পঞ্চম প্রজন্মের মিসাইল কি জন্য সার্ভিসে নিয়ে আসছে ভারতবর্ষ?
নিউজ ডেস্কঃ ভারতবর্ষের সেনাবাহিনীর হাতে ব্রহ্মস আসার পর যে শত্রুপক্ষের ঘুম উড়ে গেছে তা কমবেশি সকলেরই জানা। তবে ব্রহ্মসের কারনে অনেক মিসাইল বিরাট প্রডাকশান করা হয়না বা আর দরকার ও পরেনা। তবে সম্প্রতি ইসরায়েলের সি ব্রেকার হাতে আসার পর এই মিসাইল নতুন কিছু কাজে লাগাতে চাইছেন সামরিক বিশেষজ্ঞরা। ইসরায়েলের এই মিসাইলটি ভারতবর্ষের মাটিতেই তৈরি করা হতে চলেছে এবার থেকে। আর সেই কারনে এর ক্ষমতা আরও বৃদ্ধি করা হবে বলে সুত্রের খবর। তবে সবার আগে একটাই প্রশ্ন স্পাইস ১০০০ এর মিসাইল কি কাজে ব্যবহার করা হতে চলেছে? কি কি অসুবিধা বা সুবিধা রয়েছে ইসরায়েলের এই মিসাইল প্রডাকশান করার ক্ষেত্রে?
অসুবিধা
সমুদ্র সমতল হওয়ার কারনে নৌবাহিনীর কাছে ব্রহ্মস অনেক বেশি কার্যকর, পাশাপাশি ব্রহ্মসের রেঞ্জ বেড়ে এখন ৪১০ কিমি হয়েছে। আসলে সমুদ্র সমতল হওয়ার কারনে টেরেইন মাস্কিং এর কোন ব্যাপার নেই। ফলে লো অল্টিটিউডে ব্রহ্মস অনেক বেশি বিধ্বংসী সি ব্রেকারের তুলনায়।
সি ব্রেকারের একটি ভার্সন ট্রাক থেকে লঞ্চ করা যায়। কিন্তু সেখানেও ব্রহ্মস থাকার ফলে সি ব্রেকারের জন্য অতিরিক্ত বিনিয়োগ করে কোন লাভ হবেনা।
কোথায় ব্যবহার করা যেতে পারে এই মিসাইল?
তেজাস এবং মিরাজের মতো যুদ্ধবিমান থেকে এই মিসাইল ব্যবহার করা যেতে পারে। অর্থাৎ বায়ুসেনার কাজে বিশেষভাবে ব্যবহার করা যেতে পারে এই বিশেষ মিসাইলটি।
মন খুজছিল এমন একটা জায়গা যেখানে এই মিসাইল ফিট করা যায়। আর উত্তরটা পেলাম এয়ার লঞ্চড ভার্সান। আর ক্যরিয়ার হিসাবে তেজস আর মিরাজ।
সি ব্রেকারের ওয়ারহেড ৫০০ কেজির কারন এতে প্রপাল্সান সিস্টেম এবং জ্বালানি রয়েছে সেই কারনে। কিন্তু সেক্ষেত্রে যদি ২৫০ কেজি বিস্ফোরক থাকে সেক্ষেত্রে এটাও যথেষ্ট। ব্রহ্মসের ওয়ারহেড ২০০ কেজি হওয়াতেই সকলের কাছে ত্রাস। অর্থাৎ বুঝতেই পারছেন।
ভারতবর্ষের হাতে ভবিষ্যতে ১২৩ টি মতো তেজাসের মতো যুদ্ধবিমান থাকতে চলেছে পাশাপাশি মিরাজের মতো যুদ্ধবিমানও রয়েছে যেখানে শুধু এই বিমান গুলিকে এয়ার ডিফেন্সের কাজের পাশাপাশি ফায়ার পাওয়ারের কাজেও ব্যবহার করা হবে, সেক্ষেত্রে সি ব্রেকারের মতো মিসাইল ব্যবহার করা যেতে পারে।
সি ব্রেকারের মতো পঞ্চম প্রজন্মের মিসাইল আর কি কি কারনে সার্ভিসে আনা যেতে পারে?
প্রথমত পঞ্চম প্রজন্মের এই ক্রুজ মিসাইলের রেঞ্জ ৩০০ কিমি। পাশাপাশি এই মিসাইলে টার্গেটের ছবি লোড করে দিলে তা ম্যাচিং করে নিজেই গিয়ে হিট করে আসবে। এতে একসাথে ৫০০ এর বেশি টার্গেটের তথ্য লোড করা যেতে পারে। আসলে এটিতে টার্গেটের ছবি আপলোড করার পর GPS Coordinates করে দিয়ে লঞ্চ করে দিতে হবে। Coordinates এ গিয়ে এর ইলেকট্রো অপটিক্যাল সিকার(টার্গেটকে খোঁজার জন্য) অন হয়। এই সিকারে সেই অঞ্চলের যে ছবি ভেসে ওঠে টার্গেটের ছবি যা আগে থেকে লোড করা ছিল তার সাথে কম্পিউটার Scene Matching শুরু করে। এরপর টার্গেট পেলেই তাতে হিট করে দেয়।
ভারতবর্ষের অধিকাংশ অঞ্চলে পাহার পর্বত থাকার কারনে রেডারের ক্ষমতা কমে যায়। আর সেই কারনে সেখানে সাবসনিক ক্রুজ মিসাইল গুলি খাঁদ বরাবর উড্ডয়ন করে। আসলে এখানে পাহাড় দেওয়ালের মতো কাজ করে, যেখানে রেডিও ওয়েভ ঠিকমতো পৌছাতে পারেনা। এই ধরনের উড্ডয়নকে টেরেইন মাস্কিং বলা হয়ে থাকে। অর্থাৎ মিসাইল নিজেকে বাঁচাতে পাহাড়কে মাস্ক হিসাবে ব্যবহার করে।
সি ব্রেকার জিপিএস ছাড়াই অপারেশানে যেতে সক্ষম, যা বিরাটভাবে প্রাধান্য পায়। আসলে এর সুবিধা হল এই যে এই ধরনের মিসাইলের গাইডেন্স থাকেনা অর্থাৎ জিপি এস জ্যাম হয়ে গেলে অপারেশান চালাতে আর সক্ষম হয়না। তবে সেক্ষেত্রে সি ব্রেকার অপেরেশান চালাতে সক্ষম হয়। সি ব্রেকার কি ধরনের গাইডেন্স ব্যবহার করে তা জানালেও এতে Initial Navigation System (INS) তো রয়েছেই সাথে প্রি ডেজিগনেটেড টার্গেট ইনফরমেশানের(আগে থেকে টার্গেটের তথ্য দিয়ে থাকে) মাধ্যমে এটা কাজ করতে পারে বলে মনে করে সামরিক বিশেষজ্ঞদের একাংশ।
তেজাস বা মিরাজের মতো যুদ্ধবিমানে ব্যবহার করলে তা তিব্বতের মতো বিরাট বড় অংশে রেডার সাইট, বাঙ্কার, হ্যঙ্গার ভারতের ক্রুজ মিসাইলের টার্গেটে আসবে। পাশাপাশি ভারতবর্ষের ফায়ার পাওয়ার বৃদ্ধি পাবে।
অর্থাৎ ইসরায়েলের এই মিসাইল চীনের ঘুম ওড়াতে পারে যেকোনো মুহূর্তে।