 টেডার ইনস্টল করা হয় যার রেঞ্জ প্রায় ১৪০ কিমি। এটি একসাথে ২৪ টি টার্গেট কে শনাক্ত করতে, ৮ টিকে ট্রাক করতে ও ৪ টিকে ধ্বংস করতে পারে। এই নতুন রেডারে একটি স্পেশাল ভেলোসিটি সার্চ মোড রয়েছে বহু দূর থেকে আগত এয়ার টার্গেটের জন্য।
* হাই রেজোল্যুশন গ্রাউন্ড ম্যাপিং ও লো লেভেল নেভিগেশনের জন্য ফ্লাইং এড ক্যাপেবিলিটি যুক্ত করা হয়েছে।
* অ্যাডভন্সড অ্যভনিক্স সিস্টেম যুক্ত করা হয়েছে, যেমন ডিজিট্যাল ডাটা লিংক ইনফরমেশন সিস্টেম যুক্ত করা হয়েছে, IFF বা আইডেন্টিটি ফিকেশন ফ্রেন্ড এন্ড ফো সিস্টেম যুক্ত করা হয়েছে। এই সিস্টেম ব্যবহার করে পাইলট বুঝতে পারে কোনটা শত্রু বিমান কোনটা বন্ধু বিমান।
* সফটওয়্যার ডিফাইন রেডিও ইনস্টল করা হয়েছে যা শত্রু জ্যাম করতে পারবে না
* অনবোর্ড অক্সিজেন জেনারেশন সিস্টেম যুক্ত করা হয়েছে।
* পুরোনো মাত্রা ম্যাজিক ২ ও সুপার ৫৩০ডি মিসাইলের বদলে মিকা মিসাইল যুক্ত করা হয়েছে যার ইনফ্রারেড ভার্সন এর রেঞ্জ ২০ কিমি ও রেডিও ফ্রিকুয়েন্সি ভার্সন এর রেঞ্জ ৬০-৮০ কিমি।
* সম্পূর্ণ নতুন গ্লাস ককপিট যুক্ত করা হয়েছে।
* ভবিষ্যতে ভারতীয় অস্ত্র মার্ক ১ ও ব্রাহ্মস এনজি মিসাইল যুক্ত করা হবে।
মিরাজ ২০০০ এতটাই শক্তিশালী যে গত বছর লাদাখের গালওয়ান ভ্যালি তে ভারত ও চীনের মধ্যে ঝামেলার পর, লাদাখে মিরাজ ২০০০ মোতায়েন করেছিল ভারতীয় বায়ুসেনা। সেইসময় মিরাজ ২০০০ পুরো লোডেড ছিল যাতে তিনটি ড্রপ ট্যাংক ছিল, ২ টি মিকা ইনফ্রারেড ও ৪ টি মিকা রেডিও ফ্রিকোয়েন্সী মিসাইল ছিল। এই কনফিগারেশনের মিরাজ ২০০০ পুরো এয়ার সুপিউরিটি রোলে ছিল। চীনের পাশাপাশি পাকিস্তান ও ভাবত মিরাজ ২০০০ বোধহয় তাদের পুরোনো মিরাজ ৩, মিরাজ ৫ এর মতন গ্রাউন্ড অ্যাটাক বিমান, তবে লাদাখে ভারতীয় বায়ুসেনার এই লোডেড মিরাজ ২০০০ দেখে তাদের ও কপালে ভাজ পড়ে গেছে। এই মিরাজ ২০০০ পাকিস্তানের পুরোনো F-16 ব্লক ৫০ কেও হারাতে সক্ষম। মিরাজ ২০০০ তুরস্কের F-16 কেও লক করে দিয়েছিল। বর্ডার পেট্রোল এবং শত্রুর এলাকা তে ঢুকে বোম্বিং করার ক্ষেত্রে মিরাজের কোন তুলনা নেয়। মিরাজ ২০০০ এর টেরিটোরিয়ান ম্যাপিং ক্ষমতা অত্যন্ত বেশী যার জন্য টার্গেটে নিখুঁত বোম্বিং করতে পারে। তাছাড়া মিরাজ ২০০০ এর ফুয়েল খরচা F-16 এর তুলনায় কম। অর্থাৎ ৩৬০০০ ফুট উচ্চতায় ম্যাক ১.৪ গতিতে মিরাজ ২০০০ এর ফুয়েল লাগে ২৩০ কিলোগ্রাম /মিনিট, F-16 এর ২৬০ কিলোগ্রাম /মিনিট এবং F-18 এর ৩০০ কিলোগ্রাম/ মিনিট। মিরাজ ২০০০ এর গতিও পাকিস্তানের F-16 এর তুলনায় বেশী, এক্সট্রা ড্রপ ট্যাংক যুক্ত করলে এর অপারেশনাল রেঞ্জ অনেক বৃদ্ধি পায়। সেই কারনে তাইওয়ানের বায়ুসেনা মিরাজ ২০০০ কে তাদের F-16 এর তুলনায় বেশী ব্যবহার করে। লাদাখের মত জায়গায় মিরাজ ২০০০ রীতিমতো গেমচেঞ্জার। মিরাজ ২০০০ পাকিস্তানের Jf-17, F-16, চীনের j-10 ও রাশিয়ার মিগ -২৯ এর থেকেও অ্যাভান্সড। এই মহূর্তে ভারতীয় বায়ুসেনায় রাফায়েল এর পর দ্বিতীয় বেস্ট যুদ্ধবিমান এই মিরাজ ২০০০.
ফ্রান্স তাদের পুরোনো ২৪ টি মিরাজ ২০০০ কে মাত্র ১ মিলিয়ন ইউরো প্রতিটি বিমান হিসাবে বিক্রি করছে যাতে ১৩ টি মিরাজ-২০০০ এখনও ফ্লাইং কন্ডিশনে আছে এবং বাকী ১১ টি মিরাজের পার্টস ব্যবহার করা হবে। ২০৩০ থেকে তেজস মার্ক ২ যুদ্ধবিমান দ্বারা এই মিরাজ-২০০০ কে রিপ্লেস করা হবে।