অ্যামেরিকা

এস ৪০০ নয়। দীর্ঘ ৬০ বছর ধরে সোভিয়েতের যে এয়ার ডিফেন্স সিস্টেম, ইসরায়েল, আমেরিকার মতো দেশের যুদ্ধবিমানকে ধ্বংস করেছে

নিউজ ডেস্কঃ সোভিয়েত আমলে তৈরি হওয়া বেশ কিছু যুদ্ধাস্ত্র আজও বহু দেশের ঘুম কেড়ে নিয়েছে। বিশেষ করে শুনলে অবাক হবেন যে রাশিয়ার মত দেশের বিরুদ্ধেই এই অস্ত্র মোতায়েন করে রাখা আছে। অর্থাৎ পূর্ব রাশিয়ার অস্ত্র রাশিয়ার বিরুদ্ধেই মোতায়েন। বিশেষ করে সোভিয়েত আমলে তৈরি হওয়া বেশ কিছু এয়ার ডিফেন্স সিস্টেম। ঠিক তেমনই এক যুদ্ধাস্ত্র হল এস ১২৫। 

ঠাণ্ডা যুদ্ধ চলাকালীন সোভিয়েত ইউনয়নের একটি অত্যাধুনিক এয়ার ডিফেন্স সিস্টেম ছিল এস ১২৫। ১৯৫০ র দিকে এটির ডিসাইন করা হলেও ১৯৬১ সালে সোভিয়েতের সার্ভিসে আসে। তখন থেকে এক পর্যন্ত অর্থাৎ দীর্ঘ ৬০ বছর ধরে বেশ কিছু দেশে এখনও সার্ভিস দিয়ে আসছে এই এয়ার ডিফেন্স সিস্টেমটি। 

বর্তমানে এই এয়ার ডিফেন্স সিসেমটির্সন হল এস ১২৫-২ পিচোরা। তবে এখন এই সিস্টেমটি প্রচুর পরিমানে ব্যবহার করছে ইউক্রেন, তাদের সামরিক অস্ত্র ভাণ্ডারে প্রচুর পরিমানে এই মিসাইল সিস্টেমটি রয়েছে। ১৯৯১ সালে সোভিয়েত ভেঙ্গে যাওয়ার পর এই সিস্টেমটি গুলিকে নিজেদের সেনাবাহিনীর হাতে রেখেছে ইউক্রেন। বিশেষ করে তারা রাশিয়ার আগ্রাসনের বিরুদ্ধে এই সিস্টেম মোতায়েন করে রেখেছে। 

বেশ কিছুদিন আগে এই সিস্টেমের রেঞ্জ বাড়ানো হয়েছে। পরবর্তীতে সময়ে এই ডিফেন্স সিস্টেমটিতে আধুনিক ইলেক্ট্রনিক্স ওয়ারফার এবং কাউন্টারমেজারস সিস্টেম ইনস্টল করা হয়েছে। সলিড ফুয়েল রকেট মোটর চালিত এই এয়ার ডিফেন্স সিস্টেমের ৫ভি২৪ (ভি-৬০০) মিসাইলের গতি ৩ থেকে ৩.৫ ম্যাক। এর ওয়ারহেডের ওজন ৬০ কেজি এবং এটি ৩৫ থেকে ৪০ কিলোমিটার দুরুত্ব পর্যন্ত আগত যে কোন যুদ্ধবিমান, বোম্বার, ড্রোন, মিসাইল ইন্টারসেপ্ট করে আকাশ পথেই ধ্বংস করে দিতে সক্ষম। 

তবে সবথেকে বড় ব্যাপার হল এই যে ৬০ বছর আগে সার্ভিসে আসলেও এই সিস্টেমটি এখনও পৃথিবীর বহু দেশে মোতায়েন করা আছে। সিরিয়ার আকাশে মোতায়েন করা এই সিস্টেমটি আমেরিকা এবং ইসরায়েলের বহু যুদ্ধবিমান থেকে শুরু করে মিসাইল এবং ড্রোন আক্রমণ আটকে দিতে সক্ষম হয়েছে। 

১৭ই মার্চ, ২০১৫ সালে সিরিয়ায় সামরিক বাহিনীর হাতে থাকা এস-১২৫ দিয়ে একটি মার্কিন প্রিডিয়েটর এমকিউ-১ ড্রোন ধ্বস করে দিতে সক্ষম হয়।

শুধু তাই নয় পাশাপাশি আরব-ইসরায়েলের যুদ্ধে এই এস-১২৫ এয়ার ডিফেন্স সিস্টেম কমপক্ষে ৯টি ইসরাইলী এফ-৪ই ফ্যান্টম যুদ্ধবিমান (১৯৭০ সালে ৬টি এবং ১৯৭৩ সালে ৩টি) এবং ৩৫টি মিসাইল আকাশেই ধ্বংস করে দিয়েছিল।যদিও এটি ভূলবশত মিশরের একটি যুদ্ধবিমানকে শুডডাউন করে দিয়েছিল। অন্যদিকে অর্থাৎ ১৯৮০ সালে দক্ষিণ আফ্রিকার সাথে এঙ্গোলার যুদ্ধ দক্ষিণ আফ্রিকার একটি মিরেজ এফ-১ যুদ্ধবিমান এস-১২৫ সিস্টেমের মিসাইল দিয়ে আকাশেই ধ্বংস করে দেয় এঙ্গোলা এয়ার ফোর্স।

শুনলে অবাক হবেন যে  ১৯৯৯ সালে সার্বিয়ার আকাশে আমেরিকার একটি এফ-১১৭ নাইটহক স্টেলথ যুদ্ধবিমান এবং একটি এফ-১৬ যুদ্ধবিমান এই পুরনো এস-১২৫ মিসাইল ডিফেন্স সিস্টেম দিয়ে সরাসরি শুডডাউন করে এক নজির গড়েছিল। শুধু তাই নয় ১৯৯১ সালে উপসাগরীয় যুদ্ধে বেশ কিছু মার্কিন এফ-১৬ যুদ্ধবিমান এই সিস্টেম ব্যবহার করে ধ্বংস করা হয়। জানলে অবাক হবেন যে এই এস-১২৫ ডিফেন্স সিস্টেমের কিলিং রেকর্ডের তালিকায় আমেরিকার বিমান বাহিনীর হেভী বি-৫২ সুপার বোম্বার যুদ্ধবিমান পর্যন্ত রয়েছে।৬০ বছর ধরে সোভিয়েতের কোন ক্লাসের এয়ার ডিফেন্স সিস্টেম, ইসরায়েল, আমেরিকার মতো দেশের যুদ্ধবিমানকে ধ্বংস করেছিল

Leave a Reply

Your email address will not be published.