পৃথিবীর কোন দেশ গুলির কাছে কোনোরকম যুদ্ধাস্ত্র নেই জানেন?
নিউজ ডেস্ক – কোন দেশ কতটা শক্তিশালী তা নির্ধারণ করা হয় সেই দেশের সেনাবাহিনীর উপর ভিত্তি করে। আসলে সেনাবাহিনী হচ্ছে কোন দেশের আইনের দ্বিতীয় স্তম্ভ। সুতরাং সেই পরিপ্রেক্ষিতে দেশ কতটা শক্তিশালী সেখানকার সেনাবাহিনী সহ অস্ত্রশস্ত্র প্রদর্শনের মাধ্যমে বোঝা যায়। এমন চিত্র বছরে একটি দিনই দেখতে পাওয়া যায় সেটি হল সেই সকল দেশের স্বাধীনতা দিবসের দিন। স্বাধীনতা উদযাপন করতে গিয়ে এক দেশ অন্য দেশকে তার শক্তির প্রকাশ করার পাশাপাশি তাদের কাছে কত ধরনের উন্নত মানের অস্ত্রশস্ত্র রয়েছে সেটিও প্রদর্শন করে। তবে গোটা পৃথিবীতে এমন কিছু দেশ রয়েছে যারা কোনো রকমের সেনাবাহিনীর ব্যবহার করে না। অর্থাৎ সেই সকল দেশ গুলির শান্তিপূর্ণভাবেই বসবাস করতে পছন্দ করে। এমনকি সেই দেশগুলির সংবিধানে লেখা রয়েছে যাতে কোন সেনাবাহিনী বা অস্ত্রশস্ত্র ব্যবহার করা না হয়। প্রতিবেশী দেশগুলির সাথে যাতে একটি সামঞ্জস্য বজায় রাখা যায় তার জন্য এই পদক্ষেপ নিয়েছে সেই সকল দেশের সরকার। খুব বেশি না কাছেপিঠে নজর দিলেই দেখা যাবে এই দেশগুলির দৃশ্য।
I) কোস্টারিকা – অহিংস মনোভাব পোষণ করা এই দেশটি রয়েছে মধ্য আমেরিকায়। এই দেশ কোনরকম ঝগড়া ঝামেলা ছাড়াই শান্তিপূর্ণভাবে কোনরকম সেনাবাহিনী ছাড়াই বসবাস করছে ১৯৪৯ সাল থেকে। এমনকি এখানকার সংবিধানের লেখা রয়েছে যাতে কোনরকম সামরিক সেনাবাহিনী ব্যবহার করা না হয়।
II) লিখস্টেনস্টাইন – শান্তিপ্রিয় মনভাবের তালিকায় দ্বিতীয় স্থানে রয়েছে ইউরোপের এই ছোট্ট দেশটি। এখানে প্রাথমিক দিক থেকে সেনাবাহিনী থাকলেও কিছু আর্থিক জটিলতার কারণে ১৮৬৮ সালে সামরিক সেনাবাহিনীকে বাতিল করে দেওয়া হয়। তবে সেই দেশের সরকার ঘোষণা করেছিলেন যদি কোন সময় প্রতিবেশী দেশের সঙ্গে যুদ্ধ করার প্রয়োজন পড়ে তখন পুনরায় সেনা বাহিনী গঠন করা হবে। বর্তমানে সেটির আর প্রয়োজন পড়েনি। তাই ১৮৬৮ সাল থেকেই সেনাবাহিনী ছাড়াই শান্তিপূর্ণভাবে বিরাজমান এই দেশটি।
III) সামোয়া – ১৯৬২ সালে স্বাধীন হয় প্রশান্ত মহাসাগরের সমোয়া শহরটি। এই বছরের স্বাধীনতা ঘোষণা করা হয়েছিল নিউজিল্যান্ড থেকে। তবে স্বাধীনতার সময় বহু রক্তপাত ঘটার পর এই দেশের প্রশাসন কোনো মতেই আর সেনাবাহিনী রাখার সমর্থন করেননি। যার কারণে বর্তমানে সেনাবাহিনী ছাড়াই দেশটি চলছে। তবে কোন যুদ্ধ কালীন পরিস্থিতি সৃষ্টি হলে সেনাবাহিনীর প্রয়োজন পড়লে নিউজিল্যান্ড দেশের প্রতিরক্ষাবাহিনী সামরিকভাবে সাহায্য দিতে প্রস্তুত।
IV) অ্যান্ডোরা – অ্যান্ডোরা দেশটি অবস্থিত ইউরোপে। অন্যান্য দেশের তুলনায় এই দেশের আয়তন বড় ক্ষুদ্র। প্রায় ৪৭৮ বর্গমিটার যা কিনা অন্যান্য বৃহত্তম দেশের তুলনায় অতি নগন্য। এই দেশটি স্বাধীনতার স্বাদ গ্রহণ করেছিল ১২৭৮ সালে। অন্যান্য দেশের মতো এটিও স্বাধীনতার পর থেকে আর কোন সামরিক সেনাবাহিনী রাখেনি দেশে। তবে যদি কোনরকম প্রয়োজনীয়তা পরে সেনাবাহিনীর তখন প্রতিবেশী দেশ স্পেন ও ফ্রান্স এই দেশটিকে সুরক্ষা দিতে প্রতিশ্রুতিবদ্ধ রয়েছে।
V) টূভালু – অ্যান্ডেরোর তুলনায় বহুগুণ ছোট প্রশান্ত মহাসাগরের টুভালু দেশ। এর আয়তন প্রায় ২৬ বর্গ কিলোমিটার। পাশাপাশি এখানে জনসংখ্যা রয়েছে মাত্র ১০ হাজার। এখানকার শাসন ব্যবস্থা সংসদীয় রাজতন্ত্রের ভিত্তিতে চলে। তাই এই ছোট্ট দেশে কোন শত্রু আক্রমণ করবেন না এমন মনোভাব পোষণ করে এদেশে কোনো রকম সেনাবাহিনী মোতায়েন করা হয়নি।
VI) ভ্যাটিকান সিটি – ইতালি ভূখণ্ডের অন্তর্গত ভ্যাটিকান সিটি খ্রিস্টানদের প্রধান ধর্মগুরু পোপেনের পবিত্র শহর। যার আয়তন হল সর্বনিম্ন ০.৪ বর্গ কিলোমিটার। যার কারণে এমন ছোট্ট দেশটিতে কোন শত্রু নেই তাই সেনাবাহিনী রাখার কোন প্রয়োজন পড়েনি।
VII) গ্ৰানাড – আটলান্টিক মহাদেশের ক্যারিবিয়ান অঞ্চলে অবস্থিত ছোট্ট দেশ গ্ৰানাডের আয়তন ৩৪৪ বর্গ কিলোমিটার। এখানে জনসংখ্যা রয়েছে প্রায় ১ লক্ষ ৫ হাজার। দেশটি মূলত কমনওয়েলথের সদস্য। দেশটির আয়তন ছোট হওয়া এবং জনসংখ্যা বিশাল না হয় বর্তমানে কোন সেনাবাহিনী নেই এই দেশে।
VIII) নাউরু – উপরিভুক্ত দেশ গুলির মতোই প্রশান্ত মহাসাগরের অন্তর্গত নাউরু দেশটির আয়তন প্রায় ২১ বর্গ কিলোমিটারের কিছু বেশি। তবে এর জনসংখ্যা মাত্র ১০ হাজার হওয়ায় সেখানকার সরকার কোনরকম সেনাবাহিনী নিয়োগ করেনি এই দেশে। যার কারণে বর্তমানে সেনাবাহিনীর বিহীন চলছে এই দেশটির শাসন ব্যবস্থা।