পৃথিবী

মহাকাশে গ্রাউন্ড স্টেশন তৈরিতে কতোটা এগিয়ে গেছে ভারতবর্ষ?

নিজস্ব সংবাদদাতা:স্পেশ গবেষণায় ক্রমাগত উন্নতিসাধনের মাঝে স্পেস ডিপ্লোম্যাসির ক্ষেত্রেও আরও এক ধাপ এগিয়ে গেল ভারত। বরাবরই বন্ধু রাষ্ট্রগুলোর স্পেস গবেষণায় সাহায্যের হাত বাড়িয়ে দিয়েছে ভারত। এবারও হয়নি তার ব্যতিক্রম। ভারত শীঘ্রই স্যাটেলাইট গ্রাউন্ড স্টেশন তৈরি করতে চলেছে ভিয়েতনামে।

ইসরো বিশ্বের সবচেয়ে উন্নত স্পেস রিসার্চ সেন্টারগুলোর মধ্যে অন্যতম। তবে শুধু স্পেস রিসার্চই নয়, ভারত এবার তার সাথে স্যাটেলাইট গ্রাউন্ড স্টেশন তৈরিতেও মনোনিবেশ করেছে। আসলে,ভবিষ্যতে স্পেশ হতে চলেছে এক গুরুত্বপূর্ণ জায়গা। আর তাই এখন থেকেই বিভিন্ন দেশের মধ্যে শুরু হয়েছে প্রতিযোগিতা। যেমন স্যাটেলাইট গ্রাউন্ড স্টেশন তৈরি নিয়ে চীন ও ভারতের মধ্যেই চলছে এক টান টান উত্তেজনা। চীন এর মধ্যেই ভারতকে পেছনে ফেলে পাকিস্তান, আর্জেন্টিনা এমনকি ইউরোপীয়ান দেশ বেলজিয়ামেও নিজস্ব গ্রাউন্ড স্টেশন তৈরি করে ফেলেছে। এবার বাকি সেন্ট্রাল এশিয়ান দেশগুলির ওপর তীক্ষ্ণ নজর চীনের।

তবে খুব একটা পিছিয়ে নেই ভারতও। বছর খানেক আগেই ভারত লঞ্চ করেছে GSAT-9,যাকে বলা হয় সাউথ এশিয়ান স্যাটেলাইট। পাকিস্তান ছাড়া বাকি সার্কভুক্ত দেশগুলো যেমন বাংলাদেশ, নেপাল, ভুটান, মালদ্বীপ, আফগানিস্তান ফ্রিতেই ব্যবহার করে এটি। এখন ভারতের লক্ষ্য নিজের কূটনৈতিক প্রভাব বাড়াতে প্রত্যেকটি সার্কভুক্ত দেশগুলোতে স্যাটেলাইট গ্রাউন্ড স্টেশন তৈরি করা। এর জন্য কাজও শুরু হয়ে গেছে পুরো দমে। ইতিমধ্যেই প্রতিবেশী দেশ ভূটানে গ্রাউন্ড স্টেশন তৈরি করে ফেলেছে ইসরো। জানা যাচ্ছে, শীঘ্রই মালদ্বীপ, শ্রীলঙ্কা ও নেপালেও স্যাটেলাইট গ্রাউন্ড স্টেশন তৈরির কাজ শুরু হয়ে যাবে। 

সার্ক অন্তর্ভুক্ত দেশগুলিতে স্যাটেলাইট গ্রাউন্ড স্টেশন তৈরির কাজ শেষ হলে পরবর্তীতে ভারতের লক্ষ্য হবে সাউথ ইস্ট এশিয়ার দেশগুলি। মালয়েশিয়া, ইন্দোনেশিয়া, ব্রুনেই, থাইল্যান্ড, কম্বোডিয়া, লাওস, মায়ানমার, সিঙ্গাপুর, ভিয়েতনাম ও ফিলিপিন্স একত্রে আসিয়ান দেশ নামে পরিচিত এই দশটি দেশকে পরবর্তী টার্গেট হিসাবে বেছেছে ইসরো। আসলে, ওই দেশগুলিতে প্রভাব বিস্তার করতে পারলে ভবিষ্যতে চীনের বিরুদ্ধে অনেকরই সুবিধা পাবে ভারত। ভিয়েতনামের মেগা গ্রাউন্ড স্টেশন প্রজেক্ট ভবিষ্যতের এই পরিকল্পনারই অংশ। এই প্রজেক্ট অনুযায়ী শীঘ্রই ভারত ভিয়েতনামের গ্রাউন্ড স্টেশনের মারফত আশিয়ান দেশগুলিতে OCEANSAT-2 এবং RESOURCESAT-2 নামক দুটি স্যাটেলাইট ব্যবহারের অ্যাক্সেস দিতে চলেছে। ভারতের কাছে এই গ্রাউন্ড স্টেশনগুলি গুরুত্ব রয়েছে আরো একটি কারণ। ভবিষ্যতে ইসরো গগনযানের মতন মিশন লঞ্চ করলে গ্রাউন্ড স্টশনে বসেই ট্রাক করা যাবে গোটা ব্যাপারটা। 

আগামী দিনে এটিই স্পেশ ডিপ্লোম্যাসির ক্ষেত্রে ভারতের জন্য হতে চলেছে সবচেয়ে বড় অ্যাডভান্টেজ। খবর অনুযায়ী সার্ক, আসিয়ান দেশগুলোর সঙ্গে ব্রাজিলেও গ্রাউন্ড স্টেশন তৈরি করবে ইসরো তার ওপর আবার চীনের দাদাগিরি সম্পূর্ণভাবে রুখতে বর্তমানে কোয়াড দেশগুলোর মধ্যে আলেচনা চলছে পুরো ইন্দোপ্যাসিফিক এলাকা জুড়ে গ্রাউন্ড স্টেশন তৈরির। সমস্ত কাজ পরিকল্পনা মাফিক চললে এই পরিস্থিতিতে ভারতের জন্য  এই স্পেস প্রজেক্ট কতটা ফলদায়ক হতে পারে আশা করি আন্দাজ করতে পারছেন।

Leave a Reply

Your email address will not be published.